আমরা প্রতিটি মানুষই ছোটবেলা থেকে জেনে এসেছি যে, সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা। আপনার জীবনের যে কোনো ক্ষেত্রেই সততার প্রয়োজন অনস্বীকার্য। কারণ সততা ছাড়া আপনি কোনো ক্ষেত্রেই ভালো কিছু করতে পারবেন না, এমনকি তা আশা করাও আপনার জন্য ভুল। অসৎ পথে উপার্জন করলে আপনি আর্থিকভাবে সফল হলেও মানসিকভাবে সফল নন। কিন্তু সততা ধনী এবং দরিদ্র কারোরই একচেটিয়া নয়। ২ দলের মধ্যে যে কেউ সৎ বা অসৎ হতে পারে। আত্মসম্মানবোধ কম থাকলে অসমতা আসে। সত্যিকার সততা সঠিক কাজ করার ইচ্ছা থেকে পরিচালিত হয়, ধরা পড়ার ভয়ে নয়, তা কিছু লুকাতে চায় না। অনেকে মনে করেন যে, সততা তাদের সীমিত করে দেয়। বস্তুত উল্টোটাই সত্য। সততা লোকদের মিথ্যা থেকে মুক্ত করে এমন একটি পরিবেশের সৃষ্টি করে, যেখানে তারা খোলাখুলিভাবে আলাপ-আলোচনা করতে পারে, কাজে ঝুঁকি নিতে পারে এবং সৃজনশীল হতে পারে।
একটি কথা আমরা বরাবরই শুনে থাকি যে, অন্যের জন্য গর্ত খুঁড়লে সে গর্তে একসময় নিজেকে পড়তে হয়। এমন একজন বিত্তশালী কন্ট্রাক্টর তার ৩৫ বছরের সুপারভাইজারকে বলল, আমি একটা শেষ বাড়ি তৈরি করব, কিন্তু আমি এক বছরের জন্য চলে যাচ্ছি তাই বাড়িটা আমার হয়ে তুমি তৈরি করবে। অবশ্যই ভালো জিনিস ব্যবহার করবে, টাকার জন্য ভাববে না। এতদিন আমরা যে বাড়ি তৈরি করেছি, এ বাড়িটা সবটার চেয়ে শ্রেষ্ঠ হওয়া চাই। লোকটি নির্দেশ দিয়ে চলে গেল। সুপারভাইজারের শুরু হল_ ঈদ আনন্দ। কারণ তার টাকা কমানোর সহজ রাস্তা করে দিয়েছেন কন্ট্রাক্টর। সে বাড়ির ভেতর দিকে অত্যন্ত সস্তা জিনিস ব্যবহার করল এবং বাড়িটার ডিজাইন বা কারুকাজ এতই চমৎকারভাবে করেছিল, যা বর্ণনা করাই কঠিন। এক বছর পর কন্ট্রাক্টর ফিরে এল। সে সুপারভাইজারকে জিজ্ঞাসা করল, বাড়িটা সম্পর্কে আপনার ধারণা কি? সুপারভাইজার উত্তর দিল, এ যাবৎ আমি যত বাড়ি তৈরি করেছি তার মধ্যে এ বাড়িটাই সেরা। কন্ট্রাক্টর বাড়ির দলিল সুপারভাইজারকে বুঝিয়ে দিয়ে বলল, তোমার জন্য এটা আমার বিদায় উপহার। ভেবে দেখুন অন্যকে ঠকাতে গেলে নিজে ঠকতে হয় কি না? এভাবে প্রতিনিয়ত অসৎ ব্যক্তিরা অন্যকে ঠকাতে গিয়ে নিজেরাই ফাঁদে পড়ে যায়। আপনার ভেতরে সদিচ্ছা থাকলে আপনি জিততে না পারলেও অন্তত ঠকবেন না। যদি কখনো অন্যের জন্য গর্ত খুঁড়েন তবে তাতে নিজেকেই পড়তে হবে। অনেকে মনে করেন, যদি কেউ চুরি করে ধরা না পড়ে অথবা যার থেকে চুরি করা হয়, তার যদি প্রচুর থাকে তা হলে সেটা চুরি নয়, যে জিনিস আমার নয় তা যথাস্থানে ফেরত দেওয়ার সদিচ্ছা থাকলেও তা চুরি। কিছু সংখ্যক লোকের একটা সাধারণ অভ্যাস হচ্ছে, অন্যের জিনিস নিয়ে রেখে দিয়ে তা ন্যায্য বলে ভাবা। একজন তরুণী তার বন্ধুদের বলল, সে দাম না দিয়েই একটি জামা পেয়েছে। কারণ দোকানের কর্মচারী খেয়াল না করায় জামার দাম ধরেনি। সেও দাম না দেওয়ার জন্য কোনো বাধ্যবাধকতাবোধ করেনি। সে ভেবে নিল এটা তো কর্মচারীর দোষ। তার ভুলে আমার লাভ হয়েছে। এটা এক ধরনের চুরি বা অসৎ উপায়। চুরি বলতে শুধু মালপত্র চুরিই বোঝায় না। অন্যের ক্ষতি বুঝেও না বোঝার ভান করা_ এটাও এক প্রকার চুরি বা অসততা। এ ধরনের লোক কখনই সাফল্য হাতে পায় না। বরং হতাশায় পর্যবসিত হয়।সমালোচনা সফলতার হাতিয়ার