প্রশিক্ষণের গুরুত্ব

প্রশিক্ষণকে সফলভাবে কাজে লাগানোর উপায়

যেভাবে মূল্যবান সময়কে কাজে লাগাবেন

ডিস্ট্রিবিউটরগণ যেভাবে ব্যবসার পরিকল্পনা গঠন করবেন।

টেলিফোনে আলাপ করার কয়েকটি কৌশল

নিজের প্রস্তুত করুন ঃ সফল হউন

সফল হওয়ার জন্য ডিস্ট্রিবিউটরদের যেসব গুণাবলী থাকা প্রয়োজন।

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ গ্রুপ বা-দলের সুবিধাসমূহ

## প্রশিক্ষণের গুরুত্ব

প্রশিক্ষণ সাফল্য অর্জনের মূল হাতিয়ার। কাজ সম্পাদনের জন্য লোকজনকে হাতে কলমে যে শিক্ষা প্রদান করা হয় তাকে প্রশিক্ষণ বলতে পারি। এডউইন বি ফিলিপেপার ভাষায় “প্রশিক্ষণ হলো একটি নির্দিষ্ট কাজ করার জন্য লোকজনের যোগ্যতা, দক্ষতা ও গুনাগুন বৃদ্ধির একটি প্রক্রিয়া”

প্রশিক্ষনের মাধ্যমে লোকজনের কাজের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিতে ক্রেতা বা ডিস্ট্রিবিউটরদের কর্মদক্ষতা ও কৌশল বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশেষ বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া অত্যাবশক। এসব প্রশিক্ষণ হতে পারে প্রেষনামূলক প্রশিক্ষণ, বিক্রয় কৌশল সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ, মনোভাব গঠনমূলক প্রশিক্ষণ ইত্যাদি। লক্ষ্য করা যায় নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতির সহিত সম্পৃক্ত ক্রেতা বা ডিস্ট্রিবিউটররা ব্যবসার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করলেও প্রশিক্ষণ গ্রহনের ব্যাপারে অনেকটা উদাসীন। প্রশিক্ষণ গ্রহণ কেন জরুরী গুরুত্বপূর্ণ তা নিম্নের আলোচনা হতে ধারনা লাভ করতে পারি।

ক) নেটওয়ার্ক মার্কেটিং সম্পর্কিত জ্ঞান লাভের জন্যঃ

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতি বা মাল্টিলেভেল পদ্ধতির আওতা বেশ বড়। অত্যাধুনিক কমিশন প্লান ও পণ্য সামগ্রীর আবিষ্কারের ফলে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতি প্রতিনিয়ত নতুন সংস্করনরূপে আসছে সেমিনার বা দু’একটি প্রশিক্ষণ গ্রহন করে এ সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করা সম্ভব নয়। সারা বিশ্বব্যাপী হাজারো নেওর্য়াকার, বিশেষজ্ঞ পরামর্শদাতা ও ডিস্ট্রিবিউটর এ ব্যবসা পদ্ধতি নিয়ে গবেষনা করে আসছে। স্বাভাবিকবাবেই প্রশিক্ষণ ব্যতীত নেটওয়ার্ক মার্কেটিং সম্পর্কিত জ্ঞান লাভ করা প্রায় অসম্ভব।

খ) বিক্রয় কৌশল আয়ত্ত করাঃ

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতি বলতেই বিক্রয় ও বিপণনের বিষয় চলে আসে। একজন ক্রেতা কিভাবে পণ্য ক্রয় করবে গতানুগতিক বিপণন পদ্ধতিতে তা সবার জানা থাকলেও নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিতে পণ্য ক্রয় বা বিক্রয় কিছুটা ভিন্ন বিধায় এ সম্পর্কে প্রশিক্ষণ গ্রহন তাকে অনেক বেশি উৎসাহী করে তুলবে। আবার দীর্ঘমেয়াদী কমিশন লাভের জন্য যে সব কৌশল বা পরিকল্পনা গ্রহন করতে হয় তা প্রশিক্ষণ গ্রহন করে সহজে আয়ত্ত করা যায়।

গ) পণ্য সম্পর্কিত ধারণা লাভঃ

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতি অনুসরনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ সাধারণত নতুন ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ পণ্য বাজারজাত করে। নতুন ও পরিবর্তিত পণ্যের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের গুণাগুন, পণ্যের বৈশিষ্ট্য ও বিশেষত্ব সম্পর্কে ধারনা লাভের জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহন করা প্রয়োজন। সাধারণত সব ধরনের পণ্য সামগ্রীর ব্যাপারে ক্রেতাদের জানা থাকেনা এবং অধিকাংশ পণ্যের গুণাগুন সম্পর্কে ধারনা থাকেনা। ডিস্ট্রিবিউটর ও লিডারদের সব পণ্য সম্পর্কে ভাল ধারনা থাকার জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহন করা উচিত।

ঘ) মনোবল বৃদ্ধিঃ

যে কোন কাজের সফলতা অনেকাংশে নির্ভর করে মনোবলের উপর দৃঢ় মনোবল দ্বারা অনেক জটিল কাজ সহজে সম্পাদন করা সম্ভব। প্রশিক্ষণ গ্রহনের পূর্বে নেটওয়ার্ক পদ্ধতি সম্পর্কে অনেকেরই স্বচ্ছ ধারনা থাকেনা যার দরুন এ সম্পর্কিত সব কিছুই অসম্ভব মনে হতে পারে। প্রশিক্ষণ গ্রহনের পর মনোবল বেড়ে যায় এবং কাজের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়। সফলতা প্রাপ্তির জন্য মনোবল বৃদ্ধি আবশ্যক আর মনোবল বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ অপরিহার্য।

ঙ) মনোভাব পরিবর্তনঃ

মানুষ দু ধরনের মনোভাব পোষণ করে এক ইতিবাচক দুই নেতিবাচক মনোভাব। মাল্টিলেভেল মার্কেটিং পদ্ধতি সম্পর্কে যারা নেতিবাচক মনোভাব পোষন করে তারা এ সম্পর্কে জানে না বলেই এমন মনোভাব প্রদর্শন করে। কিংবা তারা কিছুটা জানলেও প্রকৃত ব্যাপারটি জানেনা। যাদের মনোভাব ইতিবাচক তারা এ সম্পর্কে জানে কিংবা জানার আগ্রহ প্রকাশ করে। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং সম্পর্কে জ্ঞান লাভের জন্য কিংবা ইতিবাচক মনোভাব গঠনের জন্য প্রয়োজন সঠিক প্রশিক্ষণ এবং পাশাপাশি অধ্যয়ন। একজন ডিস্ট্রিবিউটর বা বিক্রয় প্রতিনিধি তার ডাউন-লাইন ডিস্ট্রিবিউটর বা ক্রেতাদের যত বেশি জানার সুযোগ করে দিবে সে তত বেশি ইতিবাচক মনোভাবের অধিকারী হবে।

চ) ব্যক্তিত্বের উন্নয়নঃ

উন্নত ব্যক্তিত্বের মাধ্যমে নেতৃত্ব প্রদানে অগ্রগামী হওয়া সম্ভব। পুথিঁগত বিদ্যর্জন করে অনেকেই উন্নত ব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে পারে না। বস্তুত উন্নত ব্যক্তিত্ব নেতৃত্ব প্রদানে ভূমিকা পালন করে না বরং সাফল্যের শীর্ষবিন্দুতে পৌছাঁতেত্ত সাহায্য করে। ব্যক্তিত্ব অর্জন ও নেতৃত্বলাভের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একজন সাধারণ বিক্রয় প্রতিনিধি ও অনুপম ব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে পারে। বস্তুত জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ সাফল্য অর্জনে অন্যতম হাতিয়াররূপে কাজ করে। কোন প্রশিক্ষণই মানুষের বৃথা যায় না, যদি তা সঠিকভাবে আয়ত্ত করা যায়। মানুষ নিজেকে আবিষ্কার করার কিংবা নিজের সমস্যা অনুধাবন করার শ্রেষ্ঠ হাতিয়ার প্রশিক্ষণ।
## প্রশিক্ষণকে সফলভাবে কাজে লাগানোর উপায়

প্রশিক্ষণ গ্রহন করে তা যথোপযুক্ত কাজে লাগানোর মাধ্যমেই প্রশিক্ষণের সার্থকতা অর্জিত হয়। প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য হলো সুন্দর ও সুষ্ঠভাবে কার্যসম্পাদন, পরিকল্পতি কর্মসূচী গঠন ও ফলাফল অর্জন। পরিকল্পিত উপায়ে সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ গ্রহন করে নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন করার জন্য নিন্মোক্ত পদক্ষেপ গুলো গ্রহন করা যায়।

১। আপনার ব্যবসা বা কাজটি বেছে নিনঃ

প্রথম পদক্ষেপ হলো আপনার ব্যবসা বা কাজটি বেছে নেয়া। আপনি কোন ব্যবসা বা কোন কাজটি করবেন সেটির উপর নির্ভর করবে আপনি কোন ধরনের প্রশিক্ষণ গ্রহন করবেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যবসা নির্ধারনের পর প্রশিক্ষনগুলো বেছে নিতে হবে। প্রশিক্ষন গ্রহন করে ব্যবসা নির্ধারন করতে গেলে ব্যবসারম্ভ কখনো সম্ভব হয় না। অর্থাৎ লক্ষ্য নির্ধারন করতে হবে এমন যে ‘আমি এ কাজ করবো বা যে কোন উপায়ে এ কাজ আমাকে করতেই হবে।’ নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিতে সেমিনার দেখে আপনাকে সাইন আপ-করতে হবে। এরপর ব্যবসাটির সফলতার জন্য যেসব প্রশিক্ষন প্রয়োজন তা পর্যায়ক্রমে সম্পন্ন করতে হবে।

২। ব্যবসা বা কাজের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ প্রশিক্ষণগুলো বেছে নিনঃ

প্রশিক্ষণ অনেক ধরনের হতে পারে যেমন- প্রেষণামূলক, বিক্রয় কৌশল সম্পর্কিত, নেতৃত্ব বিষয়ক প্রশিক্ষন, দলগঠন সম্পর্কিত প্রশিক্ষন ইত্যাদি। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে প্রথমেই মৌলিক প্রশিক্ষন গ্রহন অত্যাবশ্যাক। এতে এ পদ্ধতি সম্পর্কে ব্যাপক ধারনা লাভ করা যায়। এরপর বিক্রয় কৌশল সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ, লিডারশীপ প্রশিক্ষন এবং প্রেষনামূলক প্রশিক্ষনগুলো সম্পন্ন করতে হবে। আপনি প্রচলিত ধারায় ব্যবসা করছেন এমতাবস্থায় সফলতা অর্জনের জন্য কোন কোন প্রশিক্ষন গ্রহন করতে হবে তা আপনি উপলব্ধি করতে পারবেন। কিন্তু মৌলিক প্রশিক্ষন ব্যতিরেকে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিতে এগানো সম্ভব নয়। এ জন্য প্রাথমিক জ্ঞান লাভ করার পর ব্যবসার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ প্রশিক্ষন সমূহ বেছে নিন।

৩। প্রশিক্ষনের বিষয়বস্তু লিপিবদ্ধ করুনঃ

প্রশিক্ষন গ্রহনকালে প্রশিক্ষনের বিভিন্ন বিষয়গুলো লিপিবদ্ধ করে রাখুন। পরবর্তীতে যে কোন সময় তা প্রায়োজন হতে পারে। প্রশিক্ষণ গ্রহনকালে গভীর মনোযোগ দিন এবং যে বিষয়গুলো স্পষ্ঠ হয়নি তা ভালোভাবে জেনে নিন। যে কোন প্রশ্ন মনে জাগলে তা তাৎক্ষনিক প্রশিক্ষকের কাছ থেকে জেনে নিন এবং লিপিবদ্ধ করে রাখুন। কারন একজন প্রশিক্ষক জানেন কাজের কর্মসুচী কোন স্তরে গিয়ে কোন বিষয়টি প্রয়োজন হবে এবং সেভাবেই তারা সাজায়। এজন্য প্রশিক্ষনের মুহুর্তে আপনার নিকট কিছু বিষয় অপ্রয়োজনীয় মনে হলেও লিখে রাখতে ভুল করবেন না।

৪। আপনার কাজে-কর্মে প্রশিক্ষনের বিষয়গুলো প্রয়োগ করুনঃ

যে বিষয়গুলো আপনি প্রশিক্ষন গ্রহনের মাধ্যমে আয়ত করেছেন তা প্রয়োগ করুন আপনার কাজে। যেমন আপনি বিক্রয় কাজে প্রশিক্ষন হতে যা আয়ত্ব করেছেন তা প্রয়োগ করুন, কিংবা সেল্স টিমকে নেতৃত্ব প্রদানের সময় প্রেষনার কৌশলগুলো প্রয়োগ করুন। কাজের সাথে প্রশিক্ষণের বিষয়গুলোর কৌশলগুলোর সঙ্গতি আছে কিনা তা তাৎক্ষনিক বুঝতে পারবেন। প্রশিক্ষনকালে আপনি যা কিছু শিখেছেন তা কমে প্রয়োগের ক্ষেত্রে আপনি যতটা বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেবেন ততটা সফল হবেন।

৫। কাজের মূল্যায়ন করুনঃ

প্রশিক্ষণ গ্রহনের পূর্বে আপনি অনেক কাজ করেছেন এবং প্রশিক্ষন গ্রহনের পরেও আপনি কাজ করবেন। একই ধরনের কাজ না হলেও তফাৎগুলো পরখ করে দেখুন। অর্থাৎ কাজের মূল্যায়ন করুন। প্রশিক্ষনের ত্যাৎপর্য বুঝতে পারবেন। প্রশিক্ষন গ্রহনের পূর্বে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ যা কিছু অসম্ভব ছিল, অস্পষ্ট ছিল এবং কাজকে যত কঠিন মনে হচ্ছিল প্রশিক্ষনের পর তা বিপরীত মনে হবে কারন প্রশিক্ষন মনোবল বৃদ্ধির হাতিয়ার।

৬। পূনঃপূনঃ প্রশিক্ষণ গ্রহন করুনঃ

যখন এটুকু নিশ্চিত হবেন প্রশিক্ষনের দরুন আপনি সফল হচ্ছেন তখন প্রশিক্ষন বন্ধ করে দিবেন না। কারন একই প্রশিক্ষন যত বেশি করবেন তত বেশি সফলতা আসতে থাকবে। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন প্রকার প্রশিক্ষন গ্রহন করুন। আপনি যত বড় লিডার বা ডিস্ট্রিবিউটর হোন না কেন এমনকি সফল প্রশিক্ষক হলেও প্রশিক্ষন গ্রহনে কখনো দ্বিধা করবেন না। নতুন ডিস্ট্রিবিউটরদের জন্য প্রশিক্ষনের বিকল্প নেইু। ডাউন-লাইন আপনাকে অনুসরন করে কিংবা প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে যতটুকু ধারনা লাভ করবে কয়েকটি প্রশিক্ষনে তা সবটুকু অর্জন করতে পারবে। যে যত প্রশিক্ষন গ্রহন করবে সে তত বেশি জ্ঞান লাভ করবে এবং যে যত বেশি জ্ঞান লাভ করবে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ সে তত সফলতা অর্জন করবে।
## যেভাবে মূল্যবান সময়কে কাজে লাগাবেন

সময় মানুষের জীবনকে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। যিনি সময়ের ব্যাপারে সচেতন তার সাফল্য অনিবার্য। দায়িত্বশীল ব্যক্তি সময়ের সদ্ব্যবহার করে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে যোগ্যতা প্রমান করে। অনেক যোগ্য ব্যক্তি সময়ের অবহেলা করে নিজেকে অযোগ্য ব্যক্তির কাতারে শামিল করে। সফল ব্যক্তিরা প্রয়োজনের অতিরিক্ত পরিশ্রম করে না বরং সঠিক সময়ে সঠিক কাজ সম্পন্ন করে। বস্তুত সময়ের সদ্ব্যবহার জানেনা বলেই মানুষ কাজের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে। সময়ের সদ্ব্যবহারের জন্য প্রত্যেক ব্যক্তির স্ব স্ব কৌশল অবলম্বন করা উচিত। আমরা যতটা সঠিক উপায়ে সময়কে কাজে লাগাতে পারব ততটা সফল হব। নিম্নের আলোচনার মাধ্যমে আমরা সময়ের সদ্ব্যবহার সম্পর্কে আরো জানতে সক্ষম হবে। বিশেষ করে নেটওয়ার্কাররা সময়ের প্রতি বেশি সজাগ থাকে কারণ প্রতিটি মুহুর্ত তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

অভাব বা প্রয়োজন সৃষ্টি করুনঃ

সময়ের অভাব বা চাহিদা সৃষ্টি করুন। অর্থাৎ প্রথমে একটি ভাল কাজ খুঁজে বের করুন। কাজটিকে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ মনে করুন যেন যে কোন উপায়ে তা সম্পন্ন করতে হবে, দেখবেন সময় ঠিকই আপনি বের করে নিয়েছেন। কাজকে যতবেশি প্রয়োজনীয় ভাববেন সময় আপনি তত বেশি পাবেন।

সময় সাশ্রয় করুন

যে কাজ সকাল নয়টা হতে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত করে প্রতিদিন শেষ করেন। তা যদি বিচক্ষনতার সহিত বিকাল তিনটার পূর্বে শেষ করতে পারেন তবে দু’ঘন্টা সময় সাশ্রয় করলেন। একজন নেটওর্য়াকার অফিসে আসার পূর্বেই পরিকল্পনা সেরে ফেলেন কোন কাজটি আগে করলে সময় সাশ্রয় হবে বা কোন দিকে গেলে দুটি কাজ একত্রে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে এতে একটি কাজের সময় সর্ম্পূন সাশ্রয় হবে। নেটওয়ার্কারদের সময় সাশ্রয়ের প্রতি অনেক বেশি মনোযোগী হতে হবে। কারন সময়মতো দল গুছাতে না পারলে এ জন্য অনেক বেশি শ্রম ও সময় প্রদান করতে হয়।

সময়ের অপচয় রোধ করুন

আমরা সাধারনত কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন কথা-বার্তায় মগ্ন হই। যেমন আপনি কোন কাজ করতে করতে কথা বলবেন তো কাজটি সঠিক বা নিখূঁত হবার সম্ভাবনা কমে যাবে। এতে সময়ের অপচয় হয় বেশি। আলস্যতা ও ধীরে চলার কারনে সময়ের অপব্যবহার হয়ে থাকে। সঠিক কাজ সঠিক সময়ে সম্পাদনের মাধ্যমে আমরা সময়ের সদ্ব্যবহার করতে পারি। যে কোন একটি কাজ আরম্ভ করার পর তা সম্পন্ন করার পর নতুন কাজে হাত দেওয়া উচিত দুটি কাজ একত্রে আরম্ভ করলে কোনটিই না হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এতে সময়ের অপচয় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি।

পরিকল্পিত উপায়ে কাজ করুন

পরিকল্পনা মাফিক কাজ করার মাধ্যমে সময়ের সঠিক ব্যবহার হয়। নেটওয়ার্কারদের বিভিন্ন কর্ম পরিকল্পনায় সময়ের গুরুত্ব দিতে হবে বেশি। একাটি কাজ নিয়ে পুরোদিন ব্যস্ত থাকলে অন্যান্য কাজের সময় পাওয়া বেশ কঠিন। সময় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অনেকগুলো কাজ সঠিক সময়ে যথার্থভাবে করা যায়।

অন্যদের প্রেষিত করুন

আপনি নিজে যতই সময় সচেতন হোন না কেন আপনার সহকর্মী বা ডাউন-লাইন, আপ-লাইন কর্মীরা এ ব্যাপারে উদাসীন হলে তা আপনার উপর প্রভাব ফেলবে। যারা সময়ের মূল্যায়ন করে না তারা আপনার সময়ের বা কাজের মূল্যায়ন করবে না। যা আপনার কর্মদ্যোম এ নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এজন্য কাজের গুরুত্ব ও সময়ের প্রতি মনোযোগী হওয়ার জন্য অন্যদের উৎসাহ দিন। আপনার চারপাশের লোকজনের কর্মস্পৃহা দেখে আপনার নিজের মাঝেও উদ্দীপনা তৈরী হবে।

অপ্রয়োজনীয় কাজ বাদ দিন

অপ্রয়োজনীয় ও অনাহুত কাজ বাদ দিন। কাজের প্রতি একাগ্রতা না থাকলে বিভিন্ন ইচ্ছা জাগ্তে শুরু করবে যেমন, চা-সিগারেট পান করা ইত্যাদি। মোদ্দা কথা কাজ ও সময়ের প্রতি যাদের সচেতনতা নেই তারা বিশেষ করে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং পদ্ধতিতে সফল হতে পারে না বরং অন্যদের ক্ষতিসাধন করে।

মূল্যবান সময়কে কে কতটা কাজে লাগাতে পারে তা নির্ভর করে তার মনোভাবের উপর। নেটওর্য়াকার মার্কেটিং এ ইতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন মানুষ কখনো অন্যদের কাজে ব্যাঘাত ঘটায় না। সহযোগিতা পূর্ন মনোভাবের দরুন মাল্টিলেভেল মার্কেটিং পদ্ধতিতে প্রত্যেকে সময়ের চেয়ে দ্রুত সাফল্য লাভ করতে সক্ষম হয়। এজন্য সময়ের সদ্ব্যবহার জানতে হবে প্রত্যেককে।
## ডিস্ট্রিবিউটরগণ যেভাবে ব্যবসার পরিকল্পনা গঠন করবেন

যে কোন কাজের সফলতা অনেকাংশে নির্ভর করে সঠিক পরিকল্পনার উপর। কাজ ও সময়ের উপর ভিত্তি করে পরিকল্পনা গঠন করা যায় দু উপায়ে যেমনঃ স্বল্প মেয়াদী পরিকল্পনা ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ ব্যক্তিগত ও দলীয় লক্ষ্য অর্জনের জন্য স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা অনেক বেশি ফলপ্রসু হয়। স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহন করা হয় এক হতে তিন মাসের মধ্যে আবার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহন করা হয় ছয় হতে এক বছর সময় হাতে রেখে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য নিম্নলিখিত ধাপসমূহ অনুসরন করলে সাফল্য অর্জন বহুলাংশে ফলপ্রসু হয়ে থাকে।

ক) পছন্দসই কাজ বা ব্যবসাটি বাছাইকরনঃ

পরিকল্পনার প্রথম ধাপে আপনাকে পছন্দের কাজটি বেছে নিতে হবে। বিক্রয়কর্মী হিসেবে যে প্রতিষ্ঠানে আপনি কাজ করতে ইচ্ছুক সে প্রতিষ্ঠানের পণ্য সামগ্রীর ধরন, কমিশন প্লান ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধাদি পর্যবেক্ষন করে সিদ্ধান্তগ্রহন করুন।

খ) লক্ষ্য প্রতিষ্ঠা করুনঃ

লক্ষ্য নির্ধারন ব্যতীত কোন কাজটিই সফল সম্পন্ন হয় না। লক্ষ্য নির্ধারন ও এর প্রতিষ্ঠা ছাড়া পরিকল্পনা গঠন করা যায় না। লক্ষ্য প্রতিষ্ঠার জন্য একজন ডিস্ট্রিবিউটর বা বিক্রয়কর্মী হিসেবে আপনাকে কিছু প্রশ্নউত্তর খুঁজে নিতে হবে। যেমন-

-১ আপনি কি করতে যাচ্ছেন?

-২ আপনি কোথায় করতে যাচ্ছেন?

-৩ আপনি কিভাবে করতে যাচ্ছেন?

-৪ আপনি কেন করতে যাচ্ছেন?

এ জাতীয় কিছু প্রশ্ন তৈরী করে নিজে এর সঠিক উত্তর সংগ্রহ করুন, এতে আপনার কাজের উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য প্রতিষ্ঠা সহজতর হবে। ব্যবসা সম্পর্কিত যেসব প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসা আপনার মনে প্রথমে আসবে লিপিবন্ধকরে সমাধান বের করে নিন। এতে পরিকল্পনা প্রসু্ততে অনেকবেশি অগ্রগামী হতে পারবেন।

গ) কাজের পরিবেশ নিরীক্ষা করুনঃ

আপনার ব্যবসাটি বাছাই করার পর লক্ষ্য প্রতিষ্টা করে যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে চাচ্ছেন সে প্রতিষ্ঠানের কর্ম পরিবেশ নিরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সচরাচর দেখা যায় পিরামীড স্ক্রীম, মানিগেম ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন শ্রেনীর লোকের সমাগম হলেও সুষ্ঠ কাজের পরিবেশ থাকেনা। কিন্তু সঠিক পদ্ধতিতে চলমান নেটওয়ার্ক মার্কেটিং প্রতিষ্ঠান সমূহে কাজের সুন্দর পরিবেশ বজায় থাকে। শিক্ষামূলক ও প্রেষনাদায়ক কাজের পরিবেশ নতুন ও পুরাতন সকল ক্রেতা ও বিক্রয়কর্মীদের কাজের প্রতি উৎসাহী করে তোলে। এজন্য পরিকল্পনা গঠনের প্রাক্কালে কাজের পরিবেশ নিরীক্ষা আবশ্যক।

ঘ) সময় নির্ধারন করুনঃ

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ সময় নির্ধারন গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিতে পার্ট টাইম কিংবা ফুলটাইম ব্যবসা করার সুযোগ থাকে। নেটওর্য়াকার হিসেবে নিজের কাজের পরিধি ও প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে ফিল্ডওয়ার্ক ও অফিস টাইম এ দুটো ভাল করে নিন। পরিকল্পনা গঠনের প্রাককালে সময় ব্যবস্থাপনা বা সময় বন্টন। নির্ধারন এ জন্যই প্রয়োজনীয় যে সঠিক সময়ে সঠিক কাজ ও সময়ের মূল্যায়ন ব্যতীত সফলতা অর্জন অসম্ভব কিভাবে সময় বন্টন করবেন এ্ বিষয়ে একটি ছক তৈরী করুন। ছকটি নির্ভর করবে আপনি সারাদিন না ফুলটাইম প্রদান করবেন না পার্টটাইম করবেন। আবার একজন সিনিয়র ডিস্ট্রিবিউটর বা লিডারের সময় নির্ধারন ও একজন নতুন ডিস্ট্রিবিউটর বা ক্রেতার পরিকল্পনা একই ধরনের হবে না।

ঙ) প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করুনঃ

পরিকল্পনার এ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সংগ্রহ ও এর সংরক্ষন করতে হবে। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বলতে আমরা সাধারণত পণ্য তালিকা, সেমিনার ও প্রশিক্ষণ সময়সূচী, কমিশন প্লান কাগজ-কলম, ভিজিটিং কার্ড ইত্যাদি বুঝে থাকি। আপনার কোম্পানী যে পণ্য সামগ্রী বা সেবা নিয়ে ব্যবসা করছে তার নমূনা (পারতপক্ষে) সংগ্রহ করনি। পাশাপাশি কোম্পানীর বিক্রয়ত্তোর সেবা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারনা রাখুন। এছাড়াও নতুন ক্রেতা বা ডিস্ট্রিবিউটরদের পরামর্শ প্রদান কাজ বন্টন, ব্যবসায়িক পরিকল্পনা তৈরীর জন্য যেসব উপকরন প্রয়োজন তা হাতের কাছে রাখুন। মনে রাখতে হবে অপ্রয়োজনীয় মুহূর্তে সকল সরঞ্জাম প্রদর্শন ক্রেতা ও অতিথিদের মনে ইতিবাচক সাড়া ফেলে।

চ) বাজেট নির্ধারনঃ

পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য নির্দিষ্ট পরিমান বাজেট নির্ধারন পরিকল্পনাকে বাস্তবে রূপ প্রদানে সহায়ক হয়। অফিসিয়াল দ্রব্যদির খরচ, গ্রুপ বা টীমের যাবতীয় খরচ নির্বাহের জন্য আর্থিক বাজেট নির্ধারন করতে হবে। নতুনদের মাঠ পর্যায়ে কাজ করানোর জন্য আর্থিক সহায়তা প্রেষনা হিসেবে কাজ করে। এক্ষেত্রে সিনিয়র বা লিডারদের পরামর্শ গ্রহন ফলপ্রসু হয়।
## টেলিফোনে আলাপ করার কয়েকটি কৌশল

বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যবহার করে আমরা অতিথি বা নতুন ডিস্ট্রিবিউটরদের সহিত যোগাযোগ করতে পারি। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে সহজ ও গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো টেলিফোন। মনের ভাব প্রকাশ করা ও কুশল বিনিময়ের অন্যতম পন্থা টেলিফোনিক আলাপ। আমরা নিম্নোক্ত কিছু বিষয়ের প্রতি অবশ্যই লক্ষ্য রাখব যা পরবর্তীতে সফলতা অর্জনে সহায়ক হবে।

১। নিজেকে তৈরী করে নিন

মানসিকভাবে নিজেকে প্রথমে প্রস্তুত করে নিন যা আপনাকে একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ আত্নবিশ্বাসী না হলে আপনার ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে বেশি কি ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে পারেন তার একটি সম্ভাব্য তালিকা প্রস্তুত করুন এবং তা চর্চা করুন।

২। সঠিকভাবে স্ক্রিপট তৈরী করুন

টেলিফোনিক আলোচনার পূর্বে একটি স্ত্রিপট তৈরী করে হাতে রাখুন। টেলিফোনে আলোচনার সময় অনেক কিছু তাৎক্ষণিক আপনার মনে নাও আসতে পারে। এজন্য স্ক্রিপট উল্লেখিত পয়েন্টগুলো আলোচনায় সহায়ক হবে। সঠিকও নির্ভুল তথ্য দিয়ে স্ত্রিপট তৈরী করুন যাতে গ্রহীতা বিভ্রান্ত না হন।

৩। গ্রহীতার মনোযোগের প্রতি লক্ষ্য রাখুন

যে উদ্দেশ্যে ফোন করেছেন তা যেন কোন অবস্থাতেই ভেস্তে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। এজন্য গ্রহীতা কতটুকু আগ্রহ বা মনোযোগ গিয়ে আপনার কথাগুলো শুনছে তার প্রতি সজাগ থাকুন। সাধারণত গ্রহীতা কোন কাজে ব্যস্ত থাকলে আপনার সুন্দর কথাগুলো ও তার নিকট বিরক্তিকর মনে হবে ফলে ব্যবসার ইতিবাচক দিকগুলো সে ভালোভাবে গ্রহন লাভ করতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি প্রসঙ্গ পাল্টিয়ে নিন এবং পরবর্তীতে আলোচনার প্রস্তাব জানিয়ে সৌজন্যতার সহিত বিদায় নিন। টেলিফোনে কথা বলার সময় গ্রহীতাকে আগ্রহী মনে হবে যখন তখন সামনা সামনি আলোচনার প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিন।

৪। শুনতে অভ্যস্ত হউন

নিজেকে ভালো শ্রোতা হিসেবে তৈরী করে নিন। আপনার পরিচিতজনের নিকট ফোন করার পর খুব স্বাভাবিক যে তিনি আপনার ব্যাপারে জানতে চাইবেন এবং তার নিজের সাফল্য ও সমস্যা আপনাকে শুনাতে চাইবেন। এতে তিনি দীর্ঘ সময় নিলেও তা আপনাকে ধৈর্য্য সহকারে শুনতে হবে। আপনার শোনার অনাগ্রহ তিনি যাতে কোন অবস্থায় বুঝতে না পারেন। সাধারণত মানুষ শোনার চেয়ে বলতে অভ্যস্ত, কিন্তু আপনাকে শুনার অভ্যস্ত হতে হবে। দ্বিমুখী আলোচনায় কোন প্রকার নেতিবাচক মনোভাব আপনার সাফল্যের অন্তরায়। এজন্য ইতিবাচক মনোভাব ও আলোচনা একান্ত প্রয়োজন।

৫। ধৈর্য্যশীল হউন

সম্ভাবনাময় ক্রেতার নিকট ফোন করার সময় ধৈর্য্যশীল হতে হবে। সাধারণত প্রথমবার ব্যবসার বিষয় সম্পর্কে আপনি আলোচনার সুযোগ নাও পেতে পারেন। পূণরায় সময় চেয়ে নিন এবং সুযোগ বুঝে ব্যবসার সম্ভাবনার কথা বলুন। মনে রাখবেন যে শ্রোতা যত বেশি সময় নিবে আর কার্যক্রম তত ইতিবাচক হবে।

৬। কন্ঠস্বর রাখুন

বিক্রয়কর্মীদের ন্যায় কথাবার্তা থেকে বিরত থাকুন এক কন্ঠস্বর রাখুন। গ্রহীতা (অতিথি) কে সুযোগ প্রদান করবেন এমন ধারনার চেয়ে তাকে সম্ভাবনাময় ব্যবসার পরামর্শ দিচ্ছেন প্রথম আচরন করুন আপনার কন্ঠস্বর ও কথাবার্তার- মাধ্যমে সম্ভাবনাময় গ্রাহক হয়তো বুঝে নিতে পারেন আপনি কোন ব্যবসার কথা বলছেন, এক্ষেত্রে আপনি ইতিবাচক মনোভাব প্রদর্শন করুন এবং আপনার কার্যক্রম দেখার আমন্ত্রন করুন।

৭। পূনঃপূনঃ ফোন করবেন না

আপনি প্রথমবার ফোন করে ব্যর্থ হওয়ার পর অর্থাৎ গ্রাহক সম্পূর্ণ নেতিবাচক মনোভাব প্রদর্শনের পর আপনি পূনরায় ফোন করবেন না। আপনি দ্বিতীয় কোন মাধ্যম ব্যবহার করে তার সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলুন এবং এমন পরিবেশ তৈরী করুন যাতে গ্রাহক নিজেই আপনাকে ফোন করে। এবার গ্রাহকের আগ্রহ যাচাই করে আলোচনায় বসুন। সম্ভাবনাময় গ্রাহকের সাথে আলোচনার পূর্বে প্রয়োজনে আপনার দলনেতার সহিত আলোচনা করে নিন।

৮। নেতিবাচক কথা বলবেন না

নেতিবাচক কথোপকখন আপনার সাফল্যের অন্তরায়। যখনি গ্রাহক নেতিবাচক মনোভাব পোষন করবেন তখনি যুক্তি দিয়ে তাকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করুন। সাধারণত নেটওয়ার্ক মার্কেটিং সম্পর্কে না জেনে শুধু লোকমুখে শুনে অনেকে মন্তব্য করে। আপনি তাকে সচক্ষে দেখার ও বুঝার আমন্ত্রণ করুন তাতে গ্রাহক অধিকতর পজেটিভ হবেনা।
## নিজেকে প্রস্তুত করুনঃ সফল হউন

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, সহ উন্নত বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশের পাশাপাশি মালয়শিয়া, ভারত প্রভৃতি দেশে বিস্তার লাভ করলেও আমাদের দেশে ততটা ব্যাপকতা ও জনপ্রিয়তা লাভ করেনি। আর এ কারণেই আমাদের অনেকের কাছে বিষয়টি নতুন। কারো মাধ্যমে যখনই আমরা নতুন কোন নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কোম্পানীতে যাব স্বাভাবিকভাবেই প্রতিটি বিষয় বিস্ময়কর মনে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে আপনি সংশ্লিষ্ট কোম্পানী, কমিশন প্লান ও পণ্য সামগ্রী সম্পর্কিত সুষ্ঠ ধারনা গ্রহন করবেন। পরবর্তীতে প্রশিক্ষন গ্রহন করে কাজের কৌশল ও আয় করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান লাভ করতে পারবেন। কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে হবে, নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য নিন্মোক্ত পথ অনুসরন করতে পারেন-

১। প্রশ্নমালা তৈরী করুনঃ

কোম্পানীর সেমিনার দেখার পর আপনার মনে যেসব প্রশ্ন জন্ম নিয়েছিল সেসব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন আপনার আপ-লাইনে ডিস্ট্রিবিউটরের কাছ থেকে। আপনার অতিথি অনুরূপ আপনার কাছে বিভিন্ন প্রশ্ন করতে পারে। ডিস্ট্রিবিউটর হিসেবে কাজ আরম্ভ করার পর সম্ভাব্য প্রশ্নগুলো লিপিবদ্ধ করে রাখুন যখন যে প্রশ্নটি আপনার মনে উদয় হবে তৎক্ষণ্যা তা লিখে রাখুন এবং সেসব প্রশ্নের উত্তর আপনার আপ-লাইন বা লিডারের কাছ থেকে জেনে নিন। আপনার মনে যে সব প্রশ্ন উদয় হতে পারে তার একটি নমুনা নিম্নে উল্লেখ করা হলো।

ক) আমি কিভাবে ব্যবসা শুরু করতে পারি? অথবা এ ব্যবসাটি আদৌ আমার দ্বারা সম্ভব হবে কিনা?

খ) আমার হাতে পর্যাপ্ত সময় নেই ব্যবসাটিতে ব্যয় করব অন্য কোন উপায় আছে কি ?

গ) এখানকার পণ্যগুলো আমার প্রয়োজন নেই তাহলে ব্যবসাটি কিভাবে করব?

ঘ) এখান থেকে কতদিন পর্যন্ত আয় করতে পারব?

ঙ) আমার ডাউন লাইনের ডিস্ট্রিবিউটর সংগ্রহ করব কিভাবে?

চ) আমাদের দেশে এ পদ্ধতির সম্ভাবনা কতটুকু?

২। প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সংগ্রহ করুনঃ

আপনি যখন একটি ব্যবসা শুরু করবেন বলে সিদ্ধান্ত গ্রহন করে তখন আপনাকে পরিকল্পনা করতে হয় কিছু বিষয়ের জন্য যেমন ব্যবসার ক্ষেত্র, অবস্থান, সাজ সরঞ্জাম, কর্মচারী ও অন্যান্য আনুষাঙ্গিক দিকগুলো। পরিকল্পনা মাফিক সব কিছু সংগ্রহ করতে পারলেই আপনি ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন। অনুরূপভাবে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসা আরম্ভ করার জন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যদি সংগ্রহ করতে হবে। সাধারণত যেসব দ্রব্যাদি আমাদের কাছে রাখা প্রয়োজন সেগুলোর তালিকাটি হবে এমন-

ক) পণ্য সম্পর্কিত তালিকা ও কমিশন প্লান

খ) ভিজিটিং কার্ড ও মোবাইল

গ) কাগজ কলম, ডায়েরী ও ব্যাগ

ঘ) প্রশিক্ষন সময়সুচী ও সেমিনার সময়সুচী

ঙ) সম্ভাব্য অতিথিদের তালিকা

চ) নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর উপর লিখা কোন বই ( যা প্রাথমিক ধারনা দিতে সক্ষম) ইত্যাদি।

৩। প্রশিক্ষণ গ্রহন করুনঃ

ব্যবসা কিংবা চাকুরীতে প্রয়োজন অভিজ্ঞতা যার অভিজ্ঞতা নেই তার প্রয়োজন প্রশিক্ষন। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ প্রশিক্ষণ সফলতার চাবিকাঠি। প্রশিক্ষণ গ্রহনকারী একজন ডিস্ট্রিবিউটর প্রশিক্ষনহীন ডিস্ট্রিবিউটরের চাইতে অনেক দ্রুত সফলতা লাভ করতে পারে। কারণ প্রশিক্ষন গ্রহন করার মাধ্যমে প্রেষনা লাভ করতে পারে। নেতৃত্বেরগুণাবলী অর্জন করে, সফলতার কৌশল আয়ও করে, যোগাযোগের কৌশল লাভ করে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ সফলতকা লাভ করা যায়। প্রশিক্ষণ গ্রহনের মাধ্যমে সফলতা যাচাই করার পাশাপাশি প্রশিক্ষণার্থী ব্যর্থতার কারণ অনুধাবন করতে পারে।

৪। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং সম্পর্কিত জ্ঞান আহরন করুনঃ

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ সফলতার জন্য এ পদ্ধতি সম্পর্কিত জ্ঞান লাভ আবশ্যক। পণ্য সামগ্রী, কমিশন পদ্ধতি সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা লাভের মাধ্যমে একজন ডিস্ট্রিবিউটর এ পদ্ধতিতে অন্যদের চেয়ে একধাপ এগিয়ে যেতে পারেন। মাল্টিলেভেল সম্পর্কিত বিভিন্ন বই পুস্তক সাময়িকী পড়ার মাধ্যমে সঠিক প্রতিষ্ঠান ও সঠিক পদ্ধতি বাছাই যায়। এর ফলে ডিস্ট্রিবিউটর হিসেবে যে কেহ আরো আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেন।

৫। নেতৃত্ব দানের জন্য প্রস্তুতি নিনঃ

ব্যবসারম্ভের পর যখনই আপনি দু’একটি লেভেল বা ধাপ অতিক্রম করবেন অর্থাৎ আপনার ডাউন লাইনে ডিস্ট্রিবিউটরের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে আপনাকে নেতৃত্ব প্রদানের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। সফলভাবে স্বল্পসংখ্যক ডিস্ট্রিবিউটরকে নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে আপনি লক্ষ্য অর্জন করতে পারবেন। নেতৃত্ব প্রদানের লক্ষ্যে সফল নেতাদের অনুসরন করুন ও নেতৃত্বের গুণাবলী অধ্যয়ন করুন। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ নেতৃত্ব প্রদানের জন্য আত্মবিশ্বাস, আত্মউন্নয়ন ও বিবেচনা বোধ শক্তি বৃদ্ধি অন্যতম উপায়।

৬। সময়ের প্রতি গুরুত্ব দিনঃ

সময়ের সদ্ব্যবহার ব্যতীত সাফল্য লাভ দুঃস্বপ্ন মাত্র। কোথায়? কতখানি? কেন? সময় প্রদান করবেন তা বিশ্লেষন করুন এবং সময়ের ফলাফল যাচিই করুন। আপনার ডাউন-লাইন ডিস্ট্রিবিউটর গণ আপনাকে সময়মত যাতে কাছে পায় এবং নিজেরাও যাতে সময়ের প্রতি যত্নশীল হয় তার প্রতি আপনাকে সজাগ থাকতে হবে। অতীতে সময়কে যেভাবে কাজে লাগিয়েছেন বর্তমানে এর চেয়ে ভালভাবে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে নিজেকে তৈরী করে নিন। ডাইন-লাইন পরিবেশকদের মধ্যে যারা পার্ট টাইম ব্যবসা হিসেবে এ পদ্ধতি গ্রহন করেছে তাদের সময় প্রদান যাতে রুটিন মাফিক ও ফলপ্রসু হয় তা আপনাকেই নিশ্চিত করতে হবে।

৭। পরিশ্রম সফলতার মূলমন্ত্রঃ

শোনা যায় নেটওয়ার্ক মার্কেটিং মানেই টাকা। যারা ব্যবসারম্ভ করেছেন তারাই গাড়ি বাড়ির মালিক হয়েছেন। এমনটি মনে করার কোন কারন নেই। শুধু মাত্র পিরামিড স্ক্রীমে তা সম্ভব কিংবা মানিগেমে। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিতে এর চেয়ে অনেক বেশি সফল হওয়া যায়। তবে তা বৈধ উপায়ে। যে যত পরিশ্রম করেন, মেধা ও মনোনিবেশ করেন সে তত সাফল্য লাভ করেন। আপনার ডাউন লাইন ডিস্ট্রিবিউটরদের কখনও প্ররোচিত করবেন না মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে বরং পরিশ্রম করে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিতে স্বর্ণ শিখরে পৌঁছার সুনির্দিষ্ট উদাহরন দিন।

৮। শক্তিশালী টীম গঠনের ব্রতি হউনঃ

সুউচ্চ অট্টালিকা তৈরীর জন্য যেমন মজবুত ভিত্তি প্রয়োজন তেমনি নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ সাফল্য অর্জনের জন্য শক্তিশালী টীম বা দল প্রয়োজন। শক্তিশালী দল গঠনের জন্য প্রশিক্ষন গ্রহনের পাশাপাশি দলীয় পরিকল্পনা গ্রহন, লক্ষ্য নির্ধারন ও বিক্রয় বৃদ্ধির কৌশল আলোচনা, ও তথ্য আদান প্রদান ফলপ্রসু। বৃহদাকৃতির দলকে ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ করে লক্ষ্য নির্ধারন করতে হবে। প্রতিটি গ্রুপ বা দলেল মনোভাব হতে হবে সহযোগিতা মূলক। এর ফলে প্রত্যেকের সফলতা সম্ভব। পরিশেষে বলা যায়, সব কিছুর মূলে সাফল্যের মূল স্তম্ভ স্বদিচ্ছা। স্বদিচ্ছা থাকলে সুউপায় ও সুকৌশল উদ্ভাবিত হয়। যার দ্বারা সফলতা অর্জন সহজতর হয়।
## সফল হওয়ার জন্য ডিস্ট্রিবিউটরদের যেসব গুণাবলী থাকা প্রয়োজন

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিতে সকলেই সাফল্য লাভ করতে পারে না। সাফল্য লাভের জন্য প্রয়োজন পরিশ্রম, অধ্যয়ন ও অনুশীলন। যে যত বেশি পরিশ্রম করবে তার সফল হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে তত বেশি, যে যত বেশি অধ্যয়ন করবে সে তত বেশি পরিকল্পিত উপায়ে পরিশ্রমকে কাজে লাগাতে পারবে এবং যত বেশি অনুশীলন করবে সে তত বেশি সফলতা অর্জন করবে। ডিস্ট্রিবিউটরদের ব্যক্তিগত গুণাবলীর উপর তার সফলতা নির্ভর করে। সফলতা লাভের জন্য একজন ডিস্ট্রিবিউটরদের যেসব গুণাবলী থাকা প্রয়োজন তা হলো-

১। আত্মবিশ্বাসঃ

আত্মবিশ্বাসে বলিয়ান মানুষ যে কোন কাজ সফলভাবে সাথে সম্পাদন করতে পারে। কোন কাজ শুরু করার পূর্বেই যারা ফলাফল প্রত্যাশা করে তারা কখনো সফল হতে পারে না। কথায় আছে, মানুষ যা বিশ্বাস করে তা অর্জন করে। এ বিশ্বাসের পেছনে একাগ্রতা, মেধা ও দৃঢ় মনোবল বিদ্যমান প্রতিটি আবিষ্কারের পেছনে আত্মবিশ্বাস অন্যতম প্রেরণা হিসেবে কাজ করে। যিনি বিশ্বাস করেন নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ সফলতা অর্জন তার পক্ষে সম্ভব, তিনি অবশ্যই সফল হবেন।

২। ইতিবাচক মনোভাবঃ

ইতিবাচক মনোভাব ব্যতীত মাল্টিলেভেল মার্কেটিং ব্যবসায় কোন কিছুই অর্জন করা যায় না। নেতিবাচক মানুষ শুরুই করতে চায় না কারন তারা শুরুর আগেই মনের মধ্যে হাজারো প্রশ্ন নিয়ে আসে। অর্থাৎ কেন করব? কেন যাব? কেন পাব? ইত্যাদি নানা প্রশ্ন। ইতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন মানুষ আগে জেনে নেয়, শিখে নেয় এবং অনুশীলন করে তারপর এগোয়। সফল ডিস্ট্রিবিউটর হতে হলে চাই ইতিবাচক মনোভাব, জয়ের আকাঙ্খা আর নতুনকে আলিঙ্গন করার মনোবৃত্তি।

৩। দৃঢ় মনোবলঃ

নেটওর্য়াকারদের দৃঢ় মনোবল তাদের সাফল্যের পথ দেখিয়ে দেয়।। নিজের কাজের প্রতি আস্থা না থাকলে যে কোন সময় তা বিনষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ডিস্ট্রিবিউটরদের দৃঢ় মনোবল ডাউন-লাইন ডিস্ট্রিবিউটরদের কাজের প্রতি উৎসাহ বাড়ায়। দৃঢ় মনোবলের দরুন মানুষের কোন পরিশ্রমই বৃথা যায়না। প্রথমিক ফলাফল যাই হোক না কেন দৃঢ় মনোবলের সহিত কাজ করলে চূড়ান্ত সফলতা একদিন আসবেই এজন্য প্রত্যেক ডিস্ট্রিবিউটরকে দৃঢ় মনোবলের অধিকারী হতে হবে।

৪। ধৈর্য্যঃ

ধৈর্য্য মানুষের বড়গুন। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ বিষয়টি সম্পূর্ণ সত্য। যার ধৈর্য্য নেই সে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ টিকে থাকতে পারে না। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং তাৎক্ষণিক ফল লাভের কোন বিষয় নয়। সময়ের সাথে সাথে এ পদ্ধতিতে ফল আসতে শুরু করে। প্রথমত এটি একটি নতুন মার্কেটিং সিস্টেম এবং অবিশ্বাস্য আয়ের পথ এজন্য প্রাথমিক অবস্থায় নতুন ক্রেতা (এসপেক্ট) এ পদ্ধতি গ্রহন লাভ করতে পারে। এসময় ডিস্ট্রিবিউটররা অধ্যবসায়ের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। প্রতিটি ব্যর্থতাকে এক একটি অভিজ্ঞতা হিসেবে মেনে নিতে হবে। আর এসব অভিজ্ঞতা থেকে শিখে নতুন উদ্যেমে কাজ করতে হবে তবেই সাফল্য অর্জন সম্ভব।

৫। প্রেষনাঃ

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিতে কাউকে বাধ্য করে কিংবা শর্ত প্রদান করে কাজ আদায় করা যায় না বরং প্রেষনার মাধ্যমে কাজের প্রতি অনুরাগী করে তোলা যায়। আর্থিক প্রেষনার চেয়ে অনার্থিক প্রেষনা অনেক বেশি ফলপ্রসু। এজন্য চাই সুন্দর বচনভঙ্গী, আন্তরিকতা ও সহযোগিতা। ডিস্ট্রিবিউটররা নতুনদের কাজের প্রতি মনোযোগী হওয়ার পাশাপাশি বোনাস ও প্রমোশন অর্জনের জন্য প্রেষনা প্রদান করতে হবে। প্রেষিত করার ক্ষমতা যার যত বেশি সফলতা অর্জনের সম্ভাবনাও তার তত বেশি।

৬। সহযোগিতাঃ

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ একের হাত ধরে অন্যের প্রবেশ, একের সহযোগিতায় অন্যের এগোয় এবং একের প্রচেষ্টায় অন্যরা সফলতা অর্জন করে। আপ-লাইন কিংবা ডাউন-লাইন প্রত্যেকের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে হবে কারন নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিতে একে অন্যের সহযোগিতা ব্যতীত লক্ষ্য অর্জন করতে পারে না। সহযোগিতাপূর্ণ পরিবেশের জন্যই নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিকে রিলেশনশীপ মার্কেটিং বলা হয়।

৭। সময়জ্ঞানঃ

সময়ের প্রতিটি মূহুর্ত নেটওর্য়াকারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং স্বাধীন ব্যাখ্যা হলেও আজকের কাজ আগামী দিনের জন্য যারা ফেলে রাখে তারা নিজ হাতে ভাগ্যকে দূরে ঠেলে দেয়। ডিস্ট্রিবিউটরদেকে সময়ের প্রতি এতটাই প্রাধান্য দিতে হবে যেন নতুনরা তা অনুসরন করে। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ আজকের কাজ আজই করতে হবে, আগামী কালের জন্য যারা অপেক্ষা করে তারা সাফল্যের পথে পিছিয়ে যাবে। এজন্য দেখা যায় পরে জয়েন করে ও অনেকেই এগিয়ে যায়। এটি সম্ভব নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ কারণ এখানে প্রত্যেকের পারফরমেন্স অনুযায়ী প্রত্যেকে ফল লাভ করে। এজন্য সকল ডিস্ট্রিবিউটরদের সময়জ্ঞান থাকা উচিত।

৮। দায়িত্বশীলতাঃ

সফল হতে হলে ডিস্ট্রিবিউটরদের দায়িত্বশীল হওয়া অত্যাবশ্যক। ডিস্ট্রিবিউটরদের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দায়িত্ব প্রদান করে তা পালন করিয়ে নেয়ার অভ্যাস থাকতে হবে। দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা জীবনের কোন পর্যায়ে পরিশ্রম করে ব্যর্থ হয় না। আবার যাদের দায়িত্ববোধ বেশি তারা কখনো হতাশ হয়না।

৯। উচ্চাকাঙ্খাঃ

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ সফল হওয়ার জন্য উচ্চাকাঙ্খা থাকতে হবে । কারণ উচ্চাকাঙ্খা মানুষের মাঝে তাড়না সৃষ্টি করে লক্ষ্য পূরনের জন্য। ইতিবাচক ডিস্ট্রিবিউটর উচ্চাকাঙ্খা পোষন করে মেধা, শ্রম ও সৃজনশীলতা দিয়ে কাঙ্খিত ফল অর্জন করে।

১০। জ্ঞানান্বেষণঃ

অর্থ প্রতিপত্তি আর সম্মানের জন্য জ্ঞার্নাজন অপরিহার্য। যে যেই বিষয়ে পারদর্শী সে সেই বিষয়ে সফল হয়, বিষয় ভিত্তিক পারদর্শিতার জন্য প্রয়োজন অধ্যয়ন ও অনুশীলন। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর বিশাল ভান্ডারের আংশিক জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমেও নিজেকে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে আসীন করতে পারে যে কোন ডিস্ট্রিবিউটর। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতি বিষয়ে জানতে হলে এ বিষয়ে অধ্যয়ন করতে হবে, বিভিন্ন বই পুস্তক পড়তে হবে এবং বিশ্বের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে।

## নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ গ্রুপ বা দলের সুবিধাসমূহ

মানুষ সামাজিক জীবন। প্রাচীন কাল থেকে মানুষ দল বদ্ধ হয়ে বসবাস করে আসছে। কোন নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য মানুষ দল গঠন করে মানুষ এককভাবে যা সম্পাদন করতে পারে না তা দলীয়ভাবে সম্পন্ন করতে পারে। নিজের ও সংগঠনের প্রয়োজনেই মানুষ দল বা গ্রুপ তৈরী করে। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসায় দল গঠন করতে লিডাররাই মূল ভূমিকা পালন করে। লিডাররা একটি একটি দল বা গ্রুপের নেতৃত্ব প্রদান করে ডিস্ট্রিবিউটরদের প্রেরনা যোগ্যতে সহায়তা করে। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ দল গঠনের সুবিধা সমূহ নিম্নে আলোচনা করা হলো

১. সহজে কার্য সম্পাদনঃ

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং বা অন্য যে কোন কাজ যখন একজন ডিস্ট্রিবিউটর একক প্রচেষ্ঠায় সম্পন্ন করতে পারে না তখন অনেকে মিলে সে কাজ সম্মলিত ভাবে সহজেই সম্পন্ন করতে পারে। এতে দলের সকলেই কম বেশি উপকৃত হয়ে থাকেনা। দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে একজন অন্যের উপর আস্থা রাখতে হবে।

২. কাজের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধিঃ

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসায় বিক্রয়কর্মী বা ডিস্ট্রিবিউটরদের কাজের প্রতি আগ্রহের উপরই নির্ভর করে সাফল্য। দলবদ্ধভাবে কাজ করার মাধ্যমে প্রত্যেকের আগ্রহ অনেকাংশে বেড়ে যায়। দলের অনেকের সফলতা দেখে নতুনরা কাজ করার আগ্রহ প্রদর্শন করে। এ ধরনের পদ্ধতিতে একজনের সফলতা অনেকাংশে অন্যের উপর নির্ভরশীল যার দরুন একে অন্যের সহযোগিতায় এগিয়ে আসে।

৩. মর্যাদা ও তৃপ্তি লাভঃ

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিতে দল গঠনের মাধ্যমে ডিস্ট্রিবিউটরগণ সাফল্য অর্জন করে যেমন তৃপ্তিলাভ করে তেমনি বড় দলে কাজ করার দরুন মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। একজন ডিস্ট্রিবিউটর পর্যায়ক্রমে যখন দলের নেতৃত্ব লাভ করে দলের অন্যরাও অধিক পরিশ্রম করে সাফল্য অর্জনের প্রচেষ্ঠা করে।

৪. দলীয় শক্তি বৃহৎ শক্তিঃ

একটি দল বা গ্রুপে একাধিক ডিস্ট্রিবিউটর ও লিডার থাকে বিধায় সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় একটি বৃহৎ শক্তি গড়ে উঠে। এ শক্তির উপর ভিত্তি করে অনেক জটিল কাজ সহজে সমাধান কার যায়। দলীয় শক্তির উপর ভিত্তি করে তৈরী হয় বড় নেটওয়ার্ক যা সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেয়।

৫. সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহনঃ

দলীয় সিদ্ধান্ত নেটওয়ার্ক পদ্ধতিতে খুবই ফলপ্রসু। সমন্বয় আমরা দেখতে এককভাবে গৃহীত সিদ্ধান্তের চেয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত অনেক বেশি কার্যকর। অনেকগুলো মস্তিষ্ক যখন আলোচনায় বসে কোন সিদ্ধান্তগ্রহন করে তা সফল হয়েই থাকে কারন এক্ষেত্রে অনেক মেধা ও অভিজ্ঞতার সমন্বয় ঘটে।

৬. নিয়ম শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠাঃ

প্রত্যেকটি দল বা গ্রুপের কিছু নিয়ম-নীতি, আচরনবিধি ও দলীয় আদর্শ থাকে। একজন ডিস্ট্রিবিউটর দল ভূক্ত হওয়ার সাথে সাথে ঐ নিয়মনীতি ও বিধিসমূহ মেনে চলে। প্রত্যেক দল বা গ্রুপের দলীয় নিয়ম শৃঙ্খলার দরুন সম্পূর্ন প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়।

৭. প্রেষনা বৃদ্ধিঃ

দলে অন্তগত একে অন্যের কাজে সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদানের দরুন কাজের গতি বৃদ্ধি পায়। দলীয় গতিশীলতা ডিস্ট্রিবিউটরদের প্রেষনা যোগায়। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিতে আপ-লাইন ডিস্ট্রিবিউটর নিজের অগ্রগতির জন্য ডাউন লাইন ডিস্ট্রিবিউটরদের প্রেষনা প্রদান করে। এসব প্রেষনা প্রদানের জন্য বিভিন্ন প্রকার পুরষ্কার ও বোনাস প্রদান করে দলের পক্ষ হতে। পারস্পরিক সম্পর্ক সৃষ্টির জন্যই দলে প্রেষনামূলক পরিবেশ বজায় থাকে।

৮. মনোবল বৃদ্ধিঃ

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিতে প্রতিটি গ্রুপ বা দল মনোবল বৃদ্ধির ক্ষেত্র হিসেবে কাজ করে। এক একটি দলে ডিস্ট্রিবিউটর, সিনিয়র ডিস্ট্রিবিউটর ও নতুনদের সহিত আপ-লাইন লিডারদের যোগাযোগ থাকে বিধায় একের সাফল্য অন্যের মনোবল বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়। স্বাভাবিকভাবেই নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া ও আন্তরিকতা থাকে বিধায় এ পদ্ধতিতে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে উঠে যা নতুনদের মনোবল বাড়িয়ে দেয়।

৯. যোগাযোগ উন্নয়নঃ

নেটওর্য়াকারদের সহিত ডিস্ট্রিবিউটর ও নতুনদের যোগাযোগ যত সহজতর হয় তত বেশি সফলতা অর্জিত হয়। লিডার ও ডিস্ট্রিবিউটর একে অন্যের সহিত দুরত্ব বা ব্যবধান কমানোর মাধ্যমে দলীয় তৎপরতা বৃদ্ধি ঘটে। এককথায় তথ্যের আদান প্রদান আন্ত সম্পর্ক তৈরীর জন্য যোগাযোগ অপরিহার্য যা অর্জিত হয় দল গঠনের মাধ্যমে।

১০. প্রশিক্ষনঃ

সাধারণত নেটওয়ার্ক মার্কেটিং প্রতিষ্ঠান নানাধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহন করে থাকে এ ছাড়াও লিডাররা গ্রুপ বা দলের অভ্যন্তরে বিভিন্ন প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা গ্রহন করে যা দলীয় লক্ষ্য অর্জনে ফলপ্রসু হয়ে থাকে। সার্বিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সফল হওয়ার জন্য কোম্পানী বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করলেও বিভিন্ন দলের সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ কর্মসূচী সফলভাবে সম্পন্ন হয়।

 Kazi ashraful Islam 

Enloving international 

Founder distributor 

Contact : +60196536002

Kuala Lumpur ,Malaysia