Sunday, 30 June 2013

সফলতার অর্জনের জন্য ১০০ নেটওয়ার্ক মার্কেটিং টিপস্


১০০ নেটওয়ার্ক মার্কেটিং টিপ্স

টিপ্স একঃ
আপনি যখনই নিশ্চিত হলেন, আপনি নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসা আরম্ভে আগ্রহী তাহলে প্রথমে নেটওর্য়াক মার্কেটিং ব্যবসা সম্পর্কে নূন্যতম জ্ঞানার্জন করুন। এজন্য অভিজ্ঞদের সহায়তা নিন, বই পুস্তক পড়ুন এবং কোম্পানী কর্তৃক আয়োজিত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করুন।
টিপ্স দুইঃ
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং যেহেতু মার্কেটিং বা বিপণনের সাথে সংশ্লিষ্ট সেহেতু আপনাকে প্রথমে হতে হবে একজন আদর্শ বিক্রয়কর্মী। কারণ একজন সফল বিক্রয়কর্মীই একজন সফল নেটওয়ার্কার।
টিপ্স তিনঃ
প্রথমে লক্ষ্য স্থির করুন এরপর পরিকল্পনা গ্রহন করুন এবং পরিকল্পনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহন করে তা বাস্তবায়ন করুন।
টিপস চারঃ
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসায় সফল হতে চাই অধ্যবসায়, অনুশীলন বুদ্ধিমত্তা, নিয়ম-নিষ্ঠা ও পরিশ্রম । রুটিন মাফিক ও সঠিক সময়ানুযায়ী কার্য সম্পাদন করুন।
টিপ্স পাঁচঃ
আজ রাতে বসে আগামী দিনের কর্ম-পরিকল্পনা প্রস্তুত করে ফেলুন, কাজগুলো সময়মত ও সঠিকভাবে সম্পাদনের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিন।
টিপ্স ছয়ঃ
আপলাইন কিংবা ডাউন লাইন এমন কি অন্য গ্রুপের সদস্যদের সাথেও বিনয়ী আচরণ করুন, কারণ বিনয় মানুষকে মহৎ করে।
টিপ্স সাতঃ
প্রত্যেকের সাথে কুশল বিনিময় করুন এবং পরিবারের খোঁজ খবর নিন। অনুরূপ অন্যরাও আপনার সুখ-দুঃখের সাথী হবে। এভাবে পারস্পরিক সর্ম্পকের ভিত্তিতে বৃহৎ ব্যবসা গড়ে উঠবে।
টিপ্স আটঃ
শতভাগ সঠিক কোন নেটওর্য়াক মার্কেটিং প্রতিষ্টানে কাজ করতে গিয়ে নিজেকে নিয়ে গর্ব বোধ করুন এবং সহজভাবে প্রতিষ্টান সর্ম্পকে অন্যদের তথ্য সরবরাহ করুন।
টিপ্স নয়ঃ
কাউকে সাহায্য করছেন এমন মনোভাব দেখাবেন না বরং প্রমান করুন এটি একটি সম্মিলিত প্রয়াস ।
টিপ্স দশঃ
সর্বদা হাসি-খুশী প্রানবন্ত আচরন প্রদর্শন করুন । প্রানবন্ত পরিবেশ অন্যদের মাঝে ইতিবাচক মনোভাব তৈরী করে।
টিপ্স এগারঃ
আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে সবকিছু শুরু করুন। আপনার আত্মবিশ্বাস যত দৃঢ় হবে আপনি নেটওর্য়াক ব্যবসায় তত সফল হবেন।
টিপ্স বারঃ
স্বেচ্ছায় শেখার মানসিকতা আপনার থাকতে হবে। বিভিন্নভাবে ও বিভিন্ন উৎস হতে আপনি যত বেশি শিখবেন তত বেশি এগোতে সক্ষম হবেন।
টিপ্স তেরঃ
নেটওর্য়াক মার্কেটিং ব্যবসাকে ঝুঁকিমুক্ত বলা হয় কারণ এতে তেমন কোন বিনিয়োগ নেই এবং খরচও বেশি। কিন্তু শ্রম ও সময়ের যে বিনিয়োগ তা যাতে ব্যর্থ না হয় সেদিকে নজর রাখুন।
টিপ্স চৌদ্দঃ
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং একটি নতুন মার্কেটিং সিস্টেম এবং অবিশ্বাস্য আয়ের পথ, এজন্য প্রাথমিক অবস্থায় নতুন ক্রেতা (প্রসফেক্ট) এ পদ্ধতি গ্রহণ নাও করতে পারে। এ সময় আপনাকে অধ্যবসায়ী হতে হবে। প্রতিটি ব্যর্থতাকে এক একটি অভিজ্ঞতা হিসেবে মেনে নিন।
টিপ্স পনেরঃ
সময়োচিত ও যথাযথ ফলো-আপের মাধ্যমে দক্ষ ডিস্ট্রিবিউটর গড়ে তোলা সম্ভব। নেটওয়ার্ক ব্যবসায় হাজারও ডিস্ট্রিবিউটর প্রয়োজন হয় না বরং কিছু সংখ্যক দক্ষ ডিস্ট্রিবিউটর বড় দল গঠনের জন্য যথেষ্ঠ।
টিপ্স ষোলঃ
প্রাথমিক পর্যায়ে কমিশন নতুনদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়, এজন্য নতুনরা যাতে স্বল্প সময়ে কমিশন লাভে সক্ষম হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।
 টিপ্স সতেরঃ
আপনার ডাউনলাইন ডিস্ট্রিবিউটরদের সাথে আপনার গাঠনিক দুরত্ব যাই হোক না কেন তার সহিত সুম্পর্ক গড়ে তুলুন এবং সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিন।
টিপ্স আঠারঃ
ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তিকে ভিন্ন ভিন্নভাবে ফলোআপ করুন। কারণ প্রত্যেকের মনোভাব ভিন্ন। এক্ষেত্রে নিজেকে ধৈর্য্যশীল ও অনুপম ব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে হবে।
টিপ্স উনিশঃ
এমন দু’ধরনের লোককে একত্রে সেমিনারে বসাবেন না। যাদের একজন অস্থির প্রকৃতির অন্যজন স্থির। ফলে একজনের কারণে দু’জনের সম্ভাবনা নষ্ট হবে।
টিপ্স বিশঃ
দীর্ঘসময় সেমিনার দেখানোর পর ক্লোজিং এ বসিয়ে পূণরায় ব্রেইন ওয়াশের প্রয়োজন নেই যদি না অতিথির আগ্রহ দেখা যায়।
টিপ্স একুশঃ
ক্লোজিং এর সময় অধিক আন্তরিক হোন, অতিথির আগ্রহের প্রতি লক্ষ্য রাখূন, নিজের দূর্বলতা প্রকাশ করবেন না, সর্বোপরি কোন নেতিবাচক আলোচনা তুলে আনবেন না।
টিপ্স বাইশঃ
আপনার ডাউনলাইন ডিস্ট্রিবিউটরদের কখনো প্ররোচিত করবেন না মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে, বরং পরিশ্রম করে নেটওয়ার্র্ক ব্যবসার মাধ্যমে সাফল্যের স্বর্ণ শিখরে পৌছাঁনোর সুনির্দিষ্ট উদাহারণ দিন।
টিপ্স তেইশঃ
পরিবারের সদস্য, প্রতিবেশী ও বন্ধু বান্ধবদের সাথে নিয়ে নেটওর্য়াক মার্কেটিং ব্যবসার ভিত্তি রচনা করুন। এ ব্যবসায় প্রিয়জনদের সান্নিধ্য আপনাকে অনুপ্রেরণা যোগাবে।
টিপ্স চব্বিশঃ
বিনিময় নিশ্চিত করুন যেমন- অর্থের বিনিময়ে পণ্য ও সেবা, শ্রমের বিনিময়ে পারিশ্রমিক এবং সুপরিকল্পনা ও সময়ের বিনিময়ে সাফল্য।
টিপ্স পঁচিশঃ
ঘর হতে বের হওয়ার পূর্বেই পরিকল্পনা তৈরী করে ফেলুন। রাস্তায় বের হয়ে পরিকল্পনা গ্রহন করা থেকে বিরত থাকুন।
টিপ্স ছাব্বিশঃ
প্রথমে নিশ্চিত হউন, কোন রকম বেঁচে থাকতে চান না সম্পদ গড়তে চান। যদি প্রথমটি হয় তবে চাকুরীতে অধিক মনোযোগ দিন আর যদি দ্বিতীয়টি চান তবে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসায় লেগে পড়ুন।
টিপ্স সাতাশঃ
আপনার ডাউনলাইন ডিস্ট্রিবিউটর আপনার জন্য সম্পদ স্বরুপ এদের মাঝ থেকে যতবেশি সম্ভব আপনার ডুপ্লিকেট তৈরী করুন।
টিপ্স আটাশ
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ কি করা উচিত ও কি অনুচিত জানা প্রয়োজন। কারণ যা উচিত তা আপনাকে একশ ভাগ এগিয়ে দিবে এবং যা অনুচিত তা আপনাকে  দুইশ ভাগ পিছিয়ে দেবে।
টিপ্স উত্রিশঃ
শৈশব হতে অদ্যবধি আমরা মানুষের সহযোগিতা গ্রহন করি এবং নিজেরাও অন্যদের সহযোগিতা করে থাকি। নেটওর্য়াক মার্কেটিং ব্যবসায় পারস্পরিক নির্ভরশীলতার উপর গুরুত্ব দিন।
টিপ্স ত্রিশঃ
অন্যের প্রাপ্য মর্যাদা দিন, অন্যের যোগ্যতার সঠিক মূল্যায়ন করুন।
টিপ্স একত্রিশঃ
অন্যদের বক্তব্য ধৈর্য্য সহকারে শুনুন। অন্যদের বলার সুযোগ প্রদান করলে আপনার উপর আস্থা বেড়ে যাবে।
টিপ্স বত্রিশ
কোম্পানীর কমিশন প্ল্যান ভালভাবে জানা ও এর প্রতি পূর্ণ আস্থা না থাকলে অন্যদেরকে এ ব্যবসায় আকৃষ্ট করাতে ব্যর্থ হবেন। এজন্য কোম্পানীর কমিশন প্ল্যান, বন্টন প্রনালী ও প্রমোশন পদ্ধতির বিষয়ে ভালো ধারণা থাকা আবশ্যক।
টিপ্স তেত্রিশঃ
নিজে যতবেশি জানবেন ও ব্যক্তিত্বের অধিকারী হবেন ততবেশি অন্যদের প্রভাবিত করতে পারবেন।
টিপ্স চৌত্রিশঃ
সফলতার জন্য আপনাকে প্রাথমিক অবস্থায় পূর্ণ সময় কাজ করতে হবে। সাফল্য লাভের পর নিজেই নির্ধারণ করে নিন কখন ও কিভাবে সময় প্রদান করবেন।
টিপ্স পঁয়ত্রিশঃ
নেটওয়ার্ক ব্যবসায় নিজেকে প্রকাশ করার যথেষ্ঠ সুযোগ থাকে, প্রশিক্ষণ ও মোটিভেশনের মাধ্যমে চারিত্রিক উৎকর্ষক সাধন ও দক্ষ নেতৃত্ব প্রদান করে নিজেকে অনেকের মধ্যে অন্যতম করে তুলুন।
টিপ্স ছত্রিশঃ
নতুন ও একক বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন পণ্যের জন্য প্রশিক্ষন গ্রহন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পণ্যের গুনাগুন, পন্যের বৈশিষ্ট্য ও বিশেষত্ব সম্পর্কে ধারণা লাভের জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহন করুন।
টিপ্স সাইত্রিশঃ
উন্নত ব্যক্তিত্ব শুধু নেতৃত্ব প্রদানে ভূমিকা রাখে না বরং সাফল্যের শীর্ষ বিন্দুতে পৌছাঁতেও সাহায্য করে। অনুপম ব্যক্তিত্ব অর্জনের জন্য প্রশিক্ষণ নিন।
টিপ্স আটত্রিশঃ
নেটওর্য়াক মার্কেটিং ব্যবসায় আপনার পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রশিক্ষণগুলো বেছে নিন। কোন প্রশিক্ষণই বৃথা যায় না।
টিপ্স উনচল্লিশঃ
প্রশিক্ষণ গ্রহণের পূর্বে ও পরে কাজের তফাৎ পরখ করে দেখুন। কাজের মূল্যায়ন করার মাধ্যমে প্রশিক্ষনের তাৎপর্য অনুধাবন করা সম্ভব।
টিপ্স চল্লিশঃ
সবসময় কাজে সম্পৃক্ত থাকুন। আপনার কাজের প্রতি আগ্রহ ও উদ্দীপনা দেখে অনেকেই উৎসাহী হবে।
টিপ্স একচল্লিশঃ
সময়ের অভাব বা চাহিদা সৃষ্টি করুন। অর্থাৎ প্রথমে একটি ভাল কাজ খুঁজে বের করুন। কাজটিকে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ মনে করুন যেন যে কোন উপায়ে তা সম্পন্ন করতে হবে, দেখবেন সময় ঠিকই আপনি বের করে নিয়েছেন।
টিপ্স বিয়াল্লিশঃ
পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য নির্দিষ্ট পরিমান বাজেট নির্ধারন ও নতুনদের মাঠ পর্যায়ে কাজ করানোর জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করুন।
টিপ্স তেঁতাল্লিশঃ
টেলিফোনে আলোচনার পূর্বে বা আমন্ত্রনের পূর্বে একটি স্ত্রিপট তৈরী করে হাতে রাখুন। লক্ষ্য রাখুন যাতে কোন তথ্য ভুল দেয়া না হয়। সম্ভাব্য প্রশ্নোত্তর m¤^wjZ স্ক্রিপট তৈরী করুন।
টিপ্স চুয়াল্লিশঃ
নিজেকে ভালো শ্রোতা হিসেবে তৈরী করে নিন। গ্রহীতা বা সম্ভাবনাময় ক্রেতাকে বলার সুযোগ নিন। ফোনালাপে গ্রহীতা আপনার উপর যত আগ্রহী হবে আপনার সম্ভাবনা তত উজ্বল হবে। মনে রাখবেন যে, শ্রোতা যত বেশি সময় নিবে তার কার্যক্রম তত ইতিবাচক হবে।
টিপ্স পঁয়তাল্লিশঃ
বিক্রয়কর্মীদের ন্যয় কথার্বাতা থেকে বিরত থাকুন এবং কন্ঠস্বর স্বাভাবিক রাখুন। গ্রহীতা (অতিথি) কে সুযোগ প্রদান করছেন এমন ধারনার চেয়ে তাকে সম্ভাবনাময় ব্যবসার পরামর্শ দিচ্ছেন এমন আচরন করুন।
টিপ্স ছেচল্লিশ
কোন একজন ক্রেতার আচরনে বিষন্ন হয়ে ব্যবসার প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষন করবেন না। আপনার সফলতার জন্য দু’চারজন উদ্যোমী ক্রেতাই যথেষ্ঠ। আপনার ডাউনলাইনার একজন হলেও তার সঠিক যত্ন  নিন। এখান থেকেই আপনার সাফল্যের পথ সৃষ্টি হবে।
টিপ্স সাতচল্লিশঃ
যে যেই বিষয়ে পারদর্শী সে সেই বিষয়ে সফলতা অর্জন করে, বিষয় ভিত্তিক পারদর্শীতার জন্য প্রয়োজন নিয়মিত অধ্যায়ন ও অনুশীলন।
টিপ্স আটচল্লিশঃ
প্রতিটি আবিষ্কারের পেছনে আত্মবিশ্বাস অন্যতম প্রেরনা হিসেবে কাজ করে, নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসায় যতটা বিশ্বাসী হবেন ততই সফল হবেন।
টিপস উনপঞ্চাশঃ
নিজের অভাবটুকু অনুধাবন করুন। যে নিজের অভাব অনুধাবন করতে পারে সে তা পূরন করতে সমর্থ হয় এবং যে অভাব পূরনে সমর্থ হয় সে সাফল্যের পথ খুঁজে পায়।
টিপ্স পঞ্চাশঃ
যে কাজ অসঠিক মনে হয় তা থেকে বিরত থাকুন। সঠিক কাজ আন্তরিকতার সাথে করুন নিশ্চিত সফল হবেন।
টিপ্স একান্নঃ
মনে রাখবেন, বেশী সহযোগিতা অনেক সময় শিশুর মুখে তুলে খাইয়ে দেয়ার মতো হয়। ডাউনলাইনকে সার্বিক সহযোগিতা করুন। কিন্তু গুরুত্ব সহকারে তাদের নিজস্ব ব্যবসা গড়ে তুলতে সহযোগিতা করুন।
টিপ্স বায়ান্নঃ
প্রাথমিক র্পযায়ে আয়ের সর্ম্পুনটাই নিজের  প্রয়োজনে ও ডাউনলাইন গঠনে ব্যয় করুন । প্রবৃদ্ধি স্তরে আপনার যে আয় অর্জিত হবে তা থেকে সঞ্চয় করুন এবং রয়্যালটি স্তরে সম্পদ গড়ুন।
টিপস তিপান্ন
কাউকে অবাস্তব বা অলীক স্বপ্ন দেখাবেন না। যা সম্ভব তা যত কঠিন হোক না কেন অধিকাংশ মানুষ তা গ্রহন করে।
টিপ্স চুয়ান্ন
অন্যদের ভুলগুলো কৌশলে ধরিয়ে দিন। অনেকের সম্মুখে লজ্জিত না করে ইশারায় তা শুধরানোর সুযোগ দিন।
টিপ্স পঞ্চান্ন
এমন প্রতিশ্রুতি দিন যা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবেন, মিথ্যে প্রতিশ্রুতি কখনও দিবেন না।
টিপ্স ছাপ্পান্ন
নিজের ডাউনলাইনে যতবেশী ডুপ্লিকেট তৈরী করতে সক্ষম হবেন তত বেশী অর্থোপার্জনে সক্ষম হবেন।
টিপ্স সাতান্ন
অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রয় করবেন না। কমিশন লাভের আশায় যারা অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রয় করে অথবা অপ্রদর্শিত পণ্য বিক্রয় করে তারা মূলত পিরামিড স্কীমের মাধ্যমে ব্যবসা করে।
টিপ্স আটান্ন
নেটওয়ার্ক ব্যবসায় নিয়মিত ও পরিকল্পিত কাজের মাধ্যমে পণ্য ও সেবা সমপ্রসারনের মাধ্যমে আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। কিন্তু দ্রুত ধনী হওয়া যায় না।
টিপ্স ঊনষাট
আপনি কি নিশ্চিত আপনার প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকার মত সামর্থ রয়েছে। যদি তাই হয় তবে আত্মবিশ্বাসের সাথে প্রত্যেকের সাথে ব্যবসা বিষয়ক আলোচনা করুন। গর্ববোধ করুন আপনার প্রতিষ্ঠান নিয়ে।
টিপ্স ষাট
মূল্যবান সময়কে কে কতটা কাজে লাগাতে পারে তা নির্ভর করে তার মনোভাবের উপর। ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলুন অন্যদের চেয়ে সাফল্যের পথে একধাপ এগিয়ে থাকুন।
টিপ্স একষট্টি
আপনার চারপাশের নেতিবাচক বিষয়গুলো আপনার মনোভাবে যাতে প্রভাব ফেলতে না পারে এজন্য সেগুলোকে ক্ষনস্থায়ী মনে করুন এবং এগিয়ে চলুন।
টিপ্স বাষট্টি
কারো প্রচেষ্টাকে খাটো করে না দেখা বরং সহযোগিতামূলক আচরণ প্রদর্শন করুন এবং প্রত্যেকের কাজের স্বীকৃতি প্রদান করুন।
টিপ্স তিষট্টি
আপনার প্রতিষ্ঠানের কমিশনপ্ল্যানটি যদি বাইনারী বা মেট্টিক্স হয় তবে সেল্স ও স্পন্সরিং দুটোতেই জোর দিন। যদি ইউনিলেভেল বা হাইব্রিড হয় তবে সেল্সের প্রতি কিছু বেশী গুরুত্ব দিন।
টিপ্স চৌষট্টি
নেটওর্য়াক ব্যবসায় যত সময় ব্যয় করবেন তত সফল হবেন। পর্যবেক্ষণ করে নয় বরং কাজে লিপ্ত থেকে এ ব্যবসা শিখতে হবে।
টিপ্স পঁয়ষট্টি
প্রশিক্ষণ গ্রহন করুন সঠিক পথের জন্য। বই পড়ুন জ্ঞানের জন্য এবং টীম গঠন করুন রেসিডিউয়্যাল আয়ের জন্য।
টিপ্স ছেষট্টিঃ
যদি আপনার লোকজন ব্যবসা সৃষ্টির জন্য সচেষ্ঠ না হন তাহলে তাদের নিয়ে আপনার সময় নষ্ট করা উচিত নয়। তদ্পরিবর্তে যারা ব্যবসা সৃষ্টিতে আগ্রহী তাদেরকে সময় দিন এবং ভবিষ্যতে অন্যদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখুন।
টিপ্স সাতষট্টি
আপ-লাইন লিডার ও ডাউনলাইন ডিস্ট্রিবিউটরদের নিয়ে গঠিত দলে প্রত্যেকের বিশ্বাস আবশ্যক এবং প্রত্যেকে মিলে লক্ষ্যস্থির করতে হবে যেখানে কারো জন্য অপেক্ষা করা অনুচিত।
টিপ্স আটষট্টি
দলে অর্ন্তগত একে অন্যের কাজে সহযোগিতা ও পরামর্শ গ্রহন ও প্রদান করুন। প্রত্যেকে দলীয় শৃঙ্খলা ও নীতিমালা মেনে চলুন।
টিপ্স ঊনসত্তরঃ
জ্ঞাত কর্মফল আপনাকে সফলতা এনে দেবে না। আপনাকে প্রতিশ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজে নামতে হবে।
টিপ্স সত্তর
একজন সফল ব্যক্তি ঐ ব্যক্তি যিনি নিজের ভুল হতে শিক্ষা গ্রহন করেন। কিন্তু একজন অতি সফল ব্যক্তি ঐ ব্যক্তি, যিনি অন্যের ভুল হতে শিক্ষা গ্রহন করেন।
টিপ্স একাত্তর
প্রত্যেকে নিজ নিজ আপ-লাইন ও ডাউন-লাইনের সহিত যোগাযোগ রাখুন। দলীয় সংহতি বজায় রাখার জন্য, দলীয় লক্ষ্য অর্জনের জন্য এবং ব্যক্তিগত সাফল্য অর্জনের জন্য যোগাযোগ অপরিহার্য।
টিপ্স বাহাত্তরঃ
অনেক লোক নেটওর্য়াক মার্কেটিং ব্যবসার উন্নয়নে ব্যর্থ হন। এটা হয়ে থাকে চেষ্টার অভাবে নয় বরং চেষ্টাকে কোন খাতে নিয়োজিত করবেন তার কারনে।
টিপ্স তিয়াত্তর
আপনি কিংবা আপনার ডাউন-লাইন কর্তৃক আহ্বানকৃত সভার সফল সমাপ্তির জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছু করুন এবং আপ-লাইন লিডারদের নিমন্ত্রণ করে ব্যবসা উন্নয়নের উপায় বের করুন।
 টিপ্স চুয়াত্তর
টীম বা দলের আদর্শ, নীতি ও মূল্যবোধ আপনি যেমন মেনে চলবেন তেমনি অন্যরা যাতে মেনে চলে লক্ষ্য রাখুন।
টিপ্স পচাঁত্তর
নিজেকে নেতা হিসেবে প্রমাণের প্রয়োজন নেই, আপনার মোহনীয় ব্যক্তিত্ব, দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের সচেতনতা, সিদ্ধান্ত গ্রহন ও নির্দেশনায় দূরদর্শিতা, আত্মনিয়ন্ত্রণ, সৎ উদ্যেগ, ন্যয় ও পরায়নতা, সৃজনশীলতা ও প্রেরণা আপনাকে সফল নেতার স্থানে আসীন করবে।
টিপ্স ছিয়াত্তরঃ
অনুমান করবেন না। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং-এ ক্রমাগত নতুন লোক ব্যক্তিগতভাবে স্পন্সর করার উপর যদি আপনার ভবিষ্যতের আয় নির্ভর করে অথবা যদি আপনাকে পার্সোনাল সেল্স ভলিউম কোটা অনুসরণ করতে হয় সেটা আপনার ব্যক্তিগত গড় ভোগ অপেক্ষা অনেক বেশী, তবে সাবধান, পরে আপনার আর ছেড়ে পালাবার সুযোগ থাকবে না।
টিপ্স সাতাত্তর
কিছুদিন পূর্বে একটা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অনেক মানুষ প্রতারিত হয়েছিল এমন ধারণা মনে পোষবেন না বরং ধরে নিন নতুন অনেক প্রতিষ্ঠান বৈধ উপায়ে কাজ করছে যারা মানুষের কল্যাণে নিবেদিত-তাদের খুঁজে নিন।
টিপ্স আটাত্তরঃ
যদি সফলতার জন্য নেটওর্য়াক ব্যবসা আমার অগ্রাধিকার তালিকায় না আসে তাহলে এজন্য কখনো সময় বরাদ্দ করবো না। তাই সম্ভাব্য ক্রেতাকে এমনভাবে এ ব্যবসার সুবিধা প্রদর্শন করতে হবে যাতে তার জীবনের লক্ষ্যর্জন এবং স্বপ্নপূরণ এটি সহায়ক হয়। যার জন্য তিনি এ ব্যবসায় সামান্যতম সময় হলেও বরাদ্দ করেন।
টিপ্স ঊনআশি
নেটওর্য়াক মার্কেটিং এ রাতারাতি ধনী হতে শেখায় না কিন্তু ধনী হওয়ার সহজ পথের সন্ধান দেয়। যারা প্রকৃতপক্ষে ধনী হতে চায় তারা এ পথ খুঁজে নেন।
টিপ্স আশিঃ
প্রশ্নের দ্বৈততা এড়িয়ে চলুন। সম্ভাব্য ক্রেতা যদি ব্যবসায় যোগদানে সম্মত হন, তাহলে আলোচনা দীর্ঘায়িত করবেন না। আলোচনা তাৎক্ষনিক বন্ধ করে আবেদন ফরম পূরণ করতে দিন। বহু নেটওর্র্য়াক ব্যবসায়ী দীর্ঘায়িত আলোচনার প্রেক্ষিতে সম্ভাব্য ক্রেতা না বলার সুযোন পান।
 টিপ্স একাশি
নেটওর্য়াক মার্কেটিং ব্যবসায় তিনটি বিষয়ের প্রাধান্য প্রদানের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা যায়।
ক) উপস্থাপনের যোগ্যতা বাড়াতে হবে।
খ) নেতৃত্ব প্রদানের ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
গ) বিক্রয় বৃদ্ধির কৌশল আয়ত্ত করতে হবে।
টিপ্স বিরাশি
লোকজন আপনাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করবে এটাই  স্বাভাবিক। তবে আপনি সঠিক প্রশ্নের সঠিক উত্তর প্রদান করুন।
টিপ্স তিরাশি
অনেকের মধ্যে তিনিই সেরা যিনি বেশী শোনেন অথচ কম বলেন, এক উত্তরের মাধ্যমে অনেকেই প্রশ্নের জবাব পেয়ে যান।
টিপ্স চুরাশিঃ
সফলতার জন্য আপনি কতটা সন্তুষ্ট হতে পারলেন তা নয় বরং ক্রেতারা আপনার মতো এটি করার জন্য কতটা সন্তুষ্ট হতে পারলো সেটাই মূখ্য বিষয়। একেবারে তাদেরকে সমস্ত বিষয়গুলো বলে দেওয়ার প্রবনতাই তাদের জন্য কঠিন কাজ হতে পারে। সুতরাং “Keep it Simple and Duplicate”.
টিপ্স পচাঁশি
একজন অপরাধীর নিকট হতে সুযোগ গ্রহন করা এবং নিজে অপরাধ করা সমান। পিরামিড স্কীমের সুযোগ গ্রহন করে অন্যকে ঠকানো আত্মহত্যার শামিল। যা আপনার বিবেককে ধ্বংস করবে। অতএব সাবধানে পা ফেলুন, সত্যের পথ কঠিন হলেও শান্তিময়।
টিপ্স ছিয়াশিঃ
প্রশ্নোত্তরে অধিক আন্তরিক হোন কিন্তু তোষামোদ করবেন না। প্রসপেক্টকে যদি গুরুগম্ভীর মনে হয়, তাহলে তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে দিন। তাকে যোগদানে বাধ্য করার প্রচেষ্ঠা থেকে বিরত থাকুন।
টিপ্স সাতাশি
সময়ের সাথে সাথে আমাদের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়ছে-বিষয়টি সত্য। আবার এও সত্য যে কঠিনতম জীবনযাত্রা সহজ করার অনেক পন্থা আবিষকৃত হচ্ছে যার একটি নেটওর্য়াক মার্কেটিং অতএব আস্থা হারাবেন না।
টিপ্স আটাশি
কেন কিছু লোকজন এ ব্যবসায় আসছে এবং কেন কিছু লোকজন এ ব্যবসায় আসতে চায় না। এর দশটি করে উত্তর লিপিবদ্ধ করুন, অনেক কিছুর উত্তর পেয়ে যাবেন যা আপনার অজানা ছিল।
টিপ্স ঊননব্বইঃ
অনেক লোকই নেটওর্য়াক মার্কেটিংয়ের সিস্টেম অনুসরণ করতে অনিচ্ছুক। কারণ, নিয়ম-শৃঙ্খলা ছাড়াও এখানে ব্যক্তিগত শ্রম ও টাকা ইনভেষ্ট করার প্রয়োজন হয়।
টিপ্স নব্বই
উপলব্ধি করুন আপনার অভাব, উপলব্ধি করুন আপনার কর্মক্ষেত্রের, উপলব্ধি করুন আপনার উপর নির্ভরশীলদের, উপলব্ধি করুন আপনার প্রচেষ্ঠার, উপলব্ধি করুন ভবিষ্যত পরিকল্পনা।
টিপ্স একানব্বই
আপনার প্রত্যাশা মোতাবেক নেটওর্য়াক ব্যবসা যদি বৃদ্ধি না পায় তাহলে আপনার ফলো-আপের ধরন সঠিক করুন। আপ-লাইন লিডারের অভিজ্ঞতার নিরিখে আপনার ফলোআপ পর্যালোচনা করুন এবং তাদের পরামর্শ নিন।
টিপ্স বিরানব্বই
টীমওর্য়াক হলো আপনার নিজ হাতে লাগানো গাছে পানি দেওয়ার মতো। গাছের যত পরিচর্যা তত পুষ্টতা লাভ করে বেড়ে উঠবে। আর যদি পরিচর্যা না করেন তবে তা হবে রাস্তার ধারে অপরিকল্পিতভাবে লাগানো গাছের ন্যয়।
টিপ্স তিরানব্বইঃ
কর্ম পরিকল্পনা আপনার চিন্তা ও কাজের মধ্যে সেতু বন্ধন তৈরী করে। এটা অনেকটা যাত্রাপথের ম্যাপ হাতে রাখার মতো।
টিপ্স চুরানব্বই
নতুন আবিষ্কারের প্রতি নমনীয় ধারনা পোষন করুন। কারন প্রতিটি আবিষ্কারেরই একটা কল্যানকর দিক রয়েছে যা আপনি সহজে গ্রহন করতে পারেন।
টিপ্স পচাঁনব্বই
কিছু লোক স্বপ্ন দেখতে ভালবাসে, কিছু লোক কাজ করতে ভালবাসে। এবং কিছু লোক কথা বলতে ভালবাসে। আপনি বেছে নিন যে স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরে ভালবাসে তাকে।
টিপ্স ছিয়ানব্বই
যার হাত ধরে আপনি এ ব্যবসায় এসেছেন তাকে সম্মান করুন কিন্তু পুঁজো নয়। কারন আপনার সাফল্যে সেও সফলতা পাবে এবং প্রতিষ্ঠানের কাজে আন্তরিক হোন কিন্তু কর্তৃপক্ষের কাছে আপনি ঋণী এমন ভাববেন না।
টিপ্স সাতানব্বই
মেকী আচরন না করে অনেকের নিকট দৃষ্টান্ত হয়ে থাকার চেষ্টা করুন। আপনার কর্মফল আপনাকে অন্যদের থেকে পৃথক ও একক বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন করে তুলবে।
টিপ্স আটানব্বইঃ
আপনার টীমে যতবেশী লিডার থাকবে ততই প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী হবে এবং সফলতাও মধুর হবে। অতএব লিডার খুঁজে বের করার জন্য আপনাকেই প্রথমে লীডার হতে হবে।
 টিপ্স নিরানব্বই
ঐ প্রতিষ্ঠানই সেরা যেখানে পণ্য বিক্রয় ছাড়াও সিস্টেম বিক্রয়ের সুযোগ রয়েছে। রয়্যালটি আয়ের জন্য আপনাকে সিস্টেম বিক্রয়ের প্রতিই অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। অতএব সেই প্রতিষ্ঠানটি বেছে নিন।
টিপ্স একশ
যারা নেটওর্য়াক মার্কেটিং ব্যবসাকে এখনও সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখে তাদের বলুন অসংখ্য মানুষের ভাগ্য যেখানে জড়িয়ে যায় সেখানে মন্দটিও ভালো হয়ে যায়। মানুষ জানে মন্দ কখনও দীর্ঘস্থায়ী হয় না।



Saturday, 29 June 2013

ব্যর্থতা মানেই নতুন পথের হাতছানি: অপরাহ

বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালী নারী অপরাহ উইনফ্রে। মাত্র নয় বছর বয়সে নির্যাতনের শিকার হয়ে নিজ বস্তি থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। কে জানত এ নারী একদিন বিশ্বে সফল নারীর দৃষ্টান্ত হয়ে উঠবেন। অপরাহ উইনফ্রে নিজেও বোধহয় এমনটা অনুমান করতে পারেননি।

সম্প্রতি বিখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এ আয়োজনে বিশেষ বক্তা হিসেবে অপরাহ উইনফ্রে আমন্ত্রিত হন। তবে তার বক্তৃতার বড় অংশজুড়ে ছিল ব্যর্থতার গল্প। তিনি তার বক্তৃতায় বলেন, তুমি যত উপরেই উঠে যাও। একদিন অবশ্যই আসবে যখন তোমাকে সেই উচ্চতা থেকে পড়ে যেতে হবে। জীবনে একবার হলেও তোমাকে ব্যর্থ হতে হবে। এটা জীবনেরই অংশ।

অপরাহ তার বক্তৃতায় বারবার নিজের প্রসঙ্গই নিয়ে আসেন। জনপ্রিয় টেলিভিশন উপস্থাপিকা অপরাহ উইনফ্রে টক শো দিয়ে ২৫ বছর জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিলেন। তবে তার আগের গল্প খুবই ভয়াবহ। ক্যারিয়ারের শুরুতে তার প্রতিটি অনুষ্ঠানকে ‘ফ্লপ শো’ হিসেবে উল্লেখ করা হতো।

কিন্তু সময়ের সঙ্গে তিনি হয়ে উঠেছেন গণমাধ্যম ধনকুবের। আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয় টক শো ‘দ্য অপরাহ উইনফ্রে শো’ তাকে একাধিক এমি অ্যাওয়ার্ড এনে দিয়েছে। এ শো টেলিভিশনের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি প্রচারিত বলে বিবেচনা করা হয়।

এ সম্পর্কে উইনফ্রে হার্ভার্ডের সমাবর্তন বক্তৃতায় বলেন, জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় ছিল সেটি। কঠিন সময় পার করাটাই জীবনের প্রধান যুদ্ধ। এ যুদ্ধে জয়ী হলেই আত্মবিশ্বাস পাওয়া যায়। যার সূত্র ধরেই আজ আমি হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছি। একটি কথা মনে রেখ- কঠিন সময় বা বিপদই শেষ না। এ মুহূর্ত অতিক্রম করবেই। যখন তুমি ব্যর্থ হবে, তাকে ব্যর্থতা মনে করবে না। ব্যর্থতা মানেই জীবন তোমাকে নতুন আরেকটি নতুন পথে নিয়ে যাচ্ছে।

তুমি জীবনের সাফল্য এবং আনন্দময় মুহূর্ত তখনই পাবে যখন তোমার একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকবে। একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য। যেখানে তোমার সর্বোচ্চ শক্তি, শ্রম, মেধা বিলিয়ে দেবে। তোমার মানবতাবোধ কাজে লাগাবে। মনুষ্যত্ববোধ অর্জন করাটাই আসল। সেই সঙ্গে তোমার সর্বোচ্চ বিলিয়ে দাও তোমার পরিবারের জন্য। এমনকি তোমার আশেপাশের মানুষের জন্য। তবেই তুমি জীবনের আনন্দ খুঁজে পাবে।

তোমাদের কাছে হার্ভার্ড নামটি আছে। তোমাদের কাগজে এ নাম বিরাট একটি ভূমিকা পালন করবে। এটা তোমাদের জন্য কলিং কার্ডের মতো। কিন্তু তোমাদের প্রত্যেকে নিজের কাছে একটি আলাদা সার্টিফিকেট অর্জন করতে হবে।

কোনো টাইটেল দিয়ে এর পরিমাপ করা সম্ভব না। যুদ্ধ করতে হবে। মানুষের জন্য, জাতির জন্য কিছু করার চেষ্টা করতে হবে। কারণ যেদিন তুমি কোনো কাজে পরাজিত হবে। হতাশায় নিমজ্জিত হবে। তখন সেই ছোট ছোট গল্পগুলো হতাশার গর্ত থেকে তোমাকে তুলে আনবে।

হর্ভার্ডের পড়াশোনা করার যোগ্যতা তোমাদের সৌভাগ্য করে তুলেছে। তোমাদের ওপর সারা বিশ্বের মানুষের দোয়া আছে। তোমরাই পারো এ দুঃখী পৃথিবীর মুখে হাসি ফোটাতে। এ কাজটি তোমরা করতে পারবে। আমি বিশ্বাস করি। তোমরাই পারবে।

কোনো অনুষ্ঠানে যখন কোনো পারফর্মার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আমাকে প্রশ্ন করে, সব ঠিক আছে? সেই একই প্রশ্ন আমি তোমাদের করতে চাই। সব ঠিক আছে? এর অর্থ হলো- তোমরা কি আমাকে শুনতে পাও? আমাকে দেখতে পাও? আমি যা বললাম তার গুরুত্ব কি তোমরা বুঝতে পেরেছ?

জীবন গড়তে এম.এল.এম.


Kazi ashraful Islam 

মহান আল্লাহতায়ালা মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত বা সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। মানুষ হচ্ছে তার খলিফা বা প্রতিনিধি। মানুষ যাতে শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখতে পারে সেই জন্য আল্লাহতাআলা মানুষ সৃষ্টি করেছেন। মানুষের কিছু গুণ আছে যেমন বুদ্ধি, বিবেক, চিন্তাশক্তি, বাকশক্তি ইত্যাদি। যে গুণগুলো কাজে লাগিয়ে অসাধ্যকে সাধন করতে পারে, যা অন্য কোনো প্রাণীর পক্ষে সম্ভব নয়। একটি পশু জন্মগ্রহণ করার পরই পশু, কিন্তু একটি মানব শিশু জন্মগ্রহণ করার পরই প্রকৃত মানুষ হতে পারে না। মানুষ হতে হলে তাকে অবশ্যই জ্ঞান অর্জন করতে হবে। তবেই সে প্রকৃত মানুষ হবে। জন্ম নিলেই মানুষ হওয়া যায় না। জীবনকে সুন্দর, সত্য ন্যায় পথে পরিচালিত করতে হবে। সুখী সুন্দর ও স্বপ্নময় জীবন গড়তে বিভিন্ন এম.এল.এম কোম্পানি কাজ করে যাচ্ছে। এর মধ্যে  Enloving international সেই কাজ করে যাচ্ছে। ডাইরেক্ট মার্কেটিংয়ের ছায়াতলে একজন মানুষ সমবেত হলে তার ভেতরে আমূল পরিবর্তনের কিছু আলামত দেখা যায়। যেটি অন্যান্য ট্র্যাডিশনাল ব্যবসায় দেখা যায় না। ট্র্যাডিশনাল ব্যবসায় মানুষের সঙ্গে খারাপ আচরণ করলে সেটি আবার পরে শুধরে নেওয়া যায়। কিন্তু মাল্টিলেভেল মার্কেটিংয়ে বা এম.এল.এম ব্যবসায় খারাপ আচরণের কোনো মানসিকতা তৈরি হয় না। যাদের এ ধরনের আচরণ তৈরি হয় তাদের ব্যবসা হয় না। জীবনে দুঃখ-কষ্ট, রাগ অভিমান এসব থাকতেই পারে, কিন্তু এসবকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। এই বিষয়গুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনার কৌশল শেখাচ্ছে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং বা এম.এল.এম কোম্পানি। প্রত্যেক মানুষই চায় নিজে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করে সমাজে মাথা তুলে দাঁড়াতে। মানুষের যেকোনো স্বপ্ন পূরণের জন্য অর্থের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাই সমাজে মাথা তুলে দাঁড়াতে এবং স্বপ্ন পূরণে ডাইরেক্ট সেলিং পেশার কোনো বিকল্প নেই। ডাইরেক্ট সেলিং মার্কেটিংয়ের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এ ব্যবসায় একজন ভোক্তা সরাসরি প্রস্তুতকারকের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী সংগ্রহ করতে পারেন। যে কারণে কোনো মধ্যস্বত্বভোগী বা শ্রেণীর প্রতারণার শিকার হতে হয় না। এতে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয় না। যেহেতু এ ব্যবসা অত্যন্ত স্বচ্ছ, তাই এ ব্যবসাটি ট্র্যাডিশনাল ব্যবসার পরে সমাজে প্রচলন হলেও বর্তমান বিশ্বে এর প্রচলন ও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। যা অনেক ক্ষেত্রে ট্র্যাডিশনাল ব্যবসাকেও ছাড়িয়ে গেছে। জীবন গড়ার জন্য ডাইরেক্ট মার্কেটিং একটি চমৎকার প্লাটফর্ম। যেখানে একজন মানুষের যেসব চাহিদা আছে তা পূরণের সঙ্গে সঙ্গে সত্য ও ন্যায়ের পথে চলতে শেখে। অসৎ কাজ করেও অন্যান্য পেশাতে যেখানে সত্য ও ন্যায়ের বাণী প্রচার করতে পারে, কিন্তু বাস্তবায়ন করতে পারে না। কারণ সত্য ও ন্যায়ের কথা অন্যান্য পেশাতে মানুষ ব্যাপকভাবে প্রচার পেলেও সেই ব্যবসাটি বেশিদিন টিকে থাকবে না। কিন্তু ডাইরেক্ট মার্কেটিং ব্যবসাটি একজনের পক্ষে করা সম্ভব নয়। এটি বহু লোকের ব্যবসা। মাল্টিলেভেল মার্কেটিং ব্যবসা করে একজন ব্যক্তি যেমন অর্থনৈতিক দিক দিয়ে স্বাধীনতা পায় তেমনি সে একজন আদর্শবান হয়ে গড়ে ওঠে। যেহেতু এটি বহু লোকের ব্যবসা তাই শুধু একজন ব্যক্তি নয়, হাজারো ব্যক্তি অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং আদর্শবান হয়ে ওঠে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং বা এম.এল.এম. কোম্পানি থেকে । আর Enloving international মানুষ গড়ার প্রকৃত কারখানা হিসেবে কাজ করছে।

এম.এল.এম. এর উপর কিছু কথা (পার্ট-১) যারা জানেন না তাদের জন্য

Kazi ashraful Islam 
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কিংবা মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসা পদ্ধতিতে আপনাকে স্বাগতম। বিশ্ব জুড়ে একথা প্রমাণিত যে, উৎপাদিত পণ্য বা সেবার যথাযথ বাজার বা মার্কেটের অনুপস্থিতিতে সকল আয়োজন ধূলিসাৎ হয়ে যায়, থেমে যায় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের গতি। এক্ষেত্রে সকল উদ্যোক্তাই একমত যে, বিপণন কর্মকান্ড সফল না হয়ে কোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানই টিকে থাকতে পারে না। এসব বিবেচনা থেকেই বিশ্বব্যপী রথী-মহারথী, উদ্যোক্তা ও বিপণন বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন কর্মপদ্ধতি, নীতি ও প্রয়োগিক দিক নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেছেন। উদ্ভুত প্রেক্ষাপটে একথা গৌরবের সাথে বলা যা যে, মাত্র কয়েক দশকে পণ্য বিপণন ক্ষেত্রে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং বা মাল্টি লেভল মার্কেটিং পদ্ধতিটি বিশ্বজুড়ে অত্যন্ত সফল একটি মার্কেটিং কনসেপ্ট বা Mechanism হিসেবে যথেষ্ঠ আস্থা অর্জন করতে সমর্থ হয়েছে। পদ্ধতিগত বৈশিষ্ট্য, প্রয়োগশৈলী এবং গণমূখী চরিত্র বা প্রকিয়া ধীরে ধীরে এ পদ্ধতিটিকে এযাবৎকালে উদ্ভাবিত আধুনিক বিপণন পদ্ধতি গুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠতম মার্কেটিং পদ্ধতির রূপ পরিগ্রহে উৎসাহিত করেছে।  (প্রত্যেক ব্যক্তি ভিন্ন ভিন্ন ব্যবসা ক্ষেত্র তৈরী করার চেয়ে নেটওয়ার্ক ব্যবসা ক্ষেত্র অপেক্ষাকৃত অধিক নিরাপদ।)
সময়ের চাহিদা পূরণে সক্ষম এই বহুমাত্রিক পণ্য বিপণন ব্যবসায় (Direct Marketing or Network Marketing or Multi-Level Marketing) ডাইরেক্ট মার্কেটিং বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং বা মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং পদ্ধতিটি বাংলাদেশে সর্বস্তরের মানুষের কাছে ক্রমাগত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। যে প্রেক্ষাপটে এ ব্যবসা দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, তার বিশদ ব্যাখ্যা এ স্বল্প পরিসরে দেয়া না গেলেও একথা নিঃসন্দেহে বালা যায় যে, নেটওয়ার্ক মার্কেটিং বা এম.এল.এম. পদ্ধতি প্রয়োগে বেকারপীড়িত এদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষকে আত্ম-কর্মসংস্থানের পথ দেখিয়েছে, আলোর পথ পেতে সাহায্য করেছে। কর্মবিহীন শিক্ষিত যুবক-যুবতী এ পদ্ধতিতে আত্মকর্মনির্ভর হয়ে সার্বক্ষণিক বা আংশিক শ্রম দিয়ে, যৎসামান্য পুজি বিনিয়োগে বা বিনা পুজিতে (পণ্য বিপণনের মাধ্যমে) নিজেদেরকে স্বাবলম্বী হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। ছাত্র-ছাত্রী, স্বল্প আয়ের চাকুরিজীবী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, সমাজসেবী, রাজনীতিবিদ, এমনকি যে কোন পেশার মানুষকে এ প্দ্ধতি এনে দেয় আর্থিক স্বচ্ছলতা এবং স্বস্তিময় জীবনমান। এজন্য অতি উচ্চ শিক্ষা বা পূর্ব অভিজ্ঞতা অত্যাবশ্যকীয় নয়। আর এজন্য বিশ্বের বহু দেশে এই বিপণন পদ্ধতিটি "Freedom Enterprise" হিসেবে আখ্যায়িত।
এখন আমরা জনবো ডাইরেক্ট মার্কেটিং বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং বা মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং বলতে যা বুঝায়-"ভোক্তাশ্রেণীর পারস্পরিক সম্পর্ককে তথ্য সরবরাহ ও বিজ্ঞাপনের কাজে বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করে পণ্য দ্রুত এবং সরাসরি ভোক্তার কাছে বিপণন করাটাই ডাইরেক্ট মার্কেটিং বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর বৈশিষ্ট্য।"
এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আমরা অনেকেই জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বহুকাল ধরে পরোক্ষভাবে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর কর্মটি করে চলছি এবং তা অনেকটা মনের অজান্তে। এবংএকথাটিও সত্য যে, এ সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই তথ্যনির্ভর ধারণাও যথেষ্ট কম।
এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা যায় যে, আপনি যখন কোন একটি ভাল বই পড়ে বেশ আনন্দ পান, কিংবা কোন ভাল রেষ্টুরেন্টের খাবার খেয়ে উপভোগ করেন বা ভাল একটি সিনেমা বা নাটক দেখে খুব আনন্দ উপভোগ করেন, তখন আপনি এটি আপনার নিজস্ব পরিমণ্ডলের অন্যদের কাছে প্রায়শঃ প্রচার করে থাকেন। আর এ কাজটি আপনি নিছক কথার ছলেই বলে বেড়ান।
যদি কাজটি আপনি প্রতিনিয়ত করে থাকেন তাহলে আপনি অবশ্যই নেটোয়ার্কিং পদ্ধতির কাজটি করে বেড়াচ্ছেন বলে ধরে নেয়া যায় এবং এর ফলে আপনাকে বলা যায় একজন নেটওয়ার্কার। পার্থক্য শুধু এতটুকু যে আপনার টেওর্য়াক কাজের দ্বারা যে পণ্য বা সেবার ফ্রি বিজ্ঞাপন হয়ে যাচ্ছে, যাবে এর জন্য যে বিপণনকারী সংগঠন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে  (দোকানদার বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি), তাদের কেউই আপনাকে কোন বিপণন কমিশন বা আর্থিক সুবিধা দিচ্ছেন না বা দেবেননা। ন্যূনতম সৌহার্দ্যবোধে আপনাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনও করেননি বা করবেন না, বিনামূল্যে এই বিজ্ঞাপন প্রচারের কাজটি করার জন্যে। তবে নেটওর্য়াক মার্কেটিং প্রতিষ্ঠান আপনার এ ধরণের প্রচারের কারণে যদি কোম্পানীর কোন পণ্য বা সেবা বিপণন হয়ে থাকে, সে জন্য আপনাকে আর্থিক সুবিধা হিসেবে বিপণন কমিশন দিতে আগ্রহী। গতানুগতিক পণ্য বিপণন পদ্ধতির সাথে কাঠামোগত নেটোয়ার্ক বিপণন পদ্ধতির মধ্যে পার্থক্য এটুকুই।
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতি হচ্ছে, ব্যক্তির সংগে ব্যক্তির (ইন্টার-পার্সোনাল) সম্পর্ককে ব্যবহার করে মৌখিক বিজ্ঞাপনজনিত প্রচারের মাধ্যমে পণ্য বিপণন করা এবং এ ধরনের বিপণনে উদ্বুধ্ধকরনের মাধ্যমে পণ্য উৎপাদনকারী বা উৎস থেকে ভোক্তার কাছে সরাসরি ক্রয়/বিক্রয় সম্পন্ন করা। বাড়তি খরচ পরিহার করে তার একটা বিশাল অংশ ক্রয়/বিক্রয়কারী ভোক্তাশ্রেণীকে একত্রে প্রচারকার্মে অংশগ্রহণ করার জন্য "কমিশন" হিসেবে প্রদান করাই হচ্ছে এ বিপণন পদ্ধতির মূল দর্শন। কারণ এই মৌখিক প্রচার পদ্ধতি ব্যবহারের কারণে পণ্য বিপণন প্রক্রিয়ায় গতানুগতিক মধ্যসত্ত্বভোগীর প্রয়োজন হয় না, ফলে বিপণনে বাড়তি খরচের বিষয়টির বিলুপ্তি ঘটে। এই পদ্ধতিতে পণ্য বা সেবা বিপণনে সাধারণতঃ কোন ব্যয়বহুল শো-রুম খরচ ও বিজ্ঞাপন খরচের প্রয়োজন হয় না। তাই উৎপাদনকারীগণ কিংবা সরবরাহকারীগণ সবাই অধিক পরিমাণ পণ্য খুব সহজে এবং কম খরচে ভোক্তাদের কাছে সরাসরি বাজারজাত করতে সক্ষম হন। এ কারণে এ বিপণন পদ্ধতিটি গতানুগতিক বিপণন প্রক্রিয়ায় ব্যবসা সম্প্রসারণের তুলনায় সংস্কার-সমৃদ্ধ একটি আধুনিক প্রক্রিয়া মাত্র।
পরবর্তী পার্টে ডাইরেক্ট মার্কেটিং বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং বা এম.এল.এম পদ্ধতির সূচনা নিয়ে আলোচনা করা হবে।

মাল্টিলেভেল মার্কেটিং

কেন মাল্টিলেভেল মার্কেটিং?  
  বেকার ও স্বল্প আয়ের লোকজনের আধুনিক লাইফ-ষ্টাইল প্রতিষ্ঠা করতে স্বল্প পুঁজি, স্বল্প ঝুঁকি স্বল্প শ্রম ও স্বল্প সময় বিনিয়োগ করে স্বাধীনভাবে সততার সাথে, সর্বোপরি হালাল পথে সন্মানজনক একটি বাড়তি আয়ের জন্য মাল্টিলেভেল মার্কেটিং বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।  
   
   
   
   
 মাল্টিলেভেল মার্কেটিং-ই হচ্ছে একমাএ ব্যবসা, যেখানে আয় ব্যয়ের কোন সীমা-রেখা নেই, আছে অবাধ উপার্জনের পথ; কোন পরাধীনতা নেই, আছে স্বাধীন কর্মপ্রেরণা। কোন জবাবদিহিতা নেই, আছে আন্তরিক সহমর্মিতা, যেখানে কারো আদেশ মোতাবেক চলতে হয় না। এমনকি যেখানে কখনো কোনরুপ চাপের কাছে নিজের স্বাধীন স্বত্তাকে বিসর্জন দিতে হয় না।  
 
  মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কি? কারা করবেন মাল্টিলেভেল মার্কেটিং?  
  উচ্চ শিক্ষিত, স্বল্প শিক্ষিত , বেকার, স্বল্প আয়ের চাকুরীজীবি বা পেশাজীবি, সমাজসেবী, রাজনীতিবিদ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকল শ্রেনীর মানুষের বাড়তি আয়ের প্রয়োজন মেটাতে পারে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং ব্যবসা পদ্ধতি।  
  ইসলামের দৃষ্টিতে 
মাল্টিলেভেল মার্কেটিং  
   
  কি ভাবে সদস্য হবেন?  
  নিবন্ধনের সুবিধা 
সমূহ কি?  
                 
  পণ্যের মূল্য তালিকা বিকল্প পেশা হিসাবে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং  
        মূল পেশা ঠিক রেখে, অবসর সময়কে কাজে লাগিয়ে বাড়তি আয় অর্জনের একমাএ বিকল্প হচ্ছে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং ব্যবসা পদ্ধতি; যেখানে উচ্চশিক্ষা বা পূর্ব অভিজ্ঞতা দরকার হয় না।  
         
         
       মাল্টিলেভেল মার্কেটিং এর সূচনা   
        বিশ্ববাণিজ্যে বিপণন প্রক্রিয়ায় সর্বশেষ সংযোজন মাল্টিলেভেল মার্কেটিং সিষ্টেম বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং সিষ্টেম। এটি ডাইরেক্ট মার্কেটিং সিষ্টেম, ফ্রীডম এন্টার প্রাইজ, হোম-বেজ বিজনেস ইত্যাদি নামেও পরিচিত। একজন আমেরিকান কেমিষ্ট ডঃ কার্ল রেইন বোর্গ (Dr. Carl Rehn Bourgh) ১৯৩৪ সালে প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করে উৎপাদিত শাক-সব্জী থেকে ভিটামিন তৈরী করে তাঁর Nutrilite Product In Corporated কোম্পানীর মাধ্যমে সর্বপ্রথম এই পদ্ধতির সূচনা করেছিলেন। বিশ্বনন্দিত এই বিপণন পদ্ধতিটি ১৯৫৮ সালে আমেরিকার পার্লামেন্ট সিনেট এ অনূমোদন লাভ করে এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়।  
         
         
         
         
         
         
         
         
  মাল্টিলেভেল মার্কেটিং এর উদ্দেশ্য  
  পণ্য বিপণন ব্যবস্থায় উৎপাদনকারী ও ভোক্তার মধ্যকার গুটিকতক এজেন্ট, মিডিয়া, বিজ্ঞাপণ সংস্থা, পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতা, এক কথায় মধ্যস্বত্ত্বভোগকারী শ্রেণীকে প্রত্যাহার করে, ঐ স্থানে ভোক্তাদেরকেই উৎপাদনকারীর নিকট থেকে সরাসরি বাজার মূল্যে পণ্য ক্রয় ও পরিবেশনের সূযোগ দেয়া হয়, যেন সমাজের অসংখ্য বেকার ও স্বল্প আয়ের মানুষ পার্ট-টাইম বা ফুল টাইম কাজ করে বাড়তি আয় অর্জনের সুযোগ পায়।  
  ট্রেডিশ্নাল বা প্রচলিত পদ্ধতিঃ  
   
  নেটওয়ার্ক বা ডাইরেক্ট মার্কেটিং পদ্ধতিঃ  
   
                           
 


 
                           

ইসলামের দৃষ্টিতে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং ব্যবসাঃ-

ব্যবসার সংজ্ঞাঃ দ্বি-পাক্ষিক সন্তষ্টির ভিত্তিতে পরস্পরের মধ্যে পণ্য বা দ্রব্য বিনিময় কার্যকর হলে সেই কার্যক্রমকে ব্যবসা বলে। তবে পণ্য বা দ্রব্য বিনিময়ের ক্ষেত্রে অর্থ বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।

ব্যবসা এর রোকনঃ-
১) বিক্রেতা প্রস্তাব দিবে
২) ক্রেতা গ্রহন করবে

ব্যবসা এর হুকুমঃ-
বিক্রিত দ্রব্যের উপর ক্রেতার এবং মূল্যের উপর বিক্রেতার অধিকার প্রতিষ্টিত হওয়া।

ব্যবসার শর্তঃ-
১। ক্রেতা বিক্রেতা উভয়ের সন্তষ্টি।
২। ক্রেতা-বিক্রেতা সুস্থ মস্তিস্ক ও প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া।
৩। পণ্যটি যেন বিক্রেতার মালিকানা বা দায়িত্বে থাকে।
৪। বিক্রেতা তা ক্রেতাকে প্রদান করতে সক্ষম।
৫। ক্রেতা যেন পণ্যটি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে দেখার মাধ্যমে অথবা বিবরণ জানার মাধ্যমে এবং মূল্যও জ়েনে নেয়।
৬। পণ্যটি যেন বিক্রেতা কর্তৃক কোন অবৈধ শর্তের সাথে ঝুলন্ত না রাখা হয়।
৭। পণ্যটি যেন হারাম না হয়।

( রেফারেন্সঃ আব্দুর রহমান বিন আব্দুল করিম আল ওবায়েদ লিখিত গ্রন্থ উসুলুল মানহাজিস ইসলামী, পৃষ্ঠা-৩২৪, ৩২৮; ফেকহুস-সুন্নাহঃ ১০/২৩৬, কেতাবুল বয়ু অধ্যায )

উল্লিখিত সূত্রগুলোর আলোকে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং ব্যবসার কোন বিরোধ নেই।এককথায়-যেখানে পুঁজি, পণ্য, পরিশ্রম, ক্রয়, বিক্রয়, লাভ, হ্মতি ইত্যাদি কার্য সম্পাদিত হয়, তাহা-ই ব্যবসা এবং যদি তা উল্লিখিত সূত্রগুলোর আলোকে হয় তবে তা হালাল ব্যবসা।

মাল্টিলেভেল মার্কেটিং সিষ্টেমে পণ্য ক্রয় বাবদ যে খরচ হয়, তা পুঁজি হিসাবে বিবেচিত।অন্যদিকে শ্রম ও সময় প্রদান করেও যদি আয় অর্জিত না হয় তবে তে হ্মতি হিসাবে বিবেচিত।

Friday, 28 June 2013

নেটওয়ার্ক্ মার্কেটিং কেন ?

Kazi ashraful Islam


পরিবর্তন জীবনের রীতি ।

যারা শুধু অতীতে তাকিয়ে থাকে অথবা

বর্ত্মানে মগ্ন থাকে তারা নিশ্চই

ভবিষ্যতের সুসময় ভোগ করবে না ।

-   প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডী

পরিবর্তন । আজকের পৃথীবিতে আমাদের জীবনের মৌলিক সত্য ।

কিন্তু; সকল মানুষ পরিবর্তনের পরিপন্থী । আমরা একে বাধাগ্রস্থ করি । মানব প্রকৃতি হচ্ছে পরিবর্ত্ন হতে হবে নিজেদের অনুকুলে ।

কিন্তু; এটাও সত্য যে যাকে আপনি বাধাগ্রস্থ করবেন পক্ষান্তত্রে তা স্থায়ী রূপ লাভ করবে । যখন কোন সময়োপযোগী পরিবর্ত্নকে প্রতিরোধ করবেন অনেক বড় সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন !

আপনি যতই পরিবর্ত্নকে বাধা দিবেন – পরিবর্ত্ন ততোই আপনাকে প্রতিরোধ করবে !

 

প্রগতিশীলতা বনাম পশ্চাৎপদকরন

মানব সভ্যতার ইতিহাস জুড়ে দেখা যায়, যখন কোন পরিবর্ত্ন নতুন আলো নিয়ে এসেছে, মানুষ সম্মিলিত ফুৎকারে সে প্রদীপ শিখা নিভিয়ে দিয়েছে, ছুড়ে ফেলে দিয়েছে সে মঙ্গল দ্বীপ, যাতে পৃথীবি নিরবিচ্ছিন্ন অন্ধকারময় থাকে !

শিল্পকলা, বিজ্ঞান, ঔষধ, ব্যবসায় – জ্ঞানের যে জগৎই হোক না কেন, প্রতিটি প্রচেষ্টা, প্রতিটি পদক্ষেপে, প্রত্যেক নতুন চিন্তা, ধ্যন-ধারনাকে প্রথমেই বাধার মুখোমুখি হতে হয়েছে । প্রথমেই প্রত্যাখ্যাত হতে হয়েছে । আবিষ্কার যত নিরূপম, যত বৈপ্লাবক, পরিবর্তনের ব্যপকতা-বিশালতা যতটা সুদূর প্রসারী – প্রতিপক্ষ ততোটাই বলিষ্ঠ, ততোটাই সোচ্চার হয়েছে ।

অন্ধকার যুগের আতঙ্কিত, কুসংষ্কারাচ্ছন্ন মানুষ এমনকি এই সতের, আঠার এবং ঊনিষ শতাব্দীতেও মানুষ কেন নতুন দৃষ্টান্ত, নতুনকে ভয় পায় – এটা বোঝা কঠিন কিছু নয় । প্রশাসন কোপার্নিকাস-কে কারাগারে নিক্ষেপ করেছিল । গ্যালিলিও-কে হুমকি দিয়েছিল । ক্রিষ্টোফার কলম্বাস-কে উপহাস করেছিল । লুই পাস্তুর-কে ব্যাঙ্গ করেছিল । এমনকি এডিসন এবং আইনস্টাইন-কে বিদ্রুপ করেছিল । অথচ আমাদের বর্ত্ মান আধুনিক জীবন তাদের আশির্বাদপুষ্ট । আপনি জানেন ? আজও আমরা পরিবর্ত্নকে বাধাগ্রস্থ করি ।

কিছু সমসাময়িক দৃষ্টান্ত পর্যালোচনা করা যাক ।

আমেরিকার ক্রয়-বিক্রয়

মস একদা, সেই সতের থেকে আঠার শতাব্দীর শুরুর দিকে, উত্তর আমেরিকার অধিবাসীগন পারিবারিক ব্যাবস্থাপনায় পরিচালিত ক্ষুদ্র দোকান থেকে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করত ।

উদাহরনস্বরূপ – কসাইখানা, বেকারী, মোমবাতি ইত্যাদী ।

তখন এ টি স্টুয়ার্ট্ (A T Stuart) নামের এক আইরিশ অভিবাসী একটি চমৎকার উপায় চিন্তা করলেন । তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন এই সকল ছোট ছোট পৃথক দোকানগুলোকে এক  ছাদের নিচে এনে একটি বড় স্টোরে পরিনত করবেন । তিনি ১৮৬২ সালে নিউ ইয়র্ক্ শহরে একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর প্রতিষ্ঠা করেন । এটি পরবর্তীতে The Marble Palace নামে পরিচিত হয় যা ছিল একটি বিশাল বহুতল বিশিষ্ট ভবন । সেখানে সবাই শুধুমাত্র এক ডিপার্টমেন্ট থেকে অন্যটাতে ঘুরে ঘুরে তদের গৃহস্থালীর সবকিছুই কিনতে পারত ।

বিখ্যাত ডিপার্ট্মেন্টাল স্টোর- উদহরন স্বরূপঃ- Macy’s, Lord & Tailor’s, Sears, Woolworth’s, Hudson’s Bay Company, Marshall Field, Wannamaker’s এবং JC Penny’s প্রভৃতি দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এবং আমরা ডিপা্র্টমেন্টাল স্টোরের সোনালী যুগে প্রবেশ করলাম ।

ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ভোক্তাদের কেনাকাটায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করল, এক নতুন এবং উন্নত পদ্ধতি । অধিক বিক্রয়, সঠিক মূল্য, উন্নত মান এবং অধিক স্বাচ্ছন্দ্য ।

মানুষ প্রতিনিয়ত দল বেঁধে কেনাকাটায় মগ্ন হলো । ১৯০০ সালে শুধুমাত্র শিকাগোর মার্শাল ফিল্ড-এ প্রতিদিন ৪০,০০০ মানুষ কেনাকাটা করতে যেত ।

ভাবতে পারেন এর পরের ঘটনা কি ছিল ?

সেই পুরোন পদ্ধতি

এক কথায়, পৃথক পৃথক জায়গায় পসরা নিয়ে বসা ক্ষুদ্র দোকানীরা চরম নাখোশ । কারা দেখলেন তাদের ব্যবসায় প্রতিনিয়ত মন্দা যাচ্ছে, যেহেতু সবাই কাছের ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলোতে বাহারী পন্যের সমাহার, কম দাম, অধিক স্বাচ্ছন্দ্য উপভোগ করতে লাগল ।

সময় অনুপযোগী ঐসব ছোট দোকানগুলো উড়ন্ত পিপিলিকার ন্যয় ঝড়ে যেতে লাগল ।

ভাল কথা, ঐ দোকানীরা এটা মোটেই বরদাস্ত করল না- অবশ্যই না । তারা আন্দোলন গড়ে তুললো । তারা একটা নতুন ও উন্নত পদ্ধতির বিরূদ্ধে শুধু নিজেরা আন্দোলন করলেন না ।বরং পুরাতন ধ্যন-ধারনাকে আঁকড়ে ধরে রাজনৈতিকভাবে আন্দোলন গড়ে তুললেন ।

যেহেতু তারা হাজার হাজার ভোট সমেত হাজার হাজার দোকান মালিক ছিলেন, পুরাতন পদ্ধতিতে বেচাকেনা করার অধিকার রক্ষায় দ্রুত একটা শক্ত অবস্থান তৈরি করলেন ।

অধিকাংশ ভোক্তা সচেতন বিধায় এই আন্দোলন সম্মুখে অগ্রসর হয়নি এবং ডিপার্টমেন্টাল স্টোর বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বেচাকেনার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠে । পরবর্তী চমক শপিং মল – তৎকালীন ব্যবসার একটা বড় অংশ দখল করে নিল ।

মনে রাখবেন, আপনি যা বাধাগ্রস্থ করবেন তা স্থায়িত্ব পাবেই । আপনি একটি নতুন এবং উন্নত পদ্ধতিতে পরিবর্তনের সময় – বিশেষ করে যখন ভোক্তাশ্রেনী সাদরে গ্রহন করে – বিরুদ্ধাচরন করার চেয়ে ঐ পরিবর্তনের সম্মুখভাগে থেকে পথ প্রদর্শ্ক হওয়ার মাধ্যমে নিজ ভাগ্য সুপ্রসন্ন করতে পারেন ।

শপিং সেন্টার এবং শপিং মল

চেইন ডিপার্টমেন্টাল স্টোর খুচরা বাজারের বড় অংশ দখল করার পরে ছোট দোকানীদেন টনক নড়ে এবং তারাও নতুন প্রযুক্তিকে গ্রহন করে । তারা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর পদ্ধতিতে সুবিধা নেয়ার জন্য নিত্য নতুন পন্থা বের করতে থাকেন ।

বড় শহরের আশে পাশে যেভাবে প্রতিনিয়ত জনবসতি গড়ে ওঠে, সেভাবেই দলে দলে ছোট দোকানীরা সম্মিলিতভাবে শপিং সেন্টার গড়ে তোলেন । যেখানে বিভিন্ন ধরনের আলাদা স্টোর সুবিধাজনক একই স্থানে অবস্থান করে । এরপরেও কিছু দোকানীরা শপিং সেন্টার পদ্ধতিতে প্রবেশ না করে বিভিন্ন আন্দোলনে ইন্ধন দিয়েছেন, এটা অবশ্যই ন্যাক্কারজনক এবং অবাঞ্চিত ।

ঘটনাক্রমে, শপিং সেন্টার পদ্ধতিও বিস্তার লাভ করে । একটা সময় ব্যবসায়ী বোদ্ধাগন একত্রে এক ছাদের নিচে পরিবেষ্টন করেন – অনেকটা চেইন ডিপার্টমেন্টাল স্টোর প্রাথমিকভাবে যেরকম ছিল – এবং এর নাম দেন “শপিং মল”।

শপিং মল দ্রুত উত্তর আমেরিকার জীবনযাত্রার অবিচ্ছেদ্য অংশে রূপান্তরিত হয় ।

অধিকন্তু আজ, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর এবং শপিং মল উভয়ই পুরোন ও বিলীন হবার উপক্রম হচ্ছে ।

একটি পরাজিত লড়াই

কোন ব্যাক্তি, এবং কোন কিছুই পরিবর্তনের উর্ধ্বে নয় । এমনকি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর – যা এক শতাব্দী আগেও শক্তিশালী ও গ্রহনযোগ্য ছিল – আজ ভোক্তা চাহিদা মেটাতে অক্ষম ।

তাহলে কি ঘটেছিল ?

বিশালাকায় মল…., বিশেষায়িত দোকান, বড় মূল্য হ্রাস স্টোর…. এবং ই-কমার্স্ সাইট ক্রমাগত তাদের ব্যবসা দখল করে নিচ্ছে । ১৯৭৪ সালের মধ্যে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের বেচাকেনা ৫০ শতাংশ নেমে গিয়েছিল ! যখন মূল্য হ্রাসের স্টোরগুলোতে বেচাকেনা ৬৫ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল । ইতিমধ্যে, ই-কমার্স্ পদ্ধতি তড়িৎ গতিতে উন্নতি সাধন করে যা ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের ব্যবসা আরও কমিয়ে আনে ।

এখন, শপিং মল, ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের ভাগ্যকে বরন করে নেয় – অনেক মল কিন্তু অপ্রতুল ক্রেতা । তাই এক নতুন প্রতিযোগীতার লড়াই সূচনা হয়, ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার জন্য শপিং সেন্টারগুলো হলিউডি কৌশল অবলম্বন করে । শপিং মল পরিনত হয় থিম পার্কে – বেচাকেনা পরিনত হয় বিনোদনে । আপনি লস্ এন্জেলস্ এর সেঞ্চুরী সিটি (Century City) ঘুরে আসতে পারেন অথবা তারচে’ ভাল কানাডার এডমন্টন মল (Edmonton Mall) আরেক ডিজনিল্যান্ড ।

এডমন্টন মল । এক বিস্ময় ! একটা শপিং মল ১১৫ টি ফুটবল মাঠের সমান, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীন বিনোদন পার্ক্, ওয়েভ পুল, ক্ষুদ্রাকায় গলফ্ কোর্স্ । সেখানে আরও আছে সম্পূর্ন্ সচল সামরিক বহর, ক্রিস্টোফার কলম্বাসের জাহাজের অবিকল প্রতিরূপ, সান্তা মারিয়া এবং এক হাজার আলাদা স্টোর !

আপনি শুনলে আরও বিস্মিত হবেন ! আমেরিকার ব্লুমিংটন, মিনেসোটার মল আরও বড় ! এরপর কি ? রোড আইল্যান্ড (Rhode Island) প্রদেশের উপর একটা ছাদ তৈরী করবেন ? বেচাকেনাকে শক্তিশালী করার জন্য সেটা কেমন হবে ?

কিন্তু; আজকের দিনে শপিং মলকে টিকিয়ে রাখার জন্য এরকম সব কিছুই করতে হচ্ছে । দূর্ভাগ্যজনক – এডমন্টন মল এখন অসংখ্য বন্ধ দোকান এবং শূন্য পার্কিং এরিয়া নিয়ে ব্যবসা করছে ।

ডুবন্ত জাহাজ নিয়ে যুদ্ধে অংশ নেয়া সত্যিই কঠিন ।

ফ্রাঞ্চাইজিং (Franchising)

বেচাকেনার ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত আমেরিকার সবচেয়ে বিস্ময়কর উদ্ভাবনের মধ্যে ফ্রাঞ্চাইজিং উল্লেখযোগ্য ।

আপনি হয়তবা জানেন, ৫০ বছর পূর্বে ফ্রাঞ্চাইজিং ছিল এক বৈপ্লবিক নতুন প্রযুক্তি – পন্য, খাদ্যদ্রব্য এবং সেবা ভোক্তার নিকট পৌছানোর এক নতুন এবং উন্নত পদ্ধতি ।

বন্ধু, মানুষ কি এই পদ্ধতিকে প্রত্যাখ্যান করেছিল ? হ্যাঁ, প্রবল বাঁধা-বিপত্তির পাহাড় অতিক্রম করতে হয়েছে ।

সকল সংবাদপত্র, ম্যাগাজিনগুলো তখন বড়-মোটা হরফে প্রতিদিন নেতিবাচক প্রতিবেদন তৈরীতে ব্যস্ত ছিল – কতনা খারাপ ছিল ফ্রাঞ্চাইজিং । কিছু ফ্রাঞ্চাইজিং কোম্পানীর কাছে সর্বস্ব খুঁইয়ে পথে বসেছে এমন অনেকের গল্প তখন প্রতিদিনের রটনা ছিল ।

অধিকন্তু; ফরচুন-৫০০’র মতো বিখ্যাত, ব্যাপক প্রসারমান প্রতিষ্ঠানও ফ্রাঞ্চা্ইজিং পদ্ধতির সাথে একাত্নতা ঘোষনা করল । বড় বড় কর্পোরেশন’র প্রধান নির্বাহী কর্ম্কর্তাগন বিজ্ঞাপন এবং ম্যাগাজিনের চটকদার গল্প – এমনকি নিজেদের ফ্রাঞ্চাইজিং –র জন্য খরচ করা অনর্থ্ক মনে করলেন । পরবর্তীতে, কংগ্রেসের নির্বাচনে ১১ ভোটের ব্যাবধানে ফ্রাঞ্চাইজিং সিস্টেম আইনগত বৈধতা লাভ করে । (ঘটনাটা কিছুটা পূর্বের ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের মতোই মনে হচ্ছে – তাই নয় কি ?)

আজ – কোন এক সময়ের অনির্ভ্রযোগ্য, কুখ্যাত এবং নিকৃষ্ট ফ্রাঞ্চাইজিং উত্তর আমেরিকার মোট বেচাকেনার ৩৩ শতাংশের বেশী দখল করেছে । প্রায় এক হাজার ভিন্ন প্রকৃতির ফ্রাঞ্চাইজিং পদ্ধতির মাধ্যমে প্রতি বছর ট্রিলিয়ন ডলারের পন্য বিক্রি হচ্ছে – এবং এই সূচক ক্রমশ উপরের দিকেই ধাবমান !

ফ্রাঞ্চাইজিং নিছক একটি নতুন প্রযুক্তি । পরিষ্কারভাবে বলতে গেলে – একটি বৈপ্লবিক, অত্যন্ত শক্তিশালী এবং অনেক অনেক বেশী সফল প্রযুক্তি – পন্য ও সেবা বিক্রয় এবং বিপননের একটি নতুন ও উন্নত এবং পূর্বের থেকে ভিন্নতর ধারনা ।

বিক্রয় ও বিপননের আরও নবতর এক প্রযুক্তি

Free Enterprise System – এর বিবর্তনে পরবর্তীতে নতুন কোন পদক্ষেপ কি এসেছে ?

বর্তমানে খুচরা বাজার দাপটে চলা ফ্রাঞ্চাইজিং পদ্ধতিকে কয়েক ধাপ পিছনে ফেলে পন্য বিক্রয় ও বিপননের দিগন্তে নতুন কোন প্রযুক্তির উদ্ভব কি হয়েছে ?

অবশ্যই ।

নেটওয়ার্ক্ মার্কেটিং ।

যথারীতি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, বিশাল মূল্যহ্রাস স্টোর, শপিং সেন্টার, মল এবং ফ্রাঞ্চাইজিং –এর চেয়েও নেটওয়ার্ক্ মার্কেটিং অনেক বেশী বাধাঁগ্রস্থ হয়েছে, হচ্ছে । এই পদ্ধতিকে ভুল বোঝা হচ্ছে । একটি মহল এর বিরূদ্ধে সমালোচনা করছে, বিদ্রূপ করছে, আইনী চক্রান্ত করছে !

ঠিক যেমন হয়েছিল ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের বিরূদ্ধে…., যেমন হয়েছিল ফ্রাঞ্চা্ইজিং এর বিরূদ্ধে….. ।

কি ? হেসে ফেললেন !

নতুন দিনের প্রবর্ত্ক

উত্তর আমেরিকাতে ডাইরেক্ট সেলিং এর ইতিহাস অনেক ব্যাপক এবং সমৃদ্ধ । সেই ষোঢ়শ শতাব্দীতে ইয়াংকী ফেরীওয়ালারা (Yankee Peddler) শহরতলীতে, গ্রাম থেকে গ্রামে অতীব প্রয়োজনীয় গৃহস্থালী পন্যসমূহ, যেমনঃ বিভিন্ন তৈযসপত্র, মোমবাতি প্রভৃতি ক্যানভাস করে বেড়াত ।

তারপর…. ১৮০০ শতকের শেষ দিকে Sears & Roebucks – এর প্রতিষ্ঠাতা রিচার্ড্ সিয়ার্স্ (Richard Sears) প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে নেটওয়ার্ক্ মার্কেটিং এর প্রবর্ত্ন করেন । তখন পয়েন্টের বিপরীতে তালিকাভুক্ত ক্রেতাগনদের নির্ধারিত আত্নীয়-বন্ধুদের জন্য বেচাকেনা বা কমিশন বন্টন পদ্ধতির প্রচলন হয় ।

ঊনবিংশ শতাব্দীর সূচনালগ্নে সি জে ওয়াকার (C J Walker) নামে এক আফ্রো-আমেরিকান ভদ্র মহিলা তার পন্যসমূহ (চুল ও ত্বক চর্চাকারী) বিক্রির জন্য উচ্চাকাঙ্খী কিন্তু বেকার কৃষ্ণাঙ্গ মহিলাদের কমিশনের ভিত্তিতে নিয়োগদানের মাধ্যমে আধুনিক নেটওয়ার্কিং –এর সুযোগ উন্মোচন করেন । এই অশিক্ষিত কৃতদাসকন্যা, ওয়াকার বুঝতে পারেন সফলতার জন্য ব্যাক্তিক উন্নয়ন অত্যাবশ্যকীয় । তার বিক্রয়কর্মীদের সফলতার কলাকৌশল শেখানোর জন্য তিনি বিভিন্ন শহরে প্রশিক্ষন কেন্দ্র স্থাপন করেন । ১৯১৭ সালে তার দেহত্যাগের পূর্বে, ওয়াকার’র প্রতিষ্ঠানে শুধু উত্তর আমেরিকাতে ২০ হাজার বিক্রয় প্রতিনিধি নিযুক্ত হয় ।

প্রথম আমেরিকান স্ব-কৃত (self-made) নারী মিলিয়নিয়র হিসেবে ওয়াকার’র নাম গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড্স –এ উজ্জ্বল হয়ে আছে ।

প্রচলিত রীতির বাইরে নতুন ধারা প্রবর্তনের মাধ্যমে সিয়ার্স্ এবং ওয়াকার প্রাত্যহিক ভোক্তাদের অর্থোপার্জনে উৎসাহিত করেছেন । ফলশ্রুতিতে তাদের এবং তাদের আত্নীয়-বন্ধুদের জীবন যাত্রায় এক নতুন মাত্রা যোগ হয়ে নেটওয়ার্ক্ মার্কেটিং –এর জন্য মজবুত মঞ্চ রচনা হয়েছে ।

এজন্য আমি অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের জন্য নেটওয়ার্ক্ মার্কেটিং-কে এই সহস্রাব্দের সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম বিবেচনা করি । নতুন নতুন প্রযুক্তিকে আত্নীকরনের মাধ্যমে পন্য বিপননের এই পদ্ধতি প্রতিনিয়ত নিজেকে নতুনরূপে আবিষ্কার করছে । এক শিল্প পর্যবেক্ষক তো বলেই ফেলেছেন – “ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল, আপনাকে সানগ্লাস পরতে হবে !”

আমি এখন দৃঢ় বিশ্বাসী ।

আমরা ইতিহাসকে বারংবার ফিরে আসতে লক্ষ্য করলাম ।

আমি বিশ্বাস করি, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ও ফ্রাঞ্চাইজিং –র বিস্ময়কর সাফল্যকেও নেটওয়ার্ক্ মার্কেটিং অতিক্রম করবে । কেননা নেটওয়ার্ক্ মার্কেটিং উত্তর আমেরিকা এমনকি তাবৎ দুনিয়ার বেচাকেনার চেহারাতে বৈপ্লবিক পরিবর্ত্ন আনবে ।

কেন ? একটু চোখ মেলে চারপাশ দেখে নিন ।

এটা ইতিমধ্যে ঘটতে শুরু করেছে ।


মূলঃ- বার্ক্ হেজেস্


জুলাই, ২০১১, এমএলএম বার্তা