নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসেবে নিম্নে উল্লেখিত ৮ টি ধাপ অনুসরন করা প্রয়োজনঃ
১। বেসিক প্রশিক্ষন গ্রহন করা।
২। সম্ভাব্য ক্রেতার তালিকা তৈরি এবং বাছাই করা।
৩। স্বপ্ন এবং লক্ষ্য নির্ধারণ করা।
৪। সম্ভাব্য ক্রেতার সাথে যোগাযোগ বা আমন্ত্রন করা।
৫। ব্যবসায়ীক পরিকল্পনা উপস্থাপন করা।
৬। ক্লোজিং দেয়া।
৭। ফলোআপ করা।
৮। সাইন আপ করানো বা জয়েন করানো।
ধাপসমূহের ব্যাখ্যাঃ
১। বেসিক প্রশিক্ষন গ্রহন করা।
যে কোন একটি কাজ শুরু করার পূর্বে অবশ্যই উক্ত বিষয়ে ভাল করে জেনে শুনে শুরু করা উচিত। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসার ধারনা বাংলাদেশে তুলনামূলক ভাবে নতুন বিধায় এই ব্যবসা শুরু করার আগে এ ব্যবসাটি সম্পর্কে খুব ভাল করে জেনে নেয়া প্রয়োজন। কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা অবশ্যই জেনে শুরু করতে হয তার একটি তালিকা নিম্নে উপস্থাপন করা হলঃ
- এই ব্যবসাটি কি ভাবে শুরু করতে হয়?
- কোন কোন প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ শুরু করলে দ্রুত সফলতা অর্জন করা সম্ভব?
- কোন প্রোডাক্টের কাজ, ফলাফল এবং গুনাবলী কি?
- কোন প্রোডাক্ট এর দাম কত?
- প্রোডাক্ট কোন জায়গা থেকে এবং কিভাবে সংগ্রহ করতে হয়?
- প্রোডাক্ট বিক্রির বিপরীতে কমিশন কিভাবে পাওয়া যায় এবং কোথা থেকে টাকা উত্তলন করতে হয়?
- কোন প্রোডাক্ট ডেলিভারী করার পর কোন সমস্যা থাকলে কি ভাবে এবং কোথা থেকে ওয়ারেন্টি সার্ভিস গ্রহন করতে হয়?
উপরিউক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর জানার জন্য আমরা তিনটি প্রক্রিয়ায় প্রশিক্ষন গ্রহন করতে পারিঃ
১। বই পড়ার মাধ্যমে
- মার্কেটিং প্ল্যান বই
- বেসিকস্ অফ নেটওয়ার্ক মার্কেটিং
- এম.এল.এম ইনফরমেশন
- তুমিও জিতবে
- উচ্চাকাঙ্খার ম্যাজিক
বিঃদ্রঃ- শুরুর দিকে প্রতিদিন নিয়ম করে অন্ততঃ ১ ঘন্টা উপরে উল্রেখিত বই সমূহ স্টাডি করা উত্তম।
২। বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষনে অংশগ্রহন করার মাধ্যমে
- বেসিক ট্রেনিং ১,২,৩
- বিজনেজ ম্যানেজমেন্ট ট্রেনিং
- ইনভাইট ট্রেনিং
- ক্লোজিং ট্রেনিং
- ফলোআপ ট্রেনিং
- ভিশন ক্লিয়ার ট্রেনিং
- মেরাথন ট্রেনিং
- মোটিভেশনাল বা সেলিব্রেশন প্রোগ্রাম
৩। যারা ইতিমধ্যে কাজটি শুরু করেছেন অথবা সফল হয়েছেন তাদের সাথে আলোচনা করার মাধ্যমে।
যারা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসার সাথে আগে থেকে জড়িত এবং ভাল কাজ করছেন তাদের সাথে আলোচনা করলে আপনার অভিজ্ঞতার ঝুলিকে বাড়িয়ে নিতে পারেন। একজন নতুন নেটওয়ার্কার হিসেবে যখন কোন সফল ব্যক্তির সাথে আলোচনা করতে বসবেন তখন নিম্নে উল্লেখিত প্রশ্ন সমূহ করলে ভাল ফলাফল তৈরি করতে পারবেন।
প্রথমে নিজের পরিচয় দিয়ে সফল ব্যক্তির সাথে হেন্ডশেক করুন এবং পরিচিত হোন এবং কুশল বিনিময় করুন। তারপর অনুমতি নিয়ে তার সামনে বসে একে একে প্রশ্ন করুনঃ
- আপনি কতদিন যাবৎ এই ব্যবসাটি করছেন?
- এই ব্যবসার পাশাপাশি আপনি কিছু করেন কি?
- পৃথিবীতে অনেক ধরনের ব্যবসা করার সুযোগ আছে তা না করে আপনি নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসা কেন করছেন?
- কাজ করতে যেয়ে আপনার লাইফের ইনভাইট বা ফলোআপ নিয়ে একটি ব্যর্থতার ঘটনা বলুন প্লিজ!
- কাজ করতে যেয়ে আপনার লাইফের ইনভাইট বা ফলোআপ নিয়েএ কটি সফলতার কথা বলুন প্লিজ!
- আমার মত একজন নতুন নেটওয়ার্কার এর প্রতি আপনার পরামর্শ কি?
বিঃদ্রঃ আলোচনার সময় অবশ্যই উক্ত সফল ব্যক্তির নাম এবং মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে ডায়েরিতে সংরক্ষন করে রাখবেন। আরো বিস্তারীত জানার জন্য অল্প সময়ে প্রশিক্ষন আত্মস্থ করা এবং মনে রাখার কৌশসমূহঃ প্রশিক্ষন টিপস্ টি পড়ুন।
২। সম্ভাব্য ক্রেতার তালিকা তৈরি এবং বাছাই করা।
সম্ভাব্য ক্রেতার তালিকা তৈরির প্রয়োজনীয়তা খুব বেশি। অনেক নতুন নেটওয়ার্কাররা কাগজে কলমে তালিকা তৈরি করার প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন। আবার অনেকে তালিকা তৈরি করতে যেয়ে আমার পরিচিত উমুক ব্যক্তি ব্যবসাটা করতে পারবে না বা তুমুক ব্যক্তি বোকা সোকা বা তার এ জাতীয় ব্যবসায় আগ্রহ থাকবে না ইত্যাদি পূর্বধারনা করে থাকেন। এই ধারনা গুলো একে বারেই ভুল এবং ব্যবসায়ীক সফলতার জন্য ক্ষতিকর।
তালিকা তৈরির নিয়মাবলীঃ
- আপনার পরিচিত সকল ব্যক্তির নাম যাদের বয়স ১৮ বছরের উপরে সকলকেই তালিকার আওতায় নিয়ে আসুন।
- তালিকা বড় করার জন্য FRIENDS সূত্রটি কাজে লাগাতে পারেন।
F= Friends (কাছের বা দূরের বন্ধু)
R= Relative (আত্মিয় স্বজন)
I= Insurance worker (ইনসুরেন্স বা এজাতীয় কাজের সাথে জড়িত ব্যক্তি)
E= Employee/Employeer (চাকুরীজীবি বা চাকুরী দাতা)
N= Neighbours (প্রতিবেশী)
D= Doctors (ডাক্তার বা এজাতীয় পেশাজীবি)
S=Strangers (আগন্তুক বা অপরিচিত ব্যক্তি)
উপরি উক্ত সূত্রটি অনুসরন করে প্রত্যেকটি সেক্টরে কিছু কিছু করে নাম লিখতে থাকলে দেখবেন আপনার সম্ভাব্য ক্রেতাদের নামের তালিকা অনেক বড় হতে থাকবে।
৩। স্বপ্ন এবং লক্ষ্য নির্ধারণ করা।
পৃথিবির প্রতিটি মানুষের বেচে থাকা এবং ভাল থাকার পিছনে স্বপ্নের একটি বিড়াট ভূমিকা আছে। এখানে স্বপ্ন বলতে বুঝাতে চাচ্ছি আপনি কেন কাজ করবেন এই প্রশ্নের উত্তর কে। ধরুন আপনি হয়তো কাজ করতে চান সন্মান অর্জন করার জন্য আবার অন্য কেউ হয়তো টাকা আয় করার জন্য। আবার কেউ হয়ত কাজ করেন পরিবারের ভালবাসার মানুষগুলোকে স্বচ্ছল ভাবে লালন পালন করার জন্য অথবা নিজের পছন্দের গাড়ি বা বাড়িটি নিজের টাকার তৈরি করার জন্য। মজার ব্যপার হচ্ছে একজন নেটওয়ার্কার যে কারনেই কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ শুরু করুক না কেন, নেটওয়ার্ক মার্কেটিং আপনাকে জীবনের প্রত্যেকটি চাওয়া পাওয়া পূরণ করার জন্য যথেষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে পারে। পৃথিবীতে হাতে গোনা দুই একটি প্রফেশন আছে যেখানে একই সাথে জীবনের সবগুলো চাওয়া কে পাওয়াতে পরিণত করা যায় যার মধ্যে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসা অন্যতম।
আর আপনি যদি কোন স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে চান তবে অবশ্য তার জন্য একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করে কাজ করতে হবে। অর্থাৎ হয়তোবা আপনার স্বপ্ন আপনি এখান থেকে সফল হয়ে আপনার নিজের কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে বাবা মাকে নিয়ে হজ্জ্ব করতে চান। এখন আপনি কতদিন সময়ের মধ্যে স্বপ্নটি বাস্তবায়ন করতে চান তার একটি সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা জরুরী।
স্বপ্ন এবং লক্ষ্য দুটি কে যদি আপনি একটি ফ্রেমের মধ্যে নিয়ে আসতে পারেন তবে আপনার সফলতা অনেক দ্রুত আপনার হাতে ধরা দিবে। স্বপ্ন এবং লক্ষ্য নির্ধারণ করার জন্য তিনটি ভিন্ন সময় কে হিসেব করে করলে ভাল ফলাফল আশা করা যায়। যেমনঃ
সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে অর্জন যোগ্য স্বপ্নঃ (৬ মাস থেকে ৯ মাস মেয়াদী)
মধ্যম মেয়াদী সময়ের মধ্যে অর্জন যোগ্য স্বপ্নঃ (১২ মাস থেকে ২৪ মাস মেয়াদী)
দীর্ঘ মেয়াদী সময়ের মধ্যে অর্জন যোগ্য স্বপ্নঃ (৩ বছর থেকে ৫ বছর মেয়াদী)
৪। সম্ভাব্য ক্রেতার সাথে যোগাযোগ বা আমন্ত্রন করা।
যে কোন ব্যবসা প্রসারিত করার জন্য প্রচারের কোন বিকল্প নেই। ট্রেডিশনাল ব্যবসার প্রচার করার জন্য বিপুল অংকের টাকা প্রচারে অর্থাৎ বিজ্ঞাপন বাবদ খরচ করা হয়। এক্ষেত্রে প্রচার মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করা হয় পত্রিকা, রেডিও, টেলিভিশন, কোন একটি প্রোগ্রাম এর স্পন্সর হওয়া ইত্যাদি। আর নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রচার অর্থাৎ বিজ্ঞাপন দেয়ার কাজটি করতে হয় একজন নেটওয়ার্কারকে নিজে নিজে। তিনি তার পরিচিত সম্ভাব্য ক্রেতাদের সাথে মৌখিক ভাবে প্রোডাক্ট এবং কাজের সুযোগ সম্পর্কে প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। আর এ প্রক্রিয়াকেই বলা হচ্ছে ইনভাইট বা আমন্ত্রন করা।
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসায় সফলতা অর্জন করার জন্য সম্ভাব্য ক্রেতার সাথে যোগাযোগ বা আমন্ত্রন করা অন্যতম প্রধান গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয়। আর আমন্ত্রন করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসার পন্য এবং ব্যবসা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রস্তাবনা নিয়ো আলোচনা করার জন্য এপয়েন্টমেন্ট সেট করা। বিস্তারিত জানার জন্য ভিজিট করুনঃ বর্তমান সময়ে ইনভাইট
৫। ব্যবসায়ীক পরিকল্পনা উপস্থাপন করা।
আপনি যে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কোম্পানীতে কাজ শুরু করেছেন সে কোম্পানীর অবশ্যই একটি মার্কেটিং প্ল্যান আছে। মার্কেটিং প্ল্যান বলতে বুঝাতে চাচ্ছি ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় করনীয় সম্পর্কে জানানো, প্রোডাক্ট সম্পর্কে ধারনা এবং বিক্রি করার কৌশল, কমিশন বন্টন প্রক্রিয়া, বিভিন্ন ধাপে কাজের বিপরীতে প্রমোশন পাওয়ার বিষয় ইত্যাদি। আমন্ত্রিত অথিতির কাছ থেকে পাওয়া নির্ধারিত সময়ে সংক্ষিপ্ত আকারে উপরে উল্লেখিত বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করাকে ব্যবসায়ীক পরিকল্পণা উপস্থাপন করা বলা হয়। ব্যবসায়ীক পরিকল্পনা কিভাবে উপস্থাপন করতে হয় এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য আপনার কোম্পানীর মার্কেটিং প্ল্যান বইটি ভালকরে মনোযোগের সহিত অন্ততঃ ৫ বার পড়ুন। পাশাপাশি ক্লোজিং ট্রেনিং এ অংশগ্রহন করুন।
৬। ক্লোজিং দেয়া।
ব্যবসায়ীক পরিকল্পনা শেয়ার করার পর আপনার অতিথির মনে বেশকিছু প্রশ্ন জাগতে পারে। এমতাবস্থায়, আপনার অতিথিকে কাছি কাছি বসিয়ে আন্তরিকতার সাথে বলতে পারেন যে, আমার প্রাথমিক আলোচনা শেষ, এখন আপনার কোন প্রশ্ন আছে কি না? থাকলে আমার সাথে নির্ধিধায় শেয়ার করতে পারেন। এবার আপনার অতিথি যত গুলো প্রশ্ন করবেন তার প্রত্যেকটি একটি একটি করে কাগজে লিখে ফেলুন। প্রশ্ন করা শেষ হলে একটি একটি করে সঠিক তথ্য নির্ভর উত্তর প্রদান করুন। এই প্রক্রিয়াকেই বলা হচ্ছে ক্লোজিং দেয়া।
৭। ফলোআপ করা।
ক্লোজিং দেয়ার পর সাধারনত আপনার অতিথি আপনার সাথে বিদায় কুশল বিনিময় করে চলে যাবে। বাসায় যাবার পর আপনার প্রস্তাবিত বিষয় গুলো নিয়ে তিনি একান্ত ভাবে আরও চিন্তা করবেন। পাশা পাশি আপনার অতিথির বন্ধু-বান্ধব বা আত্মিয়-স্বজন দের সাথে বিষয়টি নিয়ে শেয়ার করতে পারে। যেহেতু আপনার অতিথি বিষয়টি নিয়ে একেবারেই নতুন এবং কম জানেন তাই তার পরিচিত ব্যক্তিদের কিছু প্রশ্নের উত্তর তিনি দিতে পারবেন না এটাই স্বাভাবিক। যার ফলশ্রুতিতে তারা আপনার অতিথিকে বিষয়টি নিয়ে অপরিপক্ক মন্তব্য প্রদান করার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এমতাবস্থতায় আপনার অতিথির মনে নতুন করে আরো কিছু প্রশ্নের উদ্রেগ হতে পারে। ঠিক এমনি সময়ে আপনার অতিথির সাথে পুনরায় যোগাযোগ করে তার নতুন প্রশ্ন গুলোর উত্তর সন্তুষ্টজনক উপায়ে উপস্থাপন করার প্রয়োজন হতে পারে। আর এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আপনার অতিথি যখন সন্তুষ্ট হবে তখন তিনি জয়েন করার সিদ্ধান্ত নিবেন এবং জয়েন করবেন। আলোচিত উপরের এই প্রক্রিয়াটি নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর ভাষায় ফলোআপ করা হিসেবে পরিচিত। বিস্তারিত জানার জন্য ভিজিট করুনঃবর্তমান সময়ে ফলোআপ
৮। সাইন আপ করানো বা জয়েন করানো।
কোন একজন অতিথি আলোচিত সাতটি ধাপ এর মধ্যে আমন্ত্রন থেকে শুরু করে ফলোআপ ধাপ এর মধ্য দিয়ে পার হবার পর আপনার অতিথি যখন সন্তুষ্ট হবে তখনই তিনি একটি পন্য ক্রয় করে কাজ শুরু করার সিদ্ধন্ত নিবেন। এমতাবস্থায় আপনার অতিথিকে পন্য ক্রয় করার জন্য পন্য অর্ডার পত্র পূরণ করা এবং কাজ শুরু করার জন্য চুক্তি পত্র সম্পাদন করতে হতে পারে। এই প্রক্রিয়াকে সাইন আপ করানো বা জয়েন করানো বলা হয়। এক্ষেত্রে আপনার অতিথিকে দিয়ে প্রয়োজনীয় সমস্ত কাগজ পত্র পূরণ করাবেন। তাতে করে তিনি প্রথম দিনেই শিখে ফেলতে পারবেন কি ভাবে উক্ত ফরম সমূহ পূরণ করতে হয়।
বর্তমান সময়ে ইনভাইট!
যোগাযোগ বা আমন্ত্রনঃ
যোগাযোগ বা আমন্ত্রনঃ যে কোন ব্যবসা প্রসারিত করার জন্য প্রচারের কোন বিকল্প নেই। ট্রেডিশনাল ব্যবসার প্রচার করার জন্য বিপুল অংকের টাকা প্রচারে অর্থাৎ বিজ্ঞাপন বাবদ খরচ করা হয়। এক্ষেত্রে প্রচার মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করা হয় পত্রিকা, রেডিও, টেলিভিশন, কোন একটি প্রোগ্রাম এর স্পন্সর হওয়া ইত্যাদি। আর নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রচার অর্থাৎ বিজ্ঞাপন দেয়ার কাজটি করতে হয় একজন নেটওয়ার্কারকে নিজে নিজে। তিনি তার পরিচিত সম্ভাব্য ক্রেতাদের সাথে মৌখিক ভাবে প্রোডাক্ট এবং কাজের সুযোগ সম্পর্কে প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। আর এ প্রক্রিয়াকেই বলা হচ্ছে ইনভাইট বা আমন্ত্রন করা।
আমন্ত্রন করার প্রয়োজনীয়তাঃ নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসায় সফলতা অর্জন করার জন্য সম্ভাব্য ক্রেতার সাথে যোগাযোগ বা আমন্ত্রন করা অন্যতম প্রধান গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয়। ধরুন আপনার কোম্পানী পৃথিবী শ্রেষ্ঠ, আপনার কোম্পানীর প্রোডাক্ট বেস্ট প্রোডাক্ট কিন্তু এ বিষয়গুলো আপনি যদি কাউকে না বলেন তাহলে কেউ জানবে না। তাই আপনার সকল শ্রেষ্ঠত্ব ব্যর্থতায় পরিণত হবে। তাই অবশ্য আপনার ব্যবসায়ীক প্রস্তাবনা এবং প্রোডাক্ট সম্পর্কে অন্য দেরকে জানাতে হবে। আর জানানোর জন্য পূর্বশর্ত হচ্ছে যোগাযোগ বা আমন্ত্রন করা।
আমন্ত্রন করার উদ্দেশ্যঃ আর আমন্ত্রন করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসার পন্য এবং ব্যবসা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রস্তাবনা নিয়ো আলোচনা করার জন্য এপয়েন্টমেন্ট সেট করা।
আমন্ত্র করার পূর্বে মূলত দুই ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করা দরকারঃ
১। ইন্টারনাল বা অভ্যন্তরীন প্রস্তুতি
২। এক্সটারনাল বা বাহ্যিক প্রস্তুতি
১। ইন্টারনাল বা অভ্যন্তরীন প্রস্তুতি
- আপনি যে কোম্পানীতে কাজ করছেন সে কোম্পানী সম্পর্কে ভাল করে জানা থাকতে হবে।
- আপনার কোম্পানী উপর পূর্ণ বিশ্বাস থাকতে হবে।
- আপনি যে কাজটি করছেন তা নিজের এবং অন্যের জন্য উপকারী কি না পরিস্কার ধারনা থাকতে হবে।
- আপনি যাকে আমন্ত্র জানাবেন- তার ক্ষতি করতে যাচ্ছেন না কি উপকার করতে যাচ্ছেন এ বিষয়ে পরিস্কার ধারনা থাকতে হবে।
- আপনি যে সিস্টেমে (নেটওয়ার্ক মার্কেটিং) কাজ করছেন সে সিস্টেম টি যে ভাল তার উপর পূর্ণ আস্থা থাকতে হবে।
- কাউকে আমন্ত্র করার পূর্বে তার প্রয়োজন বা আগ্রহ কিসে তা ভাল করে জানা থাকা দরকার। বেশির ভাগ নতুন নেটওয়ার্কাররা তারা নিজে যেটা ভাল মনে করেন বা যাতে কমফোর্ট ফিল করেন অথবা যে প্রোডাক্ট পছন্দ করেন তা দিয়ে আমন্ত্র করতে চান। অথচ ভাল ফলাফল পেতে চাইলে আপনার অতিথির পছন্দ বা চাওয়াকে গুরুত্ব দিলে পজিটিভ ফলাফল পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক গুন বেরে যায়।

উদাহরনঃ একজন রুগী > কিছু ঔষধ > সুস্থ মানুষ
উপরের উদাহরন টির বাম দিক থেকে ডান দিকে পড়ুন দেখবেন ঠিকই আছে। কিন্তু যদি আপনি ডান দিক থেকে বাম দিকে পড়েন দেখতে পাবেনে একজন সুস্থ ব্যক্তিকে জোর করে ঔষধ খাওয়ানোর ফলে তিনি অসুস্থ হয়ে গেছে। অর্থাৎ মানুষের যা প্রয়োজন তা দিতে পারলে সে স্বানন্দে গ্রহন করবে। কিন্তু তা না করে যদি আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী কোন প্রোডাক্ট দিতে চান তাহলে হতে পারে এটা আপনার অতিথির পছন্দ হলো না। আর তাই তিনি আপনার কাছ থেকে প্রোডাক্ট ক্রয় করলেন না। তাই কোন ব্যক্তিকে ইনভাইট করা বা তার কাছে প্রোডাক্ট সেল করার পূর্বে জানার চেষ্টা করুন তার কিসে আগ্রহ বা পছন্দ।
বিঃদ্রঃ- মানুষের চাওয়া বা পছন্দ নির্ণয় করার জন্য FORM সূত্র ব্যবহার করলে ভাল ফলাফল পাওয়া যেতে পারে। ট্রেনিং এর পরবর্তী অংশে এ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
২। এক্সটারনাল বা বাহ্যিক প্রস্তুতি
মার্কেটিং ব্যবসায় বাহ্যিক প্রস্তুতি অত্যন্ত গুরুত্ব পূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়। কেননা একটি বিখ্যাত প্রবাদ আছে মানুষ আগে দর্শন দারী তার পর গুন বিচারি। অর্থাৎ আপনার কোম্পানী এবং তার প্রোডাক্ট যত ভালই হোক না কেন, মানুষ প্রথমে আপনাকে দেখে কোম্পানী এবং প্রোডাক্ট সম্পর্কে প্রাথমিক ধারনা পোষণ করবে।
- আপনার ড্রেসকোড হতে হবে প্রফেশনাল। মেয়েদের ক্ষেত্রে শালীন যে কোন পোশাক এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে টাই পড়া উত্তম।
- ক্লিন সেভড, চুল সুন্দর করে কাটা, এবং পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকা দরকার।
- অবশ্যই আপনার মুখ যেন দু্র্গন্ধ মুক্ত হয়। যাদের দাতে কোন সমস্যার কারনে দুর্গন্ধ এড়ানো যাচ্ছে না তারা চুইংগাম বা চকোলেট খেয়ে নিতে পারেন।
- আপনার সাথে একটি সুদর্শন ব্যাগ যার মধ্যে কাগজ, কলম, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস থাকা ভাল। এটা আপনার প্রফেশনালিজম প্র্রকাশ করে। যার ফলে আপনার প্রস্তাবনা বা আমন্ত্র গুরুত্ব পায়।
আমন্ত্রন করার সময় যা যা বলা যাবে নাঃ
- প্রোডাক্ট ক্রয় করে কাজ শুরু করতে হবে বলা যাবে না (প্রোডাক্ট ক্রয় করতে হবে শুনলে বাকি আলোচনা শুনার আগ্রহ কমে যেতে পারে)।
- স্টুডেন্ড দেরকে ব্যবসা করার কথা বলা যাবে না। (ব্যবসার কথা শুনলে অনেক সময় দিতে হবে ভেবে – ভয় পেতে পারে, যদিও এ ব্যবসাটি খুব অল্প সময় দিয়েও করা যায়)।
- মহিলা গ্রহিনী দেরকে ব্যবসার করার কথা বলা যাবে না। ( আমি মহিলা মানুষ ব্যবসার কি বুঝি, কি ভাবে করব, পরিবার দেখবে কে ইত্যাদি চিন্তা করে প্রথমেই ভয় পেয়ে যেতে পারে)।
- কাজ শুরু করার কয়েক দিন পর থেকেই অনেক টাকা আসা শুরু করবে এমন কথা বলে লোভ দেখানো যাবে না।
আমন্ত্রন করার কৌশল সমূহঃ
১। FORM সূত্র প্রয়োগ করার মাধ্যমে ইনভাইট করা
F = Family, O = Occupation, R = Recreation, M = Money/Mission
আপনার সম্ভাব্য ক্রেতা তিনি যে পেশাতেই থাকুন না কেন তার সাথে দেখা হবার পরপরই ইনভাইট না করে কিছু সময় ধরে উপরি উক্ত সূত্র অনুযায়ী আলোচনা করে ইনভাইট করলে ভাল ফলাফল পাবেন।
উদাহরনঃ ধরুন আপনার অতিথি আপনার পরিচিত দুরসম্পর্কের এক চাচা যার নাম জনাব জামাল উদ্দিন। তিনি পেশায় একজন চাকুরীজীবি। তার পরিবারে তিনি নিজে, তার স্ত্রী, এক ছেলে এবং এক মেয়ে এবং বাবা মা সহকারে মোট ছয় জন সদস্য আছে। চলুন দেখি আপনার চাচাকে কিভাবে উপরের সূত্র প্রয়োগ করে একটি সফল আমন্ত্রন করা যায়।
F = Family
আপনিঃ চাচা আস্সালামু আলাইকুম কেমন আছেন?
চাচাঃ ওয়া আলাইকুম আস্সালাম ভাল, তুমি কেমন আছ?
আপনিঃ ভাল। পরিবারের সবাই ভাল আছে তো?
চাচাঃ আর বলিস না, সবাই ভাল। শুধু তোর দাদীরডায়বেটিস টা একটু বেড়ে গেছে, খুব টেনশনে আছি।
বিঃদ্রঃ একটি ক্লু পাওয়া গেল ”ডায়বেটিস” নিশ্চই বুঝতে পারছেন ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রকারী কোন প্রোডাক্ট এই পরিবারের জন্য দরকার।
O = Occupation
আপনিঃ চাচা আপনার চাকুরীর কি খবর? আমার তো পড়ালেখা শেষ একটি চাকুরী খুজতেছি!
চাচাঃ আর বলিস না চাকুরী করে শান্তি নাই, বেতন অল্প তার মধ্যে নিত্য প্রয়োজনীয় সব কিছুর দাম তো অনেক বেশি। তার পরও মোটিামুটি ভাল।
বিঃদ্রঃ একটি ক্লু পাওয়া গেল ”বেতন অল্প” নিশ্চই বুঝতে পারছেন পার্টটাইম কাজের প্রতি আগ্রহ থাকতে পারে।
R = Recreation
আপনিঃ চাচা এত কাজ করে লাভ কি চাচি কে নিয়ে দার্জিলিং ঘুরে আসেন না কেন?
চাচাঃ আরে দার্জিলিং গেলে অফিস করবে কে?
আপনিঃ কেন? অফিস থেকে ছুটি নিয়ে যান।
চাচাঃ নারে চাইলেই অফিস থেকে ছুটি নেয়া যায় না? আর নিয়মের বাইরে ছুটি কাটাতে গেলে বেতন কাটা হবে এমনকি চাকুরীও চলে যেতে পারে!
বিঃদ্রঃ একটি ক্লু পাওয়া গেল ”চাইলেই ছুটি নেয়া যায় না”নিশ্চই বুঝতে পারছেন সময়ের স্বাধীনতার প্রতি আগ্রহ থাকতে পারে।
M = Money/Mission
উপরের আলোচনার ভিত্তিতে সম্ভাব্য ইনভাইট টিপস্
ইনভাইট-১
আপনিঃ চাচা আমার জানা মতে দাদীর ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য একটা ব্যয়ামের যন্ত্র আছে/ ঔষধ আছে ব্যবহার করে দেখতে পারেন। আমার বিশ্বাস ভাল কাজে দিবে।
চাচাঃ কি যন্ত্র/ঔষধ
আপনিঃ কালকে কখন বাসায় থাকবেন আমি একটা সেম্পল নিয়ে আসব। তখন বিস্তারিত কথা বলব।
চাচাঃ ঠিক আছে, কালকে সন্ধার পর আসিস।
ইনভাইট-২
আপনিঃ চাচা আমার জানা মতে আমার এক বন্ধুর বাবা এরকম চাকুরী করেন এবং পাশাপাশি একটা পার্টটাইম কাজ করেন। আপনি কি পার্টটাইম কাজ করবেন?
চাচাঃ কি কাজ? কখন সময় দিতে হবে?
আপনিঃ আমি ঠিক জানি না তবে কালকে জেনে আপনাকে জানাতে পারি। কালকে বাসায় থাকবেন কখন।
চাচাঃ ঠিক আছে, কালকে সন্ধার পর আসিস।
২। বর্তমান সময়ের উপযোগী ইনভাইট কৌশলঃ
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কোম্পানী Enloving International লিমিটেড কে মডেল হিসেবে নিয়ে আমরা ইনভাইট এর টিপস্ সমুহ ব্যখ্যা করছি। কিন্তু আপনি যে কোন্পানীতে কাজ করেন সে কোম্পানীর নাম বসিয়ে কাজ করতে পারবেন ইনশা-আল্লাহ্।
ধরুন এই সপ্তাহে আপনি অতিথির তালিকা থেকে ১০ জনকে ইনভাইট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সময় উপযোগী ইনভাইট টিপস্-১
কুশল বিনিময় করার পর-
আপনিঃ আচ্ছা আপনি কি Enloving International সম্পর্কে জানেন?
অতিথিঃ Enloving International ! হে জানি। একটা ভূয়া কোম্পানী………..
আপনিঃ Enloving International সম্পর্কে আর কি জানেন?
অতিথিঃ পত্রিকায় দেখলাম…… তোমাদের মালিকরা……….. এই কোম্পানী আর কোনদিনও মাথা তুলে ………
আপনিঃ আর কিছু?
অতিথিঃ না এতটুকুই জানি।
আপনিঃ আচ্ছা আপনি নিজেকে নিরপেক্ষ মনে করেন নাকিএক চোখা মনে করেন?
অতিথিঃ কেন অবশ্যই নিরপেক্ষ।
আপনিঃ নিরপেক্ষ বলতে কি বুঝায়? কোন একটি বিষয় সম্পর্কে এক পক্ষের কথা শুনে মন্তব্য করা নাকি উভয় পক্ষের কথা শুনে বিচার বুদ্ধি খাটিয়ে মন্তব্য করা?
অতিথিঃ অবশ্যই উভয় পক্ষের কথা শুনে মন্তব্য করা।
আপনিঃ আপনি পত্রিকা বা মিডিয়া থেকে জেনেছেন এটা হল এক পক্ষ কিন্তু আপনি কি Enloving এর কোন সফল ব্যক্তির সাথে বসে তার কাছ থেকে প্রকৃত সত্য সম্পর্কে জেনেছেন?
অতিথিঃ না।
আপনিঃ তাহলে একজন নিরপেক্ষ মানুষ হিসাবে Enloving International a যারা কাজ করেন এবং এখানে যারা সফল তাদের কাছ থেকে বিষয়টি নিয়ে জানা দরকার আছে বলে মনে করেন কি?
অতিথিঃ হ্যা।
আপনিঃ তাহলে আগামী শুক্রবার ছুটির দিন আছে। বিকাল ৩ টার সময় gulshan এর পাশে Enloving International একটি অফিস আছে সেখানে আপনাকে নিয়ে যাব। নামাজের পর রেডি থাকবেন, কারন লক্ষ মানুষ যে কাজটির সাথে জড়িত একজন সচেতন নিরপেক্ষ নাগরিক হিসেবে বিষয়টি সম্পর্কে জেনে রাখা খুবই জরুরী।
অতিথিঃ ঠিক আছে।
বিঃদ্রঃ এভাবে শুক্রবার বিকাল ৩ টার সময় আপনার অতিথিদেরকে অফিসে ইনভাইট করা যেতে পারে।
সময় উপযোগী ইনভাইট টিপস্-২
সময় উপযোগী ইনভাইট টিপস্-১ প্রয়োগ করার পরও যাদেরকে ইনভাইট করা গেল না, তাদের জন্য এটি প্রয়োগ করা যেতে পারে। পূর্ববর্তী আলোচনার পর থেকে শুরু-
অতিথিঃ শুক্রবার তো আমার একটা জরুরী কাজ আছে?
আপনিঃ আচ্ছা তাহলে কোন দিন এবং কখন যাবেন বলেন?
অতিথিঃ আমি সেখানে যেয়ে কি করব?
আপনিঃ আপনি তো জানেন যে, Enloving International সাথে লক্ষ মানুষ জড়িত তাদের প্রত্যেকের পরিবারের সদ্স্য নিয়ে হিসেব করলে কমপক্ষে কয়েক লক্ষাদিক মানুষ এর রুটি রুঝি Enloving International সাথে জড়িত। কিছু কিছু মিডিয়ার উদ্দেশ্য মূলক অপপ্রচারের কারনে দেশের সাধারন মানুষ Enloving International বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্ত হচ্ছে। তাই আমাদের অফিস থেকে আমরা সবাই মিলে সাধারন মানুষ দের মধ্যে সঠিক এবং প্রকৃত সত্য তথ্য পৌছে দেয়ার জন্য দায়িত্ব গ্রহন করেছি। যার ধারাবাহিকতায় এই সপ্তাহে অন্ততঃ ৫ জন ব্যক্তি যারা Enloving International সাথে জড়িত নয় তাদেরকে সচেতন করার দায়িত্ব পড়েছে আমার উপর। আর আমার ভাগের ৫ জনের মধ্যে আপনি একজন হোন এটা আমার দাবী।
অতিথিঃ তাহলে অফিসে যেতে হবে কেন? তুমি আমার সাথে কি বলতে চাও বল।
আপনিঃ না এখানে বলা যাবে না। আর ব্যবসায়ীক অফিসিয়াল কাজ অফিসে করাই ভাল। তাছাড়া অফিসে জয়েন করে কাজ করছে এমন অসংখ্য ব্যক্তি উপস্থিত থাকবে। তাদের সাথে সরাসরি কথা বলে তাদের অনুভূতি কি তা আপনাকে জানাতে চাই। কখন যাবেন বলেন?
অতিথিঃ যেতেই হবে?
আপনিঃ হ্যা।
অতিথিঃ ঠিক আছ যাও আগামী সোমবার বিকাল বেলা তোমার সাথে যাব।
আপনিঃ আচ্ছা, সোমাবার বিকাল ৩ টার দিকে রেডি থাকবেন আমি আপনাকে সাথে করে নিয়ে অফিসে যাব।
সময় উপযোগী ইনভাইট টিপস্-৩
সময় উপযোগী ইনভাইট টিপস্-১ এবং ২ প্রয়োগ করার পরেও যাদের কে সফল ইনভাইট করা যাবে না। তাদের ক্ষেত্রে এটি প্রয়োগ করে দেখতে পারেন। আশা করি অবশ্যই সফল হবেন। পূর্ববর্তী আলোচনার পর থেকে শুরু-অতিথিঃ না আগামী এক সপ্তাহ আমি খুব ব্যস্ত থাকব। তাই যেতে পারব না।
আপনিঃ ঠিক আছে যেহেতু আপনি এই সপ্তাহে ব্যস্ত তাহলে আগামী সপ্তাহে সময় দেন।
অতিথিঃ কথা দিতে পারব না। তবে দেখি সময় করে একদিন তোমাদের অফিসে যাব।
আপনিঃ ঠিক আছে অনেক ধন্যবাদ।
বিঃদ্রঃ স্পষ্টতই আপনার অতিথি ইনভাইট গ্রহন করতে চাচ্ছে না, কিন্তু আপনি কোন ভাবেই রাগ করবেন না। মনে রাখবেন একটি বিখ্যাত উক্তি আছে “রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন”। কিন্তু আপনি তো হারতে পারেন না। তাই নিম্নের প্রক্রিয়াটি ফলো করুন।
১৫দিন পর – আপনিঃ আরে কেমন আছেন? আপনার সাথে সেদিন কথা বলার পর থেকে বিগত ১৫ দিনে ২ টি প্রোডাক্ট সেল করে প্রায় ১৮০০ টাকা আয় করেছি। Enloving International কিন্তু এখনও বন্ধ হয়ে যায় নি। আমার জন্য দোয়া করবেন।
অতিথিঃ ঠিক আছে। কাজ করে যাও।
১৫ দিন পর – আপনিঃ আরে কেমন আছেন? আপনার সাথে সেদিন কথা বলার পর থেকে বিগত ১৫ দিনে ৬ টি প্রোডাক্ট সেল করে প্রায় ৪৮০০ টাকা আয় করেছি। আসলে আপনার সাথে কথা বলার পর থেকে আমার ব্যবসাটা ভালই হচ্ছে। তবে আপনাকে সাথে নিয়ে কাজটি করতে পারলে আরও ভাল লাগত। দুই জনে মিলে আয় করলে আরও বেশি ভাল লাগত। যাহোক Enloving কিন্তু এখনও বন্ধ হয়ে যায় নি। আমার জন্য দোয়া করবেন।
অতিথিঃ ঠিক আছে। কাজ করে যাও।
২-৩ মাস পর – আপনিঃ ভাই ভাল খবর আছে। আমি তো সাইকেল ১ করে ফেলেছি। আগামী শুক্রবারে আমার সেলিব্রেশন হবে। প্লীজ ভাই আমার এই সুদিনে আপনাকে পাশে পেলে অনেক ভাল লাগবে। তাই আগামী শুক্রবারে আমার খুশির দিনটির খুশি আরও বাড়িয়ে দেয়ার জন্য দাওয়াত টা কবুল করেন।
অতিথিঃ ঠিক আছে যাও আসব।
বিঃদ্রঃ মনে রাখবেন আপনার ১০ জন অতিথির সবাই আপনার সাথে কাজ শুরু করবে। কেউ এখনই করবে, কেউ কিছুদিন পর, আর কেউবা আপনার সফলতা দেখে। তাই সবুরের সহিত কাজ করে যান সফল আপনি হবেনই।
বর্তমান সময়ে ফলোআপ!
ফলোআপ কি?
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসায় মূলত ব্যক্তি থেকে ব্যক্তির মধ্যে আন্তব্যক্তিক সম্পর্ককে কাজে কাজে লাগিয়ে প্রোডাক্ট মার্কেটিং করা হয়ে থাকে। কোন ব্যক্তিকে পন্য সম্পর্কে তথ্য দেয়ার পর সরাররি পন্যটি ক্রয় করে এমন ব্যক্তির সংখ্যা সাধারনত ১৫-২০% হয়ে থাকে। বাকি ৮০-৮৫% ব্যক্তি পন্য সংক্রান্ত তথ্যসমূহ নিয়ে বাসায় বা তার কর্মস্থলে চলে যায়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যেহেতু নেটওয়ার্ক মার্কেটিং বিষয়ক সচেতনতার অভাব খুব বেশি তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে আপনার অতিথির আশে পাশের শুভাকাঙ্খীরা যখন জানতে পারে যে, তিনি নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কোম্পানী থেকে পন্য কেনার বা ব্যবসা করার অফার পেয়েছেন তখন তাকে অপরিপক্ক তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করে ফেলতে পারে।
এধরনের পরিস্থিতি তৈরি হলে আপনার অতিথির সাথে পুনরায় যোগাযোগ করার প্রয়োজন পরবে। এবং তার বিভ্রান্তির কারন সম্পর্কে জেনে সেই মোতাবেক সঠিক তথ্য তাকে পৌছে দিতে হবে। আপনার অতিথি যখন দেখবে যে, আপনি লজিক্যাল এবং সঠিক তথ্য দিয়েছেন তখন তিনি আপনার প্রোডাক্ট এবং সিস্টেম এর উপর সন্তুষ্টচিত্তে প্রোডাক্ট ক্রয় করে কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিবেন। এই বিশেষ প্রক্রিয়াটি নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর ভাষায় ফলোআপ হিসেবে পরিচিত।
ফলোআপ এর আওতাভূক্ত কাজ সমূহ কি কি?
কোন একজন অতিথিকে ব্যবসা বা প্রোডাক্ট সম্পর্কে প্রথমবার তথ্য দেয়ার পর থেকে শুরু করে প্রোডাক্ট ক্রয় করে জয়েন করার পূর্বের সময়ে তার সাথে এক বা একাধিক বার যোগাযোগ করে তাকে কোম্পানী প্রোডাক্ট এবং আপনার অফার সম্পর্কে সঠিক তথ্য পৌছে দিয়ে জয়েনিং এর পূর্ণাঙ্গ সিদ্ধান্ত তৈরির ব্যপারে সহায়তা করতে যেয়ে যা যা করতে হয় তার সবই ফলোআপের অন্তর্ভূক্ত। সাধারনত কোন একজন অতিথিকে ৩-৫ বার ফলোআপ করতে পারলে সফলতার হার অনেক গুন বেড়ে যায়।
ফলোআপের পয়োজনীয়তাঃ
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসা সম্পসারনের জন্য যে ৮ টি ধাপ সম্পর্কে বেসিক বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ট্রেনিং এর ধারনা দেয়া হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে ফলোআপ। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দীর্ঘ ৭ বছরের নেটওয়ার্ক মার্কেটিং নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে পারি যে, আপনি ১০০ জন ব্যক্তিকে যদি পন্য বা ব্যবসা সম্পর্কে তথ্য দিয়ে থাকেন দেখবেন মাত্র ১৫-২০ জন ব্যক্তি ফলোআপ ছাড়াই অর্থাৎ আপনি তাকে প্রথমবার তথ্য দেয়ার পরপরই সে প্রোডা্ক্ট ক্রয় করে আপনার সাথে কাজ শুরু করবে। বাকি ৮০-৮৫ জন ব্যক্তিকে জয়েন করাতে হলে অবশ্যই ফলোআপ করতে হয়। তাই বুঝতেই পারছেন অল্প সময়ে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং থেকে বড় রকমের সফলতা পেতে ফলোআপের কোন বিকল্প নাই।
ফলোআপ করার পূর্বে মূলত দুই ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করা দরকারঃ
১। ইন্টারনাল বা অভ্যন্তরীন প্রস্তুতি২। এক্সটারনাল বা বাহ্যিক প্রস্তুতি
১। ইন্টারনাল বা অভ্যন্তরীন প্রস্তুতি
- আপনি যে কোম্পানীতে কাজ করছেন সে কোম্পানী সম্পর্কে ভাল করে জানা থাকতে হবে।
- আপনার কোম্পানী উপর পূর্ণ বিশ্বাস থাকতে হবে।
- আপনি যে কাজটি করছেন তা নিজের এবং অন্যের জন্য উপকারী কি না পরিস্কার ধারনা থাকতে হবে।
- আপনি যে সিস্টেমে (নেটওয়ার্ক মার্কেটিং) কাজ করছেন সে সিস্টেম টি যে ভাল তার উপর পূর্ণ আস্থা থাকতে হবে।
- কাউকে ফলোআপ করার পূর্বে তার প্রয়োজন বা আগ্রহ কিসে তা ভাল করে জানা থাকা দরকার। বেশির ভাগ নতুন নেটওয়ার্কাররা তারা নিজে যেটা ভাল মনে করেন বা যাতে কমফোর্ট ফিল করেন অথবা যে প্রোডাক্ট পছন্দ করেন তা বিক্রয় করার চেস্টা করেন। অথচ ভাল ফলাফল পেতে চাইলে আপনার অতিথির পছন্দ বা চাওয়াকে গুরুত্ব দিলে পজিটিভ ফলাফল পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক গুন বেরে যায়।
- ফলোআপের জন্য আপনার নিজের, কোম্পানীর, সিস্টেম এবং প্রোডাক্ট এর উপর উচ্চমাত্রার কনফিডেন্স থাকা দরকার। মনে রাখবেন আপনার কনফিডেন্স এর উপর নির্ভর করে অতিথি জয়েন করার সিদ্ধান্ত নিবে।
বিঃদ্রঃ- মানুষের চাওয়া বা পছন্দ নির্ণয় করার জন্য ইনভাইট ট্রেনিং এ বর্নিত FORM সূত্র ব্যবহার করলে ভাল ফলাফল পাওয়া যেতে পারে।
২। এক্সটারনাল বা বাহ্যিক প্রস্তুতি
মার্কেটিং ব্যবসায় বাহ্যিক প্রস্তুতি অত্যন্ত গুরুত্ব পূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়। কেননা একটি বিখ্যাত প্রবাদ আছে মানুষ আগে দর্শনদারী তার পর গুন বিচারি। অর্থাৎ আপনার কোম্পানী এবং তার প্রোডাক্ট যত ভালই হোক না কেন, মানুষ প্রথমে আপনাকে দেখে কোম্পানী এবং প্রোডাক্ট সম্পর্কে প্রাথমিক ধারনা পোষণ করবে।
- আপনার ড্রেসকোড হতে হবে প্রফেশনাল। মেয়েদের ক্ষেত্রে শালীন যে কোন পোশাক এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে টাই পড়া উত্তম।
- ক্লিন সেভড, চুল সুন্দর করে কাটা, এবং পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকা দরকার।
- অবশ্যই আপনার মুখ যেন দু্র্গন্ধ মুক্ত হয়। যাদের দাতে কোন সমস্যার কারনে দুর্গন্ধ এড়ানো যাচ্ছে না তারা চুইংগাম বা চকোলেট খেয়ে নিতে পারেন।
- আপনার সাথে একটি সুদর্শন ব্যাগ যার মধ্যে কাগজ, কলম, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস থাকা ভাল। এটা আপনার প্রফেশনালিজম প্র্রকাশ করে। যার ফলে আপনার আলোচনা গুরুত্ব পায়।
ফলোআপের ধারাবাহিকতাঃ
অনেকেই ফলোআপ করতে গিয়ে সি নিজে যা যা জানে সবকিছু তার অতিথিকে জানাতে উদ্ধত হয়। তার ফলে দেখা যায় সে হয়তো অনেক সময় নিয়ে অতিথির সাথে আলোচনা করেছে কিন্তু অতিথি হয়তো তার জানার বা বিভ্রান্ত হওয়ার কারন সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা পেলনা। তার ফলে অনেক নেটওয়ার্কারের নিজের কাছে মনে হয় যে, এত সময় নিয়ে আলোচনা করলাম মনোযোগ সহকারে শুনল কিন্তু প্রোডাক্ট ক্রয় করছে না কেন? সমস্যা টা কোথায়? আসলে আপনি ফলোআপের নিয়ম এবং ধারাবহিকতা সম্পূর্ণরূপে অনুসরন না করায় এমন পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে।
উপরিউক্ত সমস্যার সমাধান হিসেবে একটি মডেল ফলোআপের ধারাবাহিকতা সম্পর্কে নিম্নে ধারনা দেয়া হলোঃ
১। পজিটিভ কথা দিয়ে আলোচনা শুরু করুন।
২। অতিথির কাছ থেকে প্রশ্ন সংগ্রহ করুন এবং একটি কাগজের উপরের ডান দিকের কর্নারে একে একে লিখে ফেলুন।
৩। খুবই সংক্ষিপ্ত আকারে ব্যবসায়ীক পরিকল্পনাটি পুনরায় তুলে ধরুন।
৪। সকল প্রশ্নের লজিক্যাল উত্তর একটি একটি করে যথা সম্ভব অল্প সময়ের মধ্যে ব্যখ্যা করুন।
৫। একাধিক ব্যবসায়ীক কেন্দ্র নিয়ে শুরু করার সুবিধা সমূহ তুলে ধরুন।
৬। আগে আসার সুবিধা সমূহ তুলে ধরুন এবং সাইন আপ করানোর চেষ্টা করুন।
৭। আলাচনার ফলাফল যাই হোক না কেন হাসি মুখে সুসম্পর্ক বজায় রেখে বিদায় নিয়ে চলু আসুন।
উপরিউক্ত সাতটি ধাপ অনুসরন করে ফলোআপ করলে আপনার অতিথির কাছে প্রোডাক্ট সেল করা অনেক সহজ হবে এবং সফলতার হার অনেক গুন বাড়াতে পারবেন বলে বিশ্বাস করি।
আপনার অতিথির মনে তৈরি হওয়া কিছু সম্ভাব্য প্রশ্নের মডেল উত্তর তুলে ধরা হলোঃ
বিঃদ্রঃ যেকোন প্রশ্নের উত্তর দেয়ার পূর্বে আপনি আপনার অতিথির করা প্রশ্নের ধরন যাই হোক না কেন প্রশংসা করবেন। এবং প্রথমে একমত হয়ে আলোচনা শুরু করবেন।
আমি এত লোক কোথায় পাব?
সুন্দর প্রশ্ন করেছেন, লোক বা ব্যক্তি ছাড়া কেউতো আর প্রোডাক্ট ক্রয় করবে না। তাই লোক তো লাগবেই, যদি আপনি একসময় লোক না পান তবে তো ব্যবসাই করা যাবে না। কিন্তু মজার ব্যপার হচ্ছে কি, আপনার একা একা এত লোক যোগার করার প্রয়োজন পরবে না। ধরুন আপনার ৩০ জন ব্যক্তি পরিচিত আছে যাদের সাথে আপনি আমাদের কোম্পানীর প্রোডাক্ট নিয়ে আলোচনা করলেন। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর এভারেজ থিওরি অনুযায়ী দেখা যায় এর মধ্যে-
আনুমানিক ১০ জন ব্যক্তির প্রোডাক্টটির প্রয়োজন নাই
আরো ১০ জন ব্যক্তির এই মূহুর্তে ক্রয় করার মত টাকা নাই
বাকি ১০ জন ব্যক্তির প্রোডাক্টটি ক্রয় করার সামর্থ এবং দরকার আছে বিধায় তারা পন্যটি ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এই ১০ জনই হচ্ছে আপনার ক্রেতা। এর মধ্যে ১০ জন না হোক ৫ জন তো হবে, ৫ জন না হোক মাত্র ২ জন তো অবশ্যই হবে।
তাহলে ধরুন ২ জন আপনার কাছ থেকে পন্য ক্রয় করে কাজ শুরু করল। এখন লক্ষ্য করে দেখুন হয়তো আপনার আর নতুন কেউ পরিচিত অবশিষ্ট নাই কিন্তু আপনার সাথে যে দুই জন কাজ শুরু করল তাদের প্রত্যেকের তো ৩০ জন করে ৬০ জন পরিচিত আছে। তাই নয় কি? তাদের কাছে একই প্রক্রিয়ায় প্রোডাক্ট সেল হলে আপনা ব্যবসা চলতে থাকবে।
এই প্রক্রিয়াটি ধারাবাহিক ভাবে সামনের দিকে ক্যালকুলেশন করলে দেখতে পাবেন যত দিন যাবে আপনার অতিথির সংখ্যা ততই বাড়তে থাকবে।
আমারতো টাকা নাই! কি ভাবে শুরু করব?
ঠিকই বলেছেন, টাকা না থাকলে তো শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রোডাক্টই ক্রয় করা যাবে না। আর শুরু না করতে পারলে তো কাজ করার প্রশ্নই আসে না। কিন্তু একটু লক্ষ্য করে দেখুন-
ব্যবসাটি শুরু করার জন্য দরকা মাত্র ৫-১০০০০ টাকার পন্য ক্রয় করার।
ধরুন আপনি এখন দাবি করলেন আপনার কাছে এই পরিমান টাকা নাই। আল্লাহ্ না করুক, আগামীকাল সকালে যদি আপনি একটি একসিডেন্ট এর স্বীকার হোন আর তখন ডাক্তার যদি বলে আপনার জরুরী ভিত্তিতে পায়ের অপারেশন করতে হবে। এ কাজে টাকা লাগবে ৫০০০০/= অন্যথায় পা কেটে ফেলতে হবে।
এমন পরিস্থিতিতে আপনি কি করবেন পা কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিবেন, নাকি যে কোন মূল্যে টাকার যোগার করবেন? এমন সময় হতে পারে আপনি আপনার মোবাইল, ঘরি, কম্পিউটার বা মায়ের গহনা বিক্রি করে হলেও টাকা যোগার করবেন। এমনটি আমার সাথে হলে আমিও তাই করতাম। কেন এমনটি করবেন যানেন কারন আপনি আপনার পায়ের ভেল্যূ কত তা খুব ভাল করেই জানেন।ঠিক তেমনি, আপনি যদি চিন্তা করেন এবং বিশ্বাস করেন যে মাত্র ৫-১০০০০ টাকার পন্য কিনে ব্যবসা শুরু করার মাধ্যমে ভাল একটি পার্টটাইম আয়ের সুযোগ তৈরি করা যাবে এবং এর গুরুত্ব যদি উপলব্ধি করতে পারেন তাহলে ৫-১০০০০ টাকা আপনার জন্য কোন টাকাই না!
যে দেশে মাত্র ৫-৭০০০০ টাকার চাকুরী পাওয়ার জন্য মানুষ লাখ লাখ টাকা ঘুষ দিতে রাজি হয়ে যায়, যে দেশের মানুষেরা একটি ইউরোপের ভিসা পেলে ১২-১৫ লাখ টাকা বাড়ি গাড়ি বা জমি বিক্রি অথবা ধার করে যোগার করে ফেলে শুধুমাত্র ভাল একটি ইনকামের রাস্তা তৈরি করার আশায়। সেখানে আপনি যদি চিন্তা করেন এবং বিশ্বাস করেন যে মাত্র ৫-১০০০০ টাকার পন্য কিনে ব্যবসা শুরু করার মাধ্যমে ভাল একটি পার্টটাইম আয়ের সুযোগ তৈরি করা যাবে এবং এর গুরুত্ব যদি উপলব্ধি করতে পারেন তাহলে ৫-১০০০০ টাকা আপনার জন্য কোন টাকাই না!
তাই আমার মনে হয় আপনি সাহস করে সিদ্ধান্ত নিলে টাকার যোগার হয়ে যাবে। আপনি নিশ্চিত থাকেন আপনার টাকার কোন অপব্যবহার হবে না। প্রয়োজনে আমি এবং আপনি একসাথে যেয়ে সরাসরি শোরুম থেকে পন্যটি ক্রয় করে নিয়ে আসব।
আমারতো সময় নাই! সময় না দিতে পারলে ব্যবসা করব কি করে?
আপনি ঠিকই বলেছেন। যদিও ব্যবসায়ীক সফলতার জন্য সপ্তাহে অন্ততঃ ১৫-২০ ঘন্টা সময় বিনিয়োগ করতে পারলে ভাল। তবে মজার ব্যপার কি জানেন? এই ব্যবসাটি করার জন্য কোন নির্দিষ্ট সময় দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না।
যেমন ধরেন, শনিবার আপনি হয়তো সকালে ব্যস্ত বিকালে এসে ২-৩ ঘন্টা সময় দিলেন।
আবার রবিবারে খুব ব্যস্ত আপনি হয়তো সেদিন আসলেন না।
আবার সোমবার হয়তো সারাদিন ব্যস্ত তাই সন্ধ্যার পর ২-৩ ঘন্টা সময় দিলেন।
আবার শুক্রবার ছুটির দিন বিকেল বেলায় হয় তো ২-৩ ঘন্টা সময় দিলেন। এভাবে আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী সময়ে কাজটি করার মত স্বাধীনতা এই ব্যবসায় আছে। এভাবে কিছু দিন কাজ করার পর ছোট খাট একটি টিম তৈরি হয়ে গেলে দেখা যাবে আপনি হয়তো ব্যস্ত থাকবেন কিন্তু আপনার টিমের অনেকেই হয়তো এত ব্যস্ত থাকবে না। যার ফলে তারা কাজ করলেও আপনি একটি সুবিধা পাবেন। কারন এই ব্যবসাটিতে রয়ালিটি আয় করার সুযোগ আছে এবং সময়ের এরকম স্বাধীনতা ভোগ করার সুযোগ আছে। তাই আমার মনে হয় আপনি চাইলে আমার সাথে ব্যবসাটি করতে পারবেন। শুরু করুন ইনশা-আল্লাহ্ আমি আপনাকে সর্বোচ্চ সহযোগীতা করব।
আমার তো কোন অভিজ্ঞতা নাই, আমি কি পারব?
আপনার অভিজ্ঞতা না থাকার কারনে আপনি তুলনামূলক ভাবে আরও দ্রুত সফল হবেন। কারন ব্যবসাটি করার জন্য কোন পূর্ব অভিজ্ঞতার প্রয়োজন পরে না। এখানে কাজ করতে করতে এবং কিছু প্রশিক্ষন নিতে নিতে আপনার অতিজ্ঞতা তৈরি হয়ে যাবে। তাছাড়া পৃথিবীতে সকল কাজের কিন্তু অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় না। যেমন বিয়ে করতে অভিজ্ঞতা লাগে না। বরং থাকলে সমস্যা তৈরি হয় ঠিক তেমনি নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসায় অভিজ্ঞতার কোন প্রয়োজন নাই। তাই শুরু করুন। আমার বিশ্বাস আপনি পারবেন। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে আমি আপনাকে সার্বক্ষনিক সহযোগীতা করব।
লক্ষ্য করে দেখুন এই সেক্টরে যারা কাজ করছে এবং সফল হচ্ছে তারা সবাই কিন্তু আপনার চেয়ে দেখতে সুন্দর বা বুদ্ধিমান তা না। বরং আপনি অধিকাংশের তুলনায় অনেক বেশি যোগ্য। তাই আমার দাবি দয়া করে নিজেকে ছোট করে দেখবেন না। শুরু করুন। আপনি অবশ্যই পারবেন ইনশা-আল্লাহ্।
আপনাদের প্রোডাক্টের মার্কেট প্রাইজ বেশি!
দেখুন এটা শুধু আপনার প্রশ্নই না। ইতিপূর্বে আরো অনেকেই আমাকে এধরনের প্রশ্ন করেছে। আসলে কি জানেন প্রোডাক্টের মার্কেটি প্রাইজ বলতে প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীতে কোন কিছুর অস্তিত্বই নাই। যদি থাকতই তবে আমি আপনি বাজারে বা শপিং সেন্টারে যেয়ে বিক্রেতার সাথে দরকষাকষি করতাম না।
তারপরেও চলুন দেখি কোন একটি প্রোডাক্টের প্রাইজ কি ভাবে নির্ধারন করা হয়ঃ
ধরুন আপনার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার কোন একটি প্রত্যন্ত গ্রামে।
সেখানে এক কাপ চা এর দাম কত? ৩-৫ টাকা।
একই রকম এক কাপ চা এর দাম ঢাকায় খোলা দোকানে ১০ টাকা।
আবার কোন একটি ফাস্ট ফুডের দোকানে ২০ টাকা।
আবার একই চা কোন একটি চাইনজে বসে খেলে ৫০ টাকা দিতে হয়।
আবার একই চা কোন একটি ফাইভ স্টার হোটেলে বসে খেলে হয়তো ২৫০-৩০০ টাকা দিতে হয়।
এখন আপনিই বলেন গ্রামের ঐ ছোট দোকানের চা চায়ের পাতি দিয়ে তৈরি হয় আর ফাইভ স্টার হোটেলের চা কি অন্য কিছুর পাতি দিয়ে তৈরি হয়। নিঃসন্দেহে না। অবশ্যই সকল জায়গায় চা চায়ের পাতি দিয়েই তৈরি হয়। তার পরেও এক এক জায়গায় চায়ের দাম কম বেশি হবার কারন হচ্ছে ঐ জায়গার পরিবেশ পরিস্থিতি এবং সেবার মান। ফাইভ স্টার হোটেলের পরিবেশ এবং সেবার মান আর ফুট পাতের খোলা দোকানের পরিবেশ এবং সেবার মান কোন অবস্থায়ই এক রকম হয় না্। তাই একই উপাদান দিয়ে তৈরি চা এর দাম পরিবেশ এবং সেবার মান অনুযায়ী কম বেশি হয়ে থাকে।
ঠিক তেমনি আমার কোম্পানী যে প্রোডাক্টগুলো দিচ্ছে তার সাথে কি কি সেবা বা সুযোগ যুক্ত আছে তা বিবেচনা করলে দেখবেন কোন অবস্থাতেই আমাদের কোম্পানীর প্রোডাক্টের মার্কেট প্রাইজ বেশি নয়।
লক্ষ্য করুনঃ
ধরুন আমার কোম্পানীর একটি টেলিভিশন এর দাম ১৭৩০০ টাকা। আর অন্য একটি ব্র্যান্ডের টিভির দামও ১৭৩০০ টাকা।
এখন অন্য কোম্পানীর টিভি কিনলে টিভি পাবেন, রিমোট পাবেন, কাগজ পত্র পাবেন এবং ওয়ারেন্টি পাবেন।
আর আমার কোম্পানীর টিভি কিনলে টিভি পাবেন, রিমোট পাবেন, কাগজ পত্র পাবেন এবং ওয়ারেন্টি পাবেন।
অন্য কোম্পানীর টিভি কিনলে এর সাথে রেগুলার আয় করার কোন সুযোগ কি আপনাকে ফ্রি দিবে। না দিবে না।
কিন্তু আমার কোম্পানী টিভির সাথে আপনাকে রেগুলার আয় করার সুযোগ ফ্রি দিচ্ছে এবং চাইলে এটাকে কাজে লাগিয়ে আপনি আপনার ক্যারিয়ারও তৈরি করতে পারবেন। তাই আপনার প্রতি আমার পরামর্শ শুরু করুন।
যদি এক সাইড বন্ধ হয়ে যায় তবে কি হবে?
যদি এক সাইড বন্ধ হয়ে যায় তবে আপনি সাময়িক ভাবে কোন আয় করতে পারবেন না। তবে সাধারনত প্রত্যেক নেটওয়ার্কারকে একটি সাইড নিয়েই কাজ করতে হয়। আর একটি কমন সাইড থাকে যা আপনার যারা আপলাইন হবে তারা তাদের স্বার্থেই আপনি কাজ করেন বা না করেন তৈরি করবে। তাই যদি কখন ও আপনার একটি সাইড বন্ধ হয়ে যায় সেক্ষেত্রে দেখা যাবে হয়তো আপনি যে সাইড নিয়ে কাজ করতেন সেই সাইডটিই বন্ধ হয়েছে। আচ্ছা বলুন তো আপনি যদি কাজ করা বন্ধ করে দেন তাহলে কি আপনার আয় হওয়া উচিৎ। নিশ্চই না। তাই যদি আপনি কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন এবং নিয়মিত কাজ করেন তবে আশা করা যায় আপনার কোন সাইডই বন্ধ হবে না। আপনি আমরা সাথে শুরু করুন। আমি আপনার সাথে আছি।
এই ভাবে একজন একজন করে জয়েন করলে শেষ ব্যক্তির কি হবে?
ধরুন, আমি আপনাকে বিষয়টি শেয়ার করলাম এখন যদি আপনি আমার সাথে কাজ শুরু করেন তবে আমরা দুই জন মিলে টিম তৈরি হলো। এখানে আপনাকে সহযোগীতা করার জন্য শুধু আমি থাকলাম। এখন আপনার মাধ্যমে জামালনামের একজন জয়েন করল তাকে সহয়োগীতা করার জন্য আমরা দুইজন থাকব। তারপর জামাল এর মাধ্যমে কামালনামের একজন জয়েন করণ তাকে সহযোগীতা করার জন্য আমরা তিন জন থাকব।
এভাবে যে নতুন শুরু করবে তাকে সহযোগীতা করার জন্য অনেকেই থাকবে। তাতে করে সে তো আরো দ্রুত সফল হবে। তাই নয় কি?এবার আসুন চিন্তা করি, এক সময় সবাই জয়েন করে ফেলল আর সবার শেষে জয়েন করল মিস্টার জেড। এখন আমরা সকলে হয়তো প্রথমবার পরিবারের প্রয়োজনে একটি করে টিভি ক্রয় করেছিলাম। বর্তমানে আবার আমাদের পরিবারের প্রয়োজনে একটি করে ফ্রিজ ক্রয় করব। তাতে সকলেই ইনকাম পাবে। তার পর সকলে যার যার প্রয়োজনীয় প্রোডাক্ট নিজেদের প্রয়োজনে কিনতে থাকব আর আমরা সকলেই ইনকাম পেতে থাকব।
লক্ষ্য করলে দেখবেন আমি, আপনি, জামাল, কামাল আমরা প্রত্যেকেই অনেক দিন যাবৎ কাজ করছি বিধায় আমাদের ব্যবসায়ীক কেন্দ্রের দুটি সাইডই ফিলআপ করা আছে। তাই এখন আমরা সকলেই যে পন্য ক্রয় করছি তার সবই কিন্তু মিস্টার জেড এর ব্যবসায়ীক কেন্দ্রের নিচেই জমা করছি। তার মানে মিস্টার জেড দারুন লাকি একজন ব্যক্তি। তাই দুঃশ্চিন্তা না করে শুরু করুন। ইনশা-আল্লাহ্ আপনি সফল হবেন।
এইব্যবসা তো একদিন বন্ধ হয়ে যাবে?
এই কথাটি ১০০% সত্য। পৃথিবীর সকল কিছুই একদিন শেষ হয়ে যাবে। তবে আমি আপনি এবং সকলেই কিন্তু প্রোডাক্ট সেল করবো আমাদের ইনকামের জন্য। কোম্পানী আমাদের সেল করা পন্যের মধ্য থেকে যে লাভ করবে তার একটি অংশ আমাদেরকে দিবে এবং বাকি অংশ কোম্পানীর লাভ হিসেবে থেকে যাবে। খেয়াল করলে দেখবেন আমরা সেল না করলে আমাদেরকে কোন বেতন দিতে হয় না। তাই আমরা ইনকাম করতে হলে কোম্পানীও একটি ইনকাম করবে। এমন একটি কোম্পানী যেখানে ডিস্ট্রিবিউটররা কোম্পানীর প্রোডাক্ট সেল করে কোম্পানীকে ইনকামের ব্যবস্থা করে দিলে কোম্পানী তাদেরকে ইনকাম দেয় নইলে নয় এমন একটি কোম্পানীর মালিক আপনি হলে আপনি কি এই কোম্পানীটিকে বন্ধ করে দিতেন। নিশ্চই না। তাহলে যতদিন মানুষ অর্থাৎ ক্রেতা থাকবে ততদিন আমার আপনার মত বিক্রেতাও থাকবে। তাই আশা করা যায় সহসাই কোম্পানী বন্ধ হবার কোন কারন নেই। শুরু করুন। ইনশা-আল্লাহ্ সফল হবেন।
বিঃদ্রঃ মনে রাখবেন আপনার অতিথি জানে না বা বুঝে না বিধায় এমন সব প্রশ্ন করবে। তাই ফলোআপ করার সময় কোন অবস্থাতেই রাগ করা যাবে না, তর্ক করা যাবে না, আন্তরিকতার সহিত বুঝিয়ে বলতে হবে।
লীডারশীপ
লীডারঃ
- লীডার হচ্ছে এমন একজন ব্যক্তি যাকে মানুষ অনুসরন করে। যিনি অন্যদেরকে দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন এবং অন্যদেরকে পরিচালনা করার যোগ্যতা রাখেন।
- লীডার হচ্ছেন তিনি যিনি অন্যদেরকে প্রভাবিত করতে পারেন এবং নেতৃ্ত্ব দিতে পারেন।
লীডারশীপঃ
- লীডারশীপ হচ্ছে- কোন একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা কে অর্জন করার জন্য একদল মানুষকে একত্রিত করে সুসংগঠিত করা।
- লীডারশীপ হচ্ছে- এক দল মানুষকে মোটিভেট করার কৌশল যা্ কোন একটি নির্দষ্ট লক্ষ্যকে অর্জন করার জন্য কাজ করে।
- লীডারশীপ হচ্ছে- কোন একদল ব্যক্তি বা কোন প্রতিষ্ঠান কে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা বা নেতৃত্ব দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা।
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসায় লীডারশীপের গুরুত্বঃ
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসায় সফল হতে চাইলে লীডারশীপ ডেপলাপমেন্ট করার কোন বিকল্প নাই। কারন এই ব্যবসায় নিয়মিত লেগে থাকলে আপনি চান বা না চান আপনার এক বা একাধিক টিম তৈরি হবে। আর ঐ টিমের বহু মানুষকে সঠিক ভাবে নেতৃত্ব দিতে পারলে আপনার ব্যবসায়ীক সফলতা পাওয়া শুধু সময়ের ব্যপার বলে গন্য হবে। শুধুমাত্র সঠিক নেতৃত্বের অভাবে অনেক নেটওয়ার্কারের বিশাল টিম থাকা সত্ত্বেও ব্যবসায় আশানুরূপ ফলাফল বের করে নিয়ে আসতে পারে না। তাই এই প্রশিক্ষন টি কাজে লাগিয়ে আপনি আপনার লীডারশীপ কোয়ালিটি বৃদ্ধি করে নিলে আশা করা যায় আপনি খুব দ্রুত সফল হবেন।
লীডারশীপের প্রকারভেদঃ
লীডারশীপ বিষয়টি খুবই ব্যপক ভাবে বিশ্লেষন করার মত একটি বিষয়। তথাপিও এই প্রশিক্ষন টিতে আমরা শুধুমাত্র দুই ধরনের লীডারশীপের বিষয় উল্লেখ করব। এবং ব্যখ্যা সহ আলোচনা করব শুধু মাত্র নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর জন্য প্রয়োজনীয় লীডারশীপের স্টাইলের উপর।
আদেশ/সিস্টেম- লীডারশীপ
এ জাতীয় লীডারশীপ কোন ইনস্টিটিউট বা প্রতিষ্ঠানে দেখা যায়। সাধারনত কোন একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য কিছু দায়ীত্বশীল পদবী তৈরি করা হয়। এক্ষেত্রে কোন একটি পদবীর সাবঅর্ডিনেট বা অনুসারি যারা থাকেন তারা পদিকার বলের কারনে উক্ত পদবীর ব্যক্তি যা বলবেন বা আদেশ করবেন তা পালন করতে বাধ্য থাকেন।
সম্মতি-লীডারশীপ
এ জাতীয় লীডারশীপ এ কোন একজন লীডারকে তার অনুসারিরা লীডারের প্রতি সন্তুষ্ট চিত্তে নিজ প্রয়োজনে অনুসরন করে থাকেন। এখানে অনুসারিরা কোন পদিকার অনুযায়ী আদেশ বা নির্দেশ মানতে বাধ্য থাকেন না। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসার লীডাররা এই ক্যাটাগরির লীডারদের অন্তর্ভূক্ত।
লীডারশীপ গুনাবলীঃ
একজন লীডার এর বেশ কিছু গুনাবলী থাকা দরকার। যেমনঃ
১। শারীরিক যোগ্যতাঃ
একজন লীডারকে শারীরিক ভাবে ফিট থাকার দরকার আছে। সে যে কাজটি আদায় করার জন্য কাজ করছে সেখানে তার শারীরিক উপস্থিতি থাকতে হয়।
২। দূরদর্শিতাঃ
একজন লীডার জানে এর পর কি করতে হবে।
৩। বুদ্ধিমত্তাঃ
একজন লীডার কে হতে হয় দারুন বুদ্ধিমান। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য উপস্থিত বুদ্ধির কোন বিকল্প নেই।
৪। যোগাযোগ দক্ষতাঃ
একজন লীডার অবশ্যই তার দলের সাথে প্রয়োজন অনুযায়ী সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রাখতে হয়। একজন লীডার যাদের সাথে কাজ করবেন হতে পারে তারা বিভিন্ন বয়সের, বিভিন্ন যোগ্যতা সম্পন্ন। কার সাথে কোন পরিস্থিতিতে কিভাবে কথা বলতে হবে বা কার সাথে কিভাবে আচরন করতে হবে তা বুঝে সেই অনুযায়ী যোগাযোগ করার দক্ষতা একজন লীডারের জন্য খুবই গুরুত্ব পূর্ণ ব্যপার।
৫। লক্ষ্যমাত্রাঃ
একজন লীডার অবশ্যই একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করার জন্য তার দল নিয়ে কাজ করে যান। যে দল ঐ নির্দিষ্টি লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমানে লক্ষ্য অর্জনে অবিচল মানষিকতা একজন লীডারের বৈশিষ্ট্য। লীডার তার সেট করা লক্ষ্য অর্জনের জন্য তার লক্ষ্যকে বহু ভাগে বিভক্ত করে দলের প্রতিটি ব্যক্তিকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লক্ষ্যমাত্রা সেট করে দিতে পারেন এবং সেই অনুযায়ী তারা কাজ করছেন কিনা তা ফলোআপ করে থাকেন।
৬। কাজ করার জ্ঞানঃ
একজন লীডার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে যেয়ে তার দলের প্রতিটি ব্যক্তির মধ্যে কে কোন কাজটি করবে তা যেমন জানে সেই সাথে ঐ কাজ গুলো কিভাবে করলে দ্রুত অর্জন করা যাবে সে বিষয়েও তার যথেষ্ঠ জ্ঞান থাকতে হয়। কোন একটি কাজ কত সময়ের মধ্যে করা সম্ভব তাও একজন লীডার জানেন। এবং সেই মোতাবেক কাজটি সম্পাদন হলো কিনা বা দলের কোন ব্যক্তি সঠিকভাবে সঠিক সময়ের মধ্যে কাজটি করছেন কিনা তা যাচাই করা বা আদায় করার জ্ঞান একজন লীডারের থাকতে হয়।
৭। দায়ীত্বশীলতাঃ
একজন লীডার সবসময় দায়ীত্বশীল হয়ে থাকেন। দায়ীত্ব এরানো কোন লীডারের বৈশিস্ট হতে পারে না। লীডার তার নিজের দায়ীত্ব সম্পর্কে যেমন সচেতন ঠিক তেমনি তার দলের কার কি দায়ীত্ব তা সম্পর্কেও তিনি সচেতন থাকেন। যে কোন দায়ীত্ব পালন করার ক্ষেত্রে একজন লীডার অগ্রপথিক হিসেবে দায়ীত্ব নিয়ে কাজ করে যান।
৮। আত্মবিশ্বাস এবং আশাবাদীঃ
একজন লীডারকে হতে হয় আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান এবং দারুন আশাবাদী। লীডার যে কোন পরিস্থিতিতে আশাবাদী থাকেন এবং কিভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা যায় তা নিয়ে চিন্তা করেন এবং চেষ্টা করেন। লীডার যে কোন পরিস্থিতির বিপরীতে তা মোকাবেলার জন্য যা যা করনীয় তা সেট করেন এবং সময় নষ্ট না করে পূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করে যান।
৯। মানবিকতাঃ
লীডার যেহেতু মানুষদের সাথে কাজ করেন তাই তার মানবিক গুনাবলী থাকা বাধ্যতামূলক। লীডার কোন কোন ক্ষেত্রে তার দলের ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত মানবিক সমস্যার সমাধানেও গুরুত্ব এবং যত্ন সহকারে অবদান রেখে থাকেন। তার এই গ্রনাবলী একজন লীডারকে তার দলের সাথে আন্তরিক সম্পর্ক তৈরি করতে সহায়তা করে। যা কাজের গতিকে অনেক পরিমানে বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
উপরিউক্ত গুনাবলীর সাথে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবাসার লীডারদের নিম্ন লিখিত চারটি গুনাবলী থাকা বাধ্যতা মূলক। এই চারটি গুনাবলীর কোন একটি যদি একজন নেটওয়ার্কারের না থাকে তবে তার লীডারশীপ জিরো হিসেবে বিবেচিত হয়।

১। চরিত্র
একজন লীডার এর চারিত্রিক গুনাবলী হতে হয় উত্তম। প্রাতিষ্ঠানিক লীডারশীপে একজন লীডারকে তার অনুসারিরা পছন্দ করেন বা না করেন তাকে অনুসরন করতে হয়। কিন্তু যেহেতেু নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর লীডারদের তার অনুসারিরা মানতে বাধ্য নয় তাই লীডারকে হতে হয় সুন্দর চরিত্রের অধিকারী যাতে করে তার অনুসারীরা তাকে নির্ধিধায় পছন্দ করে এবং অনুসরন করে। একজন লীডার কোন অবস্থাতেই তার অনুসারিদের কাছ থেকে কোন অনৈতিক ফায়দা নিতে পারেন না। তার অনুসারিদের সাথে প্রতারনা বা ওয়াদার বরখেলাফ করতে পারেন না।
২। দূরদর্শিতা
একজন লীডারকে হতে হয় দুর্দান্ত দূরদর্শিতা সম্পন্ন। লীডারের দেখানো পথে বহু অনুসারিরা পথ চলবে। তাই তার নির্দেশিত পথের শেষ প্রান্তে সফলতার সহিত পৌছানোর জন্য প্রয়োজনীয় সকল কিছু সম্পর্কে একজন লীডারকে জানতে হয়। অর্থাৎ কোন একটি কাজ সম্পন্ন করার জন্য ১০০ টি ধাপ অত্রিক্রম করার প্রয়োজন পরতে পারে এমতাবস্থায় একজন লীডারকে জানতে হয় একটি ধাপের পর পরবর্তী ধাপটি কি হবে।
একজন লীডারের দূরদর্শিতাকে একটি গাড়ির হেড লাইট এর সাথে তুলনা করা যেতে পারে। কোন একটি গাড়ির হেড লাইট সচল না থাকলে যেমন কুয়াশাচ্ছন্ন বা অন্ধাকারাচ্ছন্ন পথ অতিক্রম করা কঠিন বা অসম্ভব হয়ে দাড়ায় ঠিক তেমনি কোন একজন লীডারের দূরদর্শীতার জ্ঞান না থাকলে তার লক্ষ্য অর্জনে দলকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া কঠিন বা অসম্ভব হয়ে দাড়ায়।
৩। প্রভাব
একজন লীডারের মধ্যে তার দলের প্রতিটি ব্যক্তিকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা থাকতে হবে। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক লীডারশীপের মত আদেশের মাধ্যমে প্রভাবিত করা যাবে না। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ লীডার তার অনুসারীদেরকে তার বুদ্ধিমত্তা, কাজের দক্ষতা, সফলতা ইত্যাদি গুনাবলীর মাধ্যমে কোন ব্যক্তির উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। আপনি যদি আপনার দলের ব্যক্তিদেরকে ব্যপক হারে সার্ভিস দিয়ে থাকেন তবে আপনার অনুসারিরা আপনার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে আপনি যা বলবেন তা অনুসরন করবে। আবার আপনি কোন একটি কাজ করার পরামর্শ যখন অন্যদেরকে দিবেন তার পূর্বে উক্ত কাজটি আপনি নিজে করেছেন এমন উদাহরন থাকলে অন্যকে দিয়ে কাজটি করিয়ে নেয়া অনেক সহজ হবে। তাই নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ একজন লীডারের জন্য “লীড বাই এক্সাম্পল” বাক্যটি বিশেষ ভাবে প্রযোজ্য।
৪। সাহস
শুধু নেটওয়ার্ক মার্কেটিং নয় যে কোন মার্কেটিং সেক্টরে কাজ করতে হলে সাহসীকতা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গুন হিসেবে বিবেচিত। একজন লীডার কোন একটি কাজ সবার আগে নিজে সাহস করে শুরু করে তার ফলে তার অনুসারিরা তা অনুসরন করে কাজ শুরু করে। কোন একটি বড় টার্গেট বা লক্ষ্য দেখলে কোন একজন অনুসারী মনে করতে পারে এটা অর্জন করা অসম্ভব কিন্তু একজন লীডার তাকে চ্যালেন্জ হিসেবে নিয়ে কাজ শুরু করে।
যে সকল লীডার রা লড়াই লড়াই লড়াই চাই লড়াই হলে আমি নাই টাইপের তারা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসায় সাময়িক সফলতা পেলেও কখনই অনেক দূরের বড় কোন লক্ষ্য অর্জনের সফলতা নিয়ে আসতে পারে না।
বিঃ দ্রঃ যে কাজটি আপনি নিজে করেন না বা নিজের জন্য ভাল মনে করেন না দয়া করে তা অন্যকে দিয়ে করানোর চেষ্টা করবেন না। আর আপনি যদি এই নীতিটি অনুসরন করেন তবে দেখবেন আপনি আপনার দলের নিকট দারুন একটি গ্রহনযোগ্য লীডারশীপ তৈরি করতে সক্ষম হবেন।
No comments:
Post a Comment